বৃহস্পতিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

ইসলাম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে

মাওলানা মুহাম্মদ সাহেব আলী

ইসলাম সব ধর্মের সহাবস্থানে বিশ্বাসী। অমুসলিম সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ইসলামের বিধান দৃষ্টান্তস্থানীয়। এ বিধানের লঙ্ঘন ইসলামের দৃষ্টিতে গুরুতর অপরাধ এবং এ জন্য দায়ী ব্যক্তিদের পরকালে জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইসলামী রাষ্ট্রের হেফাজতপ্রাপ্ত অমুসলিম নাগরিকের ওপর অত্যাচার করবে অথবা তার হক নষ্ট করবে অথবা তার সামর্থ্যের বাইরে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে অথবা তার মনের একান্ত ইচ্ছা ছাড়া কোনো সম্পদ নিয়ে নেবে, তাহলে জেনে রেখ, আমি তার বিরুদ্ধে হাশরের দিনে অভিযোগকারী হব (আবু দাউদ)।

উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিমের ওপর অত্যাচার করবে এবং তাদের সম্পদ কেড়ে নেবে স্বয়ং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ বিচারের দিনে তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে অভিযোগ দেবেন। আরও বেশ কয়েকটি হাদিসে অমুসলিম নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের পরিণাম সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এ ধরনের অপরাধীরা পরকালে জান্নাতে যাওয়া দূরের কথা তার ঘ্রাণও পাবে না। তার মধ্যে একটি হাদিস হজরত আবু হুরাইরা (রা.) সূত্রে বর্ণিত— রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সাবধান তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইসলামী রাষ্ট্রের অমুসলিমকে হত্যা করবে, যাকে আল্লাহ ও তার রসুল নিরাপত্তা দান করেছেন, তাহলে সে অবশ্যই আল্লাহতায়ালার নিরাপত্তা বিধানের খেয়ানত করল। অতএব, সে জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের ঘ্রাণ ৪০ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়। (তিরমিযি, ইবনে মাজাহ)। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, বাড়িঘর লুট, তাদের হতাহত করা, দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নামান্তর। পবিত্র কোরআনের আল-মায়েদার ৩৩ নম্বর আয়াতে এ ধরনের অপরাধীদের ইহলোকে ও পরলোকে কঠোর শাস্তির বিধানের কথা বলা হয়েছে। যারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা ও অধিকার ক্ষুণ্ন করে তারা আল্লাহ ও তার রসুলের নির্দেশ অমান্যকারী।  তাদের প্রতিরোধ করা যে কোনো মুসলমানের ইমানি দায়িত্ব।

            লেখক : ইসলামী গবেষক।

সর্বশেষ খবর