বাংলাদেশকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন অর্থাৎ ৪৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সহজ শর্তে দেওয়া এ ঋণের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলমান অর্থনৈতিক সংকট অনেকটাই কেটে যাবে। ব্যালান্স অব পেমেন্ট, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভসহ অন্য সূচকগুলোয়ও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আইএমএফ বলেছে, এ ঋণ পেতে বাংলাদেশকে আর্থিক খাতে বেশ কিছু সংস্কারমূলক কাজ করতে হবে। এর মধ্যে ভ্যাট আইন-২০১২ এর পূর্ণ বাস্তবায়ন এবং রাজস্ব আয় বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। আর্থিক খাতে নজরদারি বৃদ্ধি, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা, জ্বালানি খাতের ভর্তুকি কমানো, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ওপরও জোর দিয়েছে দাতা সংস্থাটি। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, ব্যাংক ঋণ ও আমানতের সুদহার বাড়ানো, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী রিজার্ভের হিসাব, নতুন বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নসহ আরও কিছু সংস্কারমূলক কার্যক্রম পরিপালন করতে হবে বাংলাদেশকে। সংস্থাটির মতে, বাংলাদেশ কখনই ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। বাংলাদেশের অর্থনীতিও মোটামুটি ভালো অবস্থায়। শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার আশঙ্কা নেই বাংলাদেশের। সারা বিশ্বের ঋণ নিয়ে তারা যে বিশ্লেষণ প্রতিবেদন করেছেন সেখানে দেখা গেছে বাংলাদেশের ঋণ ৪০ শতাংশের কম, এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ২০ শতাংশের মতো- যা খুবই সহনশীল। আইএমএফ স্বল্প সুদে ১০ বছর রেয়াতে ২০ বছরের মধ্যে শোধ করার শর্তে এ ঋণ দিচ্ছে। এ ঋণের ফলে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের সামর্থ্য বাড়বে। বিশ্বব্যাংকসহ সব দাতা সংস্থাগুলোকে বাংলাদেশকে প্রয়োজন হলে ঋণ দিতে উৎসাহিত করবে। শর্তসাপেক্ষে নেওয়া এই ঋণের প্রথম কিস্তি পাওয়া যাবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। আইএমএফের ঋণ বাংলাদেশকে বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় যেমন শক্তি জোগাবে তেমন আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায়ও বাধ্য করবে। শেষোক্ত বিষয়টি দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে মদদ জোগাবে। দুর্নীতি অনিয়মের দুষ্ট দানবকে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে তা অবদান রাখলে সেটি বড় অর্জন বলে বিবেচিত হবে।