পরপর দুটি লংমার্চ গেল তিস্তাপাড় অভিমুখে। প্রথমটি করেছে সিপিবি-বাসদ। তারা মার্চ শুরু করেছিল ১৭ এপ্রিল এবং শেষ করেছে ১৯ এপ্রিল। দ্বিতীয় লংমার্চ করেছে বিএনপি। ২২ এপ্রিল শুরু ২৩ এপ্রিল শেষ। সিপিবি-বাসদ দল ছোট। কিন্তু কাজটি করেছে বড়। তিস্তা দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। রংপুর বিভাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষি, জীবন-জীবিকা ও পরিবেশ এই নদীর পানিপ্রবাহের ওপর প্রায় সম্পূর্ণই নির্ভরশীল বলা চলে। তিস্তার ওপর নির্মিত ব্যারাজ 'তিস্তা ব্যারাজ' শুধু ওই এলাকার নয়, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রকল্প। এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন, সাফল্য নির্ভর করে ব্যারাজ এলাকায় পানির প্রাপ্যতার ওপর। আবার এই পানির প্রাপ্যতা নির্ভর করে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা ও আনুগত্য এবং ন্যায়ানুগ বন্ধুসুলভ আচরণের ওপর। উজান থেকে পানি না আসায় শুকিয়ে যাচ্ছে তিস্তা। তিস্তার বুকে এখন ধু ধু বালুচর। আশা আর স্বপ্নের তিস্তার পাড়ে এখন কৃষকের উদাস দৃষ্টি আর গুমরে ওঠা কান্না। দুটি লংমার্চ ছিল এই কান্না থামানোর আয়োজন। সিপিবি-বাসদ জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারক না হলেও জাতীয় কর্তব্যের কথাটি তারা ভেবেছে আগে। তাদের কর্মসূচিতে দল ছোট হলেও স্বতঃস্ফূর্ত জনসমর্থন ছিল তুলনামূলক বেশি। যারা একসময় কমিউনিস্টদের নাম শুনলে চমকে উঠতেন তারাও বলতে বাধ্য হয়েছেন তারা কাজটি ভালো করেছে। জনগণের দুঃখে-কষ্টে তাদের পাশে দাঁড়ানোই তো দেশপ্রেমিক ও গণকল্যাণধর্মী রাজনৈতিক দলের কাজ। তবে সামগ্রিকভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক জনমত গঠনে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে বিএনপির লংমার্চ। লংমার্চ শুরুর আগের দিন তিস্তায় পানির প্রবাহ ছিল মাত্র ৪০০ কিউসেক। আর শুরুর দিন ২২ এপ্রিল হঠাৎ তিস্তার বালুচরে যেন বান ডাকল। পানিপ্রবাহ বেড়ে দাঁড়াল ৩৬০০ কিউসেক। অর্থাৎ বিএনপির লংমার্চের চাপ ভারত কিছুটা হলেও অনুভব করেছে। কিন্তু পরদিনই আবার তা কমে এসে দাঁড়ায় ১ হাজার ২০০ কিউসেকে। এটা ভারতের পানি কূটনীতি। বিশ্ববাসীকে তারা দেখাতে এবং বোঝাতে চেয়েছে যে, তিস্তার পানি তারা চুরি করছে না, যখন পানি থাকছে তখনই তারা বাংলাদেশকে পানি দিচ্ছে। ভারতের ঝানু কূটনীতিকরা অবশ্যই বুঝেছেন, বিএনপির লংমার্চ আন্তর্জাতিক মহলও পর্যবেক্ষণ করবে। তাদের লোকজনও প্রকাশ্যে-গোপনে তিস্তার ব্যারাজ অঞ্চল স্বচক্ষে দেখতে যাবে। মিডিয়ায় তিস্তা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণাটাও হয়েছে দুই লংমার্চকে কেন্দ্র করে। ২৩ এপ্রিল পুনরায় পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এটা প্রমাণ হয়েছে, প্রথম দিন গজলডোবার বাঁধের গেট খুলে দিয়ে কিছু পানি ছাড়ের বিষয়টি ছিল বিএনপির লংমার্চকে কেন্দ্র করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরে তিস্তার পানি নিয়ে ব্যাপক জনমত গঠনমূলক একটা উন্মাতাল পরিস্থিতি সৃষ্টি রোধ করা। নদীতে পানি দেখলে, জোয়ার জাগলে তিস্তাপাড়ের মানুষ খুশি হয়ে যাবে, তারা বেপরোয়া হয়ে যাবে না লংমার্চকে কেন্দ্র করে, এটাই ছিল তাদের হিসাব। তারা পানি-চালবাজিতে সফল হয়েছে। সরকারকেও বিব্রতকর কোনো পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি। লংমার্চকে কেন্দ্র করে কোনো অঘটন যদি ডালিয়া পয়েন্টে ঘটে যেত তাতে ভারতের চলমান লোকসভা নির্বাচনে শাসক কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট এবং অ-কংগ্রেসি, অ-বিজেপি তৃতীয় শক্তির হাতে একটা অস্ত্র এসে যেত। একদিন পানি দিয়ে তারা চালাকি করেছে এবং ৫ জানুয়ারির নজিরবিহীন নির্বাচনে প্রকাশ্য সমর্থন দিয়ে ক্ষমতায় রাখার মতোই সম্ভাব্য আরেকটি বিপর্যয় থেকে লীগ সরকারকেও রক্ষা করেছে।
তিস্তাপাড়ের এবং এই নদী অববাহিকা অঞ্চলের মানুষের সংকট কিন্তু কাটল না। তিস্তার বালুচরে এখন আবার হাহাকার। বিএনপির লংমার্চের দ্বিতীয় দিন পানি প্রত্যাহার শুরু করার পর এটা স্পষ্ট হয়েছে যে, তিস্তায় আমরা পানি পাচ্ছি না। এতে আমাদের খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ ধ্বংস হবে। কিন্তু শক্তির জোরে কোনো বৃহৎ রাষ্ট্রই ছোট হলেও প্রতিবেশীর সঙ্গে এমন আচরণ করতে পারে না। এটা আন্তর্জাতিক রীতিনীতির চরম লঙ্ঘন।
অভিন্ন আন্তর্জাতিক নদী সংক্রান্ত হেলসিংকি নীতিমালা ৪ ও ৫ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রতিটি অববাহিকাভুক্ত রাষ্ট্র অভিন্ন নদীগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই অন্য রাষ্ট্রের ক্ষতি না করেই তা ব্যবহার করতে হবে।
১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক আইনানুসারে হেলসিংকি নীতিমালার অনুচ্ছেদ ১৫-এ বলা হয়েছে, নদীটি প্রবাহিত প্রতিটি রাষ্ট্রের মধ্যে সুষম ও সমতার ভিত্তিতে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
অনুচ্ছেদ ২৯-এ বলা হয়েছে, এক অববাহিকাভুক্ত রাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক নদীর পানি ব্যবহারের পদক্ষেপের ক্ষেত্রে অন্যদের অবশ্যই অবহিত করতে হবে।
১৯৯২ সালের ডাবলিন নীতিমালার ২নং নীতিতে বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় অবশ্যই সবাইকে অংশগ্রহণ করতে হবে।
আন্তর্জাতিক নদীর ব্যবহার সম্পর্কে ১৮১৫ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে এবং ১৯২১- আন্তর্জাতিক দানিয়ুব নদী কমিশন কর্তৃক প্রণীত আইনেও একই কথা বলা আছে। পানিসম্পদের সুষম বণ্টনের নীতিবিষয়ক ১৯৭২ সালে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত মানব পরিবেশ সংক্রান্ত জাতিসংঘের কনফারেন্সের ঘোষণাপত্রের ৫১ অনুচ্ছেদেও এই নীতির কথা বলা হয়।
১৯৪৯ সালের বিখ্যাত কুরফু নদী মামলায় (ব্রিটিশ বনাম আলবেনিয়া) আদালত তার সিদ্ধান্তে উল্লেখ করে, একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের বহিঃপ্রকাশ কখনো এমনভাবে হতে পারে না, যার বিরূপ প্রভাব সেই রাষ্ট্রের বাইরে অনুভূত হতে পারে। বিশ্বে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক মামলা ও চুক্তি রয়েছে যেখানে পানির হিস্যার প্রশ্নে ভাটির দেশের নদীকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে এবং পানির একচেটিয়া ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
১৯৫৭ সালে লেকলেন মামলার (স্পেন বনাম ফ্রান্স) রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নদীর প্রাকৃতিক পানিপ্রবাহের ধারা এমনভাবে পরিবর্তন করা যাবে না, যার পরিণতি অপরাপর রাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রে Wzoaning Vs Colorado কিংবা Chicago Diversion case ১৯২৫ মামলার রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে- আন্তর্জাতিক নদীর একচেটিয়া ব্যবহার আন্তর্জাতিক আইনবিরোধী এবং নদীর স্থানীয় অংশের ওপর পার্শ্ববর্তী কোনো রাষ্ট্রের অবাধ সার্বভৌমত্ব কার্যকর হতে পারে না।
১৯২১ সালে সুদান ও মিসরের মধ্যে নীলনদ চুক্তি স্বাক্ষরেও উল্লেখ আছে যে, সুদান নীল নদে এমন কোনো ব্যবস্থা করবে না, যাতে মিসরের কোনো স্বার্থ ক্ষুণ্ন হতে পারে।
১৯৬০ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাক্ষরিত সিন্ধু অববাহিকা চুক্তিতেও উল্লেখ ছিল যে, পার্শ্ব রাষ্ট্র এমন কোনো ব্যবস্থা নেবে না যাতে অপর রাষ্ট্রে নদীর স্বাভাবিক ব্যবহার বিঘি্নত হতে পারে।
১৯৪৫ সালে তিস্তার পানি সেচ প্রকল্পে ব্যবহারের প্রথম পরিকল্পনা হয়। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর উভয় দেশই আলাদাভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়। ১৯৬০ সালে বিষয়টি নিয়ে প্রথম সমীক্ষা হয়। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে সমীক্ষা শেষে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। কিন্তু নানা জটিলতায় পাকিস্তান আমলে প্রকল্পটি মাঠে গড়ায়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রকল্পের এক লাখ ৫৪ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদীকমিশন গঠনের পর তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। ১৯৮০ সালে প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৫৪ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা হয়। কিন্তু একতরফা পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় প্রকল্পটি এখন অস্তিত্বের সংকটে। ১৯৮৩ সালের জুলাই মাসে দুই দেশের মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টনে শতকরা ৩৬ ভাগ বাংলাদেশ ও ৩৯ ভাগ ভারত এবং ২৫ ভাগ নদীর জন্য সংরক্ষিত রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কিন্তু ওই সিদ্ধান্ত আলোর মুখ দেখেনি।
তিস্তা নদীর ওপরে বর্তমান গজলডোবার ব্যারাজ ছাড়াও ভারতের প্রস্তাবিত আরও প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ভাসমি, বিমকং, চাকুং, চুজাচেন, ডিক চু, জোরথাং লোপ, লাচিন, লিংজা, পানান, রালাং, রামমাম-১, রামমাম-৪, রণজিৎ-২, রনজিৎ-৪, রাংইয়ং, রাতিচু-বাকচা চু, রিংপি, রংনি, রুকেল, সাদা মাংদের, সুনতালি তার, তালিম, তাশিডিং, তিস্তা-১, তিস্তা-২, তিস্তা-৩, তিস্তা-৪, তিস্তা-৬, থাংচি, টিং টিং প্রভৃতি। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী সিকিমে তিস্তা নদীর ওপর তিনটি বাঁধ ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে, আরও দশটি বাস্তবায়নের পথে রয়েছে।
এভাবে ৩৫টি প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের। ভারত তার অংশের তিস্তার পুরো অংশকে কাজে লাগিয়ে আগামী ১০ বছরের মধ্যে ৫০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশাল প্রকল্প গ্রহণ করেছে। ভারত গজলডোবায় বাঁধ দিয়ে দুই হাজার ৯১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ খালের মাধ্যমে এক হাজার ৫০০ কিউসেক পানি মহানন্দা নদীতে নিয়ে যাচ্ছে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরে সঙ্গী না হওয়ায় সীমান্তের দুই পারেই সমালোচিত হন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সফরে তিস্তা নিয়ে চুক্তি হবে বলে ব্যাপকভাবে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল। সে বছরের নভেম্বরে তিস্তা নিয়ে মমতা সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নেন। নদী বিশেষজ্ঞ কল্যাণ রুদ্রকে নিয়ে এক সদস্যের কমিশন গঠন করেন। রুদ্র কমিশন ডিসেম্বরেই সমীক্ষা প্রতিবেদন জমা দেয়। পর্যাপ্ত উপাত্তের অভাব দেখিয়ে এখন নতুন করে আরেকটি সমীক্ষার কথা ভাবছে রাজ্য সরকার।
নিজের মনঃপূত না হওয়ায় রুদ্র কমিশনের প্রতিবেদন নিয়ে নিজে কখনো মুখ খোলেননি মমতা। এমনকি ওই প্রতিবেদন নিয়ে গণমাধ্যম তো বটেই, কারও সঙ্গে কথা বলতে তিনি কল্যাণ রুদ্রকে নিষেধ করেন।
৩০ বছরের মধ্যে স্মরণকালের ভয়াবহ পানি সংকটে পড়েছে তিস্তা। এ মুহূর্তে সেখানে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কিউসেক পানি থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ কিউসেক, যা চাহিদার তুলনায় ৬ ভাগের এক ভাগ। ফলে এর আওতাধীন রংপুর বিভাগের ৩ জেলার ১২ উপজেলার প্রায় ৬০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমির বোরোর চারা সেচের অভাবে মরে গেছে।
এতদিন মমতা ব্যানার্জির বাধার কথা তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে বলা হলেও এখন বলা হচ্ছে লোকসভার নির্বাচনের কথা। আসলে এক্ষেত্রে মমতা ব্যানার্জির বিরোধিতার বিষয়টি ভারত সরকারের একটি কৌশল। কারণ যখন মমতা ক্ষমতায় ছিলেন না, তখনও ভারত এই চুক্তি করেনি। ১৯৯২ সালে তিনবিঘা করিডোর চালু হওয়ার আগেও মমতা ব্যানার্জিকে দিয়েই তিনবিঘাবিরোধী আন্দোলন গড়ে তোলা হয়েছিল এবং ফরওয়ার্ড ব্লককে দিয়ে মামলাও করা হয়েছিল। তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ার জন্য শুধু ভারত সরকারই দায়ী নয়, বাংলাদেশের সরকারগুলোর এটা একটা ধারাবাহিক ব্যর্থতা এবং নতজানু পররাষ্ট্রনীতির দায়। ফলে তিস্তা অববাহিকার মানুষ এখন ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে। এ অঞ্চলের পরিবেশ বিপর্যয় এখন স্থায়ী রূপ পেয়েছে। পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে।
ভারত তার নিকটতম প্রতিবেশী দেশ। দুই প্রতিবেশী একে অপরকে বন্ধু বলে মনে করে। এ বন্ধুত্বে ব্যত্যয় ঘটে এমন কিছু ঘটা উচিত নয়। ভারত আরও ৫৪টি অভিন্ন নদীতে বাঁধ, গ্রোয়েন নির্মাণ করে পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। অর্থনৈতিক, সামরিক এবং ভূখণ্ডগতভাবে ভারত বাংলাদেশ থেকে অনেক বড় ও শক্তিশালী। শক্তি প্রয়োগ করে বাংলাদেশ কিছু করতে পারবে না ঠিক, কিন্তু প্রথাগত যুদ্ধাস্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী একটি অস্ত্র বাংলাদেশ ব্যবহার করতে পারে। সেটি হচ্ছে বিশ্বজনমতের অস্ত্র। ভারতের আমলাতন্ত্রও অনেক শক্তিশালী। কূটনৈতিক লড়াইকে তারপরও আরও জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে লংমার্চের মতো শান্তিপূর্ণ নানা পন্থায় বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে হবে এবং সরকারের ওপর অভ্যন্তরীণভাবে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করতে হবে, যাতে বিষয়টি তারা জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরে। এভাবে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক চাপ ছাড়া ভারত বাংলাদেশকে তার ন্যায্য পানির হক দেবে তা আশা করা যায় না।
লেখক : সাংবাদিক, কলামিস্ট
ই-মেইল : [email protected]
 
                         
                                     
                                                             
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                     
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                         
                                        