বুধবার, ৮ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

কেমিক্যালে অগ্নিকান্ড

অপরাধীরা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে

কেমিক্যাল বিস্ফোরণে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে এযাবৎ বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানি হলেও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির নেই। সব সম্ভবের এই দেশে অপরাধ করেও পার পেয়ে যায় অপরাধীরা। বিশেষত অনুমতি ছাড়াই যেখানে সেখানে কেমিক্যাল মজুদের পরিণতিতে যেসব দুর্ঘটনা ঘটছে, এজন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এক যুগ আগে পুরান ঢাকার নিমতলীর অগ্নিকান্ডে ১২৭ জন প্রাণ হারান। ওই ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে বেরিয়ে আসে অবৈধ কেমিক্যাল গুদামের কারণে আগুন ভয়াবহ আকার ধারণ করে। পরিণতিতে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানি ঘটে। কিন্তু সে কেমিক্যাল গুদামের কারণে কাউকে সাজা পেতে হয়নি। ২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ঘটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড। রাসায়নিকের গুদাম থেকে লাগা আগুনে প্রাণ হারান অন্তত ৭১ জন। ওই ঘটনায় দায়ের মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে দুই বছর পর পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলেও এখনো বিচারকাজ শেষ হয়নি। গত বছরের ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুড কারখানায় ভয়াবহ আগুনে প্রাণ হারান ৫১ শ্রমিক। এ অগ্নিকান্ডেও কেমিক্যালের ভূমিকা ছিল। ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে নানা অনিয়ম বেরিয়ে এলেও কাউকে শাস্তি পেতে হয়নি। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত ট্যামকা ফয়েলস প্যাকেজিং কারখানায় আগুনে প্রাণ হারান ৩১ শ্রমিক। ওই আগুনে দায়ীদেরও শাস্তি পেতে হয়নি। ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় প্রাইম প্লাস্টিক কারখানার আগুনে ১৭ শ্রমিক দগ্ধ হয়ে প্রাণ হারান। ওই ঘটনায়ও বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি কাউকে। কেমিক্যালের মজুদস্থলে একের পর এক অগ্নিকান্ডে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির পরও এ ব্যাপারে সতর্কতা তৈরি হয়নি জবাবদিহি না থাকায়। কেমিক্যাল তৈরি, পরিবহন ও মজুদের নীতিমালা না থাকায় জানমালের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। এ নৈরাজ্যের অবসান হওয়া উচিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর