বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৯ ০০:০০ টা

মশার উপদ্রব বাড়ছে

কর্তৃপক্ষীয় গাফিলতি বন্ধ হোক

ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব একটু কমার সঙ্গে সঙ্গেই দুই সিটি করপোরেশনের মশা নিধনে শিথিলতা এসেছে। এ শিথিলতা রাজধানীতে মশাবাহিত রোগের থাবা বিস্তারের আশঙ্কা সৃষ্টি করেছে। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কমলেও কার্তিকের আকাশ ভেঙে প্রায়ই বৃষ্টি নামছে। ফলে এবার ডেঙ্গু মৌসুমের অবয়ব হতে পারে দীর্ঘায়িত। মশা নিধনে শিথিলতা এলে এডিসের পাশাপাশি কিউলেক্স মশার আগ্রাসন বাড়ার আশঙ্কা হাতছানি দিচ্ছে। জনমনে এডিস মশা সম্পর্কে আতঙ্ক বেশি থাকলেও কিউলেক্স কোনোভাবেই কম বিপজ্জনক নয়। শীতকালে মশার উপদ্রব বৃদ্ধি পায় যার ৯৮ থেকে ৯৯ ভাগই কিউলেক্স মশা। বিশেষজ্ঞদের মতে, শীত মৌসুমে কিউলেক্স মশার ব্যাপারে বেশি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এ মশা থেকে জাপানিজ এনসেফালাইটিসসহ (জেই) আরও কয়েকটি রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। আমাদের দেশে কয়েক বছর ধরেই রয়েছে মশাবাহিত রোগ ‘জেই’ ও ফাইলেরিয়া। এ ছাড়া ওয়েস্টার্ন ভাইরাসও ছড়ায় কিউলেক্সের মাধ্যমে। ফাইলেরিয়া বর্তমানে উত্তরের কয়েকটি এলাকায় সীমাবদ্ধ। কিন্তু জেইর ঝুঁকি সব জেলায় আছে। এ বছর আইইডিসিআরে স্যাম্পল পরীক্ষায় ৪৯ জন জেই আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে। ডেঙ্গুর সঙ্গে জেইর উপসর্গে অনেকটা মিল রয়েছে, আবার ভিন্নতাও আছে। বিশেষ করে কিউলেক্স মশা পাখি বা কোনো প্রাণীকে কামড়ালে জেই ভাইরাস সংক্রমিত হয়। সেই মশা মানুষকে কামড়ালে মানুষের মধ্যে তা ছড়ায়। কোনো মানুষ জেই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত ৫ থেকে ১৫ দিন পর অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় জ্বর, প্রচ- মাথাব্যথা, বমিভাব, ডায়রিয়া, দুর্বলতা, কাঁপুনি, খিঁচুনি হয়। এমনকি মূত্রাশয়ে সমস্যা, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, কোনো অঙ্গ প্যারালাইজড হওয়ার ঘটনাও ঘটে। মানসিক রোগের লক্ষণও দেখা দেয় অনেকের। এ ছাড়া ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে জেই মারাত্মক হয়ে দেখা দিতে পারে, মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে পারে। সময়মতো মশা নিধনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় চলতি বছর ডেঙ্গু আতঙ্কে ভুগছে রাজধানীবাসী। গত দুই দশকের চেয়েও এ বছর ডেঙ্গুতে বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। জন-আতঙ্কের কারণে সাধারণ জ্বরেও মানুষ ছুটেছে ডাক্তারের কাছে এবং সাধারণ মানুষের কয়েক কোটি টাকার অপচয় ঘটেছে ডেঙ্গুর ভাইরাস পরীক্ষার কাজে। আমরা আশা করব, শীত আসার আগেই জোরেশোরে মশা নিধনের কাজ শুরু হবে। মশার ওষুধের ক্ষেত্রে অতীতের মতো শুভঙ্করের ফাঁকির যাতে অভিযোগ না ওঠে সে বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া দরকার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর