রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি

মোবাইলের মাধ্যমে বিতরণ ইতিবাচক

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীদের দেওয়া উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের মায়ের মোবাইল ফোনে পাঠানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আগামী মাস থেকেই এ কার্যক্রম শুরু হবে। এর ফলে উপবৃত্তির টাকা প্রদানের ক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে তা রোধ করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়িয়ে দেখানো হয়— এটি একটি ওপেন সিক্রেট। এর ফলে উপবৃত্তির জন্য সরকারকে যেমন বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে, তেমন শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি বই ছাপানো বাবদও বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে। উপবৃত্তির টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষার্থীদের মায়ের মোবাইলে পাঠানো হলে দুই ক্ষেত্রেই অর্থের অপচয় রোধ হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কাছে ঝামেলা ছাড়াই উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। প্রসঙ্গত, প্রাথমিক পর্যায়ের ১ কোটি ৩০ লাখ শিশুকে উপবৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু উপবৃত্তির নিবন্ধন করতে গিয়ে দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৬৪ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ১৭ লাখ শিশু পড়াশোনা করছে। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে হাতে হাতে দেওয়া হতো উপবৃত্তি, যা নিয়ে অনেক অনিয়মের অভিযোগও ছিল। সমস্যার সমাধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আগামী মার্চ থেকে এ উপবৃত্তি শিক্ষার্থীদের মায়েদের মোবাইলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১ মার্চ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের তিনটি উপজেলায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এরপর থেকে সব উপজেলায় এ প্রক্রিয়া চালু করা হবে। দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১ কোটি ১৭ লাখ নিবন্ধিত শিক্ষার্থী হলেও মায়ের সংখ্যা ৮৬ লাখ। একজন মায়ের একাধিক সন্তান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করলে তাদের টাকা একসঙ্গে দেওয়া হবে। এ জন্য টেলিটক থেকে বিনামূল্যে  প্রত্যেক মা-কে একটি করে সিম দেওয়া হয়েছে।  রূপালী ব্যাংকের শিওর ক্যাশের মাধ্যমে উপবৃত্তির এ টাকা শিক্ষার্থীদের মায়ের মোবাইলে পৌঁছে দেওয়া হবে। তারা আশপাশের শিওর ক্যাশের এজেন্সির কাছ থেকে টাকা তুলতে পারবেন।  নতুন এ পদ্ধতির মাধ্যমে উপবৃত্তি খাতে দুর্নীতি শূন্যের পর্যায়ে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে এমনটিই কাম্য।

সর্বশেষ খবর