শিরোনাম
বুধবার, ৩১ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা

লুটপাটের আখড়া

পৌরসভার কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হোক

নগরায়ণের প্রক্রিয়ায় দেশে একের পর এক পৌরসভা গড়ে উঠেছে। জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দ্বারা পৌরসভাগুলো পরিচালিত হলেও দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার প্রায় প্রতিটি পৌরসভার অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের নামে চলছে অর্থলুটের মচ্ছব। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে পৌরসভাকে লুটপাটের আরেক আখড়া হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী মাত্র ছয়টি পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের সুযোগ আছে। এগুলো হচ্ছে- সুইপার, সুইপার সুপারভাইজার, কেয়ারটেকার, মৌলভি, পুরোহিত ও ডোম। কিন্তু সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে নিয়ম ভেঙে বিভিন্ন পদে ২৪৮ জন অস্থায়ী কর্মচারীকে। পৌরসভাকে এ খাতে ব্যয় করতে হচ্ছে ১৪ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। প্রায় একই চিত্র নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভায়। সেখানে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করছেন ৪২২ জন কর্মচারী। তাঁদের বেতন-ভাতাও যথারীতি পরিশোধ করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কাগজে-কলমে ৪২২ জন দেখানো হলেও বাস্তবে কাজ করছেন কমবেশি ১০০ কর্মচারী। বাকিদের বেতন-ভাতার টাকা তুলে আত্মসাৎ করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ২২ আগস্ট মানিকগঞ্জ পৌরসভার চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীর নাম, পদবি, কোন শাখায় কর্মরত, কবে থেকে নিয়োগ হয়েছে এবং মাসিক ভাতা কত তা জানতে চেয়ে চিঠি দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। অনুমোদিত ছয়টি পদ ছাড়া অন্য পদে নিয়োগকৃতদের নিয়োগ বাতিল করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর আগে সৈয়দপুর পৌরসভার ৪২২ কর্মচারীর ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হলেও এক মাস পরও তথ্য দেয়নি সংশ্লিষ্ট পৌরসভা। দেশে বর্তমানে পৌরসভার সংখ্যা ৩২৮। এর এক বড় অংশ পৌরসভা হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে। পৌরসভাগুলোয় রাজস্ব আয় এতই কম যে তা দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা কঠিন। প্রতিটি পৌরসভায় রয়েছে ভুয়া কর্মচারীর বোঝা। পৌরসভাগুলোয় স্থায়ী কর্মী ১১ হাজার ৬৭৫ জন হলেও অস্থায়ী কর্মী ২০ হাজার ৩৫৫ জন। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ বন্ধ করার নির্দেশনা মানা হচ্ছে না নিয়োগদাতাদের স্বার্থ থাকার কারণে। এ নৈরাজ্যের অবসানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর