বুধবার, ২ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি

বাংলাদেশ ঐতিহ্যগতভাবেই ঘূর্ণিঝড়প্রবণ এলাকা। ১৯৭০ সালের ১০ নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারা গিয়েছিল কয়েক লাখ মানুষ। কালের বিবর্তনে ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে জীবন রক্ষার সক্ষমতা অর্জিত হলেও প্রাকৃতিক এ দুর্যোগের সংখ্যা কমার বদলে বাড়ছে। চলতি বছর ইতোমধ্যে দুটি ঘূর্ণিঝড় হানা দিয়েছে বাংলাদেশে। আরও একটির আশঙ্কায় ভুগছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বব্যাংকের ‘কান্ট্রি ক্লাইমেট ও ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের ক্ষতি হচ্ছে। বায়ুদূষণের কারণে বছরে প্রাক্কলিত ক্ষতি জিডিপির প্রায় ৯ শতাংশ এবং দেশের ৩২ শতাংশ মৃত্যু পরিবেশদূষণের সঙ্গে সম্পর্কিত। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশের চারটি অঞ্চল- বরেন্দ্র, পার্বত্য চট্টগ্রাম, উপকূল ও হাওর এলাকা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। জেলা হিসাবে ধরলে হাওরের ময়মনসিংহ জেলার পশ্চিমাংশ, রংপুরের পূর্বাংশ ও খুলনার দক্ষিণাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে। নিয়মিতভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, এমন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের পরিস্থিতি মোকাবিলার সামর্থ্য বাড়াতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ১ কোটি ৩০ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সময়ের মধ্যে কৃষি খাতে জিডিপির এক-তৃতীয়াংশ কমতে পারে। বাংলাদেশে জলবায়ুজনিত ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বছরে দরকার ১ হাজার ২৫০ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে জলবায়ুর পরিবর্তন বিশেষত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে বাংলাদেশের ক্ষয়ক্ষতির যে চিত্র তুলে ধরা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। স্বাধীনতার পর জনসংখ্যা প্রায় সোয়া ২ গুণ বাড়লেও কৃষি আধুনিকীকরণের সুবাদে চাষাবাদের জমি কমার পরও উৎপাদন বেড়েছে অন্তত তিন গুণ। কিন্তু আবহাওয়ার বিরূপ পরিবর্তন ইতোমধ্যে দেশের খাদ্য নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করেছে; যা মোকাবিলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর