রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাজেট বিতর্ক

অর্থমন্ত্রী ঠিক কথাই বলেছেন

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেটোত্তর সাংবাদিক সম্মেলনে প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে মহল বিশেষের নেতিবাচক সমালোচনা জোরের সঙ্গে নাকচ করে দিয়েছেন। সাফ সাফ বলেছেন শুধু এটি নয়, তার দেওয়া প্রতিটি বাজেটই নির্বাচনী বাজেট। নিজের সম্পর্কে বলেছেন, তিনি একজন রাজনীতিক, একটি দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। দলের নীতিনির্ধারণে তিনি ভূমিকা রাখেন। তাই তার প্রতিটি বাজেটই রাজনৈতিক বাজেট হবে, নির্বাচনী বাজেট হবে— এটাই স্বাভাবিক। দেশ ছিল এক সময় দরিদ্র, অনাহারী, অভাবী মানুষের। সেই দেশ এখন উন্নত। গ্রামে এখন মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করছে। মঙ্গা আজ জাদুঘরে চলে গেছে। দেশে এখন আর কোথাও অভাব নেই। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের সাফল্য তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেছেন দেশে এখন দারিদ্র্যের হার ২০ শতাংশ। এক সময় যে হার ছিল ৭০ শতাংশ। এই কিছু দিন আগে দেশে ৩০ শতাংশ মানুষ ছিল গরিব। ৭ বছর আগে সাড়ে ৩০ শতাংশ মানুষ দরিদ্র ছিল, আর আজ সেটা ২২ দশমিক ৪ শতাংশ। যারা চূড়ান্ত গরিব বা হতদরিদ্র তাদের সংখ্যা ছিল ১৮ শতাংশ। এখন সেটা ১১ শতাংশ। যারা বলেন, দেশে গরিব মারার বাজেট হচ্ছে, ধনীকে তেল দেওয়ার বাজেট হচ্ছে— তারা কি বোঝাতে চান দেশের উন্নয়ন কিছুই হয়নি? বৈদেশিক ঋণ সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ৩০ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১২ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এটা একবারে নয় ২০২৪ সাল পর্যন্ত নেওয়া হবে। বাকি থাকে ২০ বিলিয়ন ডলার। এটা খুব বেশি নয়। ঋণ পরিশোধেও বাংলাদেশ খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে। বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী নতুন বাজেট শুধু নয়, তার প্রতিটি বাজেটকে নির্বাচনী বাজেট হিসেবে স্বীকার করে নিয়ে প্রকারান্তরে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছেন। যে কোনো সরকার পরবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে বাজেট প্রণয়নে জনতুষ্টিকে প্রাধান্য দেবে এমনটিই স্বাভাবিক। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট প্রণয়নের ক্ষেত্রে অন্য সব কিছুর চেয়ে সাধারণ মানুষ যাতে বাজেটকে তাদের ওপর বোঝা হিসেবে না ভাবে সে চেষ্টাই করেছেন। অর্থমন্ত্রীর প্রতিটি বাজেটে তাত্ত্বিক কপচানির বদলে বাস্তবতা বোধকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। যে কারণে বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে সবাইকে ছাড়িয়ে আকাশ ছোঁয়ার কৃতিত্ব অর্জন করতে চলেছে। বাজেট নিয়ে সমালোচনার খুব একটা সুযোগ না থাকলেও এর সফল বাস্তবায়নকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিতে হবে। সেটিই সরকারের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর