সোমবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

সালাতুল ইস্তেখারা আদায় করা উত্তম

মো. আবু তালহা তারীফ

সালাতুল ইস্তেখারা আদায় করা উত্তম

সালাতুল ইস্তেখারা হলো, বিশেষ পদ্ধতিতে নফল নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে কল্যাণকর বিষয় প্রার্থনা করা। আমরা প্রায় সময়ে বিভিন্ন দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে যাই। দুটি বা একাধিক বিষয়ের মধ্যে কোনটি গ্রহণ করব বা কোনটির পক্ষে সিদ্ধান্ত দিব তা নিয়ে ভাবতে হয়। এই ভাবনাচিন্তা ও সিদ্ধান্তহীনতা দূর করতেই রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইস্তেখারা বা কল্যাণ প্রার্থনার নামাজ শিক্ষা দিয়েছেন। যা মনের সিদ্ধান্তকে এমন জিনিসের ওপর স্থির করে যার মধ্যে বান্দার উপকার রয়েছে। সালাতুল ইস্তেখারা খুব নিয়ামতপূর্ণ। তা আদায়ের জন্য স্বাভাবিকভাবে পবিত্রতা অর্জন জরুরি। এরপর পরিশুদ্ধ নিয়ত করে স্বাভাবিক নিয়মে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করতে হবে। সালাম ফিরিয়ে ইস্তেগফার, তাসবিহ-তাহলিল, আল্লাহর প্রশংসা এবং রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দরুদ পাঠ করতে হবে। ইস্তেখারা নামাজের ব্যাপারে হজরত জাবের ইবনে আবদুল্লাহ বলেন, ‘রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইস্তেখারা পড়ার শিক্ষা দিতেন, যেরূপ গুরুত্ব দিয়ে কোরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেন, যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো কাজ করার ইচ্ছা করে আর সে এর পরিণতি সম্পর্কে চিন্তিত হয়, তখন তার এভাবে ইস্তেখারা করা উচিত। সে প্রথমে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে, এরপর এ দোয়া পাঠ করবে।

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসতাখিরুকা বিইলমিকা ওয়া আসতাকদিরুকা বি-কুদরাতিকা ওয়াআসআলুকা মিন ফাদলিকাল আজিম, ফাইন্নাকা তাকদিরু ওয়ালা আকদিরু, ওয়া তা’লামু ওয়ালা আ’লামু ওয়া আনতা আল্লামুল গুয়ুব। আল্লাহুম্মা ইন কুনতা তা’লামু আননা হাজাল আমরা খাইরুন লি ফি-দ্বীনি ওয়া মায়াশি ওয়া আ’কিবাতি আমরি, ফাকদিরহু লি, ওয়া-ইয়াসসিরহু লি, ছুম্মা বা-রিকলি ফিহি, ওয়া ইন কুনতা তা’লামু আন্না হাজাল আমরা শাররুন লি ফি-দ্বীনি ওয়া মায়াশি ওয়া আ’কিবাতি আমরি ফাসরিফহু আন্নি ওয়াসরিফনি আনহু ওয়াকদির লিয়াল খাইরা হাইসু কানা ছুম্মা আরদিনি বিহি।’ অর্থ হলো, হে আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের সাহায্যে আপনার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করছি। আমি আপনার শক্তির সাহায্যে শক্তি ও আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা আপনিই ক্ষমতা রাখেন; আমি ক্ষমতা রাখি না। আপনি জ্ঞান রাখেন, আমার জ্ঞান নেই এবং আপনি অদৃশ্য বিষয়ে সম্পূর্ণ পরিজ্ঞাত। হে আল্লাহ! আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ (নিজের প্রয়োজনের নাম উল্লেখ করবে) আমার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য কিংবা বলবে আমার দীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে কল্যাণকর হলে আপনি তা আমার জন্য নির্ধারণ করে দিন। সেটা আমার জন্য সহজ করে দিন এবং তাতে বরকত দিন। হে আল্লাহ?! আর যদি আপনার জ্ঞানে আমার এ কাজ আমার দীনদারি, জীবন-জীবিকা ও কর্মের পরিণামে কিংবা বলবে, আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য অকল্যাণকর হয়, তবে আপনি আমাকে তা থেকে ফিরিয়ে দিন এবং সেটাকেও আমার থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আমার জন্য সর্বক্ষেত্রে কল্যাণ নির্ধারণ করে রাখুন এবং আমাকে সেটার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিন। সহিহ বুখারি।

লেখক : ইসলাম বিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর