বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বেসামাল স্বাস্থ্য খাত

সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিন

চিকিৎসাকে মানুষের মৌলিক অধিকার বলে বিবেচনা করতেন আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। যে কারণে বাংলাদেশের সংবিধানে দেশবাসীর চিকিৎসার ব্যাপারে যথাযথ অঙ্গীকার ঘোষিত হয়। বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হলেও ব্যবস্থাপনার সংকটে তার সুফল থেকে অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ। বাংলাদেশ প্রতিদিনের শীর্ষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার গোহারুয়ায় ১৬ বছর আগে উদ্বোধন করা হয় ২০ শয্যার হাসপাতাল। ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হলেও চালু হয়নি হাসপাতালটি। এতে নেই চিকিৎসক, নার্স কিংবা প্রহরী। ভুতুড়ে অবস্থায় পড়ে আছে হাসপাতালটি। লতাগুল্ম, আগাছায় ঢেকে গেছে হাসপাতালের নয়টি ছোট-বড় ভবন। নিরাপদে ঘাস খেয়ে বেড়ায় গরু-ছাগলের দল। গত আগস্টে স্বাস্থ্যসেবায় অব্যবহৃত স্থাপনার তালিকা তৈরি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এ তালিকায় উঠে আসে অযত্নে পড়ে থাকা ২৩৩ স্থাপনার বিষয়। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ৫৮টি এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের ১৭৫টি। এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন অফিসের কর্তাব্যক্তিদের ভাষ্য, জনবল সংকটের কারণে গোহারুয়া ও শহীদনগরসহ অন্য হাসপাতালগুলো পুরোপুরি চালু করা যাচ্ছে না। মন্ত্রণালয় জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করলে পূর্ণাঙ্গরূপে চালু করা সম্ভব হবে। নির্মাণকাজ শেষের দেড় যুগেও চালু হয়নি বগুড়ার সান্তাহারের ২০ শয্যার হাসপাতাল। খুলনার ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০৬ সালে দেওয়া হয়েছিল একটি জেনারেটর। কিন্তু স্থাপন না করায় ১৬ বছর ধরে জেনারেটরটি বাক্সবন্দি থেকে নষ্ট হয়েছে। ডুমুরিয়ায় ডিজাইন ও নির্মাণ ত্রুটির কারণে ৩১ শয্যাবিশিষ্ট তিনতলা নতুন ভবন অব্যবহৃত রয়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার ইউনিটে বাক্সবন্দি পড়ে আছে ১০ কোটি টাকা মূল্যের লিনিয়ার অ্যাকসিলারেটর মেশিন।  অবকাঠামো না থাকায় মেশিনটি স্থাপন করা যায়নি। এখানকার হার্টের চিকিৎসার ইকো মেশিনও নষ্ট হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নিতে সরকারের সদিচ্ছার অভাব নেই। এ জন্য অব্যবস্থাপনা দূর করার দিকে নজর দিতে হবে সব কিছুর আগে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর