অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা করোনাকালে দেশের অর্থনীতিতে প্রাণসঞ্চার এবং কর্মসংস্থানের প্রবাহ বাড়াতে অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসন, শেয়ারবাজার ও উৎপাদনশীল শিল্প খাতে নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের মতে, অপ্রদর্শিত অর্থ সব অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প খাতে বিনিয়োগ হলে দেশের টাকা বিদেশে পাচার হওয়া যেমন বন্ধ হবে তেমন বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ। অর্থনীতিবিদদের পাশাপাশি ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন-এফবিসিসিআই সভাপতি সব শিল্প খাতে অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ সমর্থন করে বলেছেন ঢালাওভাবে সারা জীবনের জন্য এমন সুযোগ নয়। এ ধরনের অর্থ মূল স্রোতে আনতে একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা প্রয়োজন। শিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ-বিসিআই সভাপতি দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ অন্যান্য শিল্প খাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুবিধাসহ নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তারাও যাতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন, সে সুযোগ সৃষ্টির পক্ষে বলেছেন। দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, অপ্রদর্শিত অর্থের বিনিয়োগ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবেন না- চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে থাকা এ আইনি নির্দেশনা আগামী পাঁচ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা। ব্যবসায়ীদের যুক্তি, দায়মুক্তির এ সুবিধায় দেশে বিশাল অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ হয়েছে। বেড়েছে রাজস্ব। যা অব্যাহত থাকলে জাতীয় সম্পদ ও প্রবৃদ্ধি বাড়বে। অন্যথায় বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। অপ্রদর্শিত অর্থ বৈধ করার জন্য দেশের শিল্প ও আবাসন খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাব খুবই প্রাসঙ্গিক ও তাৎপর্যের দাবিদার। নৈতিক দিক থেকে এমন প্রস্তাবের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা গেলেও বাস্তবতার নিরিখে তা খুবই যৌক্তিক। কারণ অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে বৈধভাবে বিনিয়োগ না হলে তা পাচার হয়ে যাবে। পক্ষান্তরে বৈধতা পেলে পাচার হওয়ার বদলে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সচল হবে অর্থনীতি। এ মুহুর্তে এর কোনো বিকল্প নেই।