পরিবহন খাতের মালিক ও শ্রমিকদের জোটের কাছে জিম্মি সাধারণ যাত্রীরা। তারা সিএনজির দাম বাড়লে চাপ সৃষ্টি করে সব বাসের ভাড়া বাড়িয়ে নেয়। ডিজেলের দাম বাড়লে ধর্মঘট ডেকে পুনরায় বাড়িয়ে নেয় ভাড়া। ঐতিহ্যগতভাবে নগর পরিবহনের বাসে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া চলে আসছে অর্ধশতাব্দী আগে থেকে। অথচ হাফ ভাড়া দিতে চাওয়ায় বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন সাইনবোর্ড থেকে গাবতলী রুটে চলাচলকারী ‘ঠিকানা’ পরিবহন বাসের এক হেলপার। সংশ্লিষ্ট চালক ও হেলপারকে আটক করেছে র্যাব। ধর্ষণ হুমকির প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত অন্য ছয় কলেজের শিক্ষার্থীরা। রবিবার পুরান ঢাকার বকশীবাজারে সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ দেখান। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ- বাসের হেলপাররা তাদের থেকে ভাড়াও বেশি রাখেন, আবার নানাভাবে হেনস্তাও করেন। ধর্ষণের হুমকি দেওয়া হেলপারের বিচার ও শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া নির্ধারণে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। রাজধানীসহ সারা দেশে বাসে অতিরিক্ত ভাড়ার জন্য যাত্রীদের হেনস্তার ঘটনাকে একজন হেলপার বা শ্রমিকের অপকর্ম ভাবলে ভুল হবে। কারণ সড়ক পরিবহনই একমাত্র খাত যেখানে মালিক ও শ্রমিকদের স্বার্থ প্রায় অভিন্ন এবং তাদের জোট সবকিছুর নিয়ন্তা। দেশের রাজনীতিতে সরকারি, সংসদের কিংবা রাজপথের বিরোধী দলের মধ্যে দা-কুমড়ো সম্পর্ক থাকলেও পরিবহন খাতের মালিক ও শ্রমিক নেতা হিসেবে তারা একে অন্যের অনুষঙ্গ। বাস মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে সম্পর্ক সহযোগী হিসেবে। মালিকরা বলেন তাকে রোজ এত টাকা দিতে হবে। তার বাইরে যা আদায় হবে তা শ্রমিকের। এ চুক্তি পরিবহন শ্রমিকদের যথেচ্ছ আচরণে উৎসাহ জোগায়। নৈরাজ্য বন্ধে সরকারকে এ বিষয়ে সর্বাগ্রে উদ্যোগী হতে হবে।