হত্যাচেষ্টা মামলার এক আসামির জামিন নামঞ্জুরকে কেন্দ্র করে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে গত মঙ্গলবার যেভাবে হৈ-হট্টগোল ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে তা শুধু অপ্রত্যাশিতই নয় দুর্ভাগ্যজনক। এই হট্টগোল ও ভাঙচুরের সঙ্গে যারা জড়িত তারা কেউ বহিরাগত নয়। হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন ঢাকা বারের একজন শীর্ষ স্থানীয় আইনজীবী নেতা। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের আবেদন নাকচ করলে বিচারকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে জুনিয়র এক আইনজীবী পেছনে থেকে এজলাস লক্ষ্য করে প্লাস্টিকের ঝুড়ি নিক্ষেপ করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিচারক এজলাস ত্যাগ করলে আদালতে ভাঙচুর শুরু হয়। কয়েকশ আইনজীবী সংঘবদ্ধ হয়ে আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের তাণ্ডব চালায়। বিচার প্রার্থী লোকজনের মধ্যে এ অসহিষ্ণু আচরণ আতঙ্ক সৃষ্টি করে। আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোল ও ভাঙচুরের পর ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ছয়টি এজলাসে মঙ্গলবার আর কোনো কাজ অনুষ্ঠিত হয়নি। পরে আইনজীবী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজসহ বিচারকরা। বৈঠকে আদালতে অনভিপ্রেত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি রোধে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়। আদালত প্রাঙ্গণে হট্টগোল বিশেষত ভাঙচুরের ঘটনা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে। যারা এ অসহিষ্ণুতায় জড়িত তারা শুধু আদালত নয় নিজেদের মর্যাদাই ক্ষুণ্ন করেছেন। বিচার বিভাগের মর্যাদার যারা অংশীদার তারা আদালতে হট্টগোল সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত হবেন এটি অশনি সংকেতের নামান্তর। আমরা আশা করব বিচারপ্রার্থী মানুষের আশ্রয়স্থল হিসেবে আদালতের যে উচ্চ ভাবমূর্তি রয়েছে তা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট সবাই যত্নবান হবেন। অসহিষ্ণুতা যাতে নিজেদের সুনামের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে না আনে সে ব্যাপারে সবার যত্নবান ভূমিকা একান্তই কাম্য।