রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সম্রাট অশোক

সম্রাট অশোক

খ্রিস্টপূর্ব ২৬৯-২৩২ অব্দে প্রথম পূর্ব ভারতীয় শাসক; যিনি উপমহাদেশের বৃহত্তর অংশে তাঁর রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। অশোকের সময় পুণ্ড্রবর্ধন অর্থাৎ বাংলাদেশের বগুড়া মৌর্য সাম্রাজ্যের একটি প্রদেশ বা প্রশাসনিক বিভাগ ছিল। সম্ভবত বিন্দুসার অথবা তাঁর ছেলে ও উত্তরাধিকারী অশোক এ অঞ্চলকে মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। খ্রিস্টপূর্ব ২৭৩-২৭২ অব্দে বিন্দুসারের মৃত্যুর পর রাজ্যের উত্তরাধিকার নিয়ে তাঁর ছেলেদের মধ্যে প্রায় দীর্ঘ চার বছর যুদ্ধের পর অশোক খ্রিস্টপূর্ব ২৬৯-২৬৮ অব্দে রাজা হিসেবে অভিষিক্ত হন। তিনি ২৩২ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত রাজ্য শাসন করেন।

শাসনের প্রথম পর্বে অশোক উপমহাদেশের অধিকাংশে তাঁর রাজ্যের বিস্তৃতি ঘটান; কিন্তু রক্তক্ষয়ী কলিঙ্গ যুদ্ধের পর অশোকের রাজনৈতিক ও নৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আমূল পরিবর্তন আসে। অশোকের প্রস্তর ও স্তম্ভ লিপির মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, কী করে কলিঙ্গ যুদ্ধের রক্তবন্যা তাঁকে একজন নীতিমান ব্যক্তিতে পরিণত করেছে। ওই সময় থেকেই তিনি জীবনের সব ক্ষেত্রে বিশ্বশান্তি ও ন্যায়নিষ্ঠ শাসন প্রতিষ্ঠায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। জীবনের অবশিষ্ট সময় অহিংস ধর্মই তাঁর পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে। অশোক পাটলীপুত্র যেটির অবস্থান ছিল বর্তমান পাটনার কাছাকাছি সেখান থেকে তাঁর বিশাল সাম্রাজ্য শাসন করতেন। ইতিহাসবিদদের মতে, রাজকীয় তহবিল ও ধর্ম প্রচারের ব্যয় নির্বাহের অর্থের প্রধান উৎস ছিল গঙ্গা উপত্যকা থেকে সংগৃহীত রাজস্ব। প্রাচীন সভ্যতার বিস্তৃতি ও গভীরতার বিষয়টি প্রাচ্যবিদদের দ্বারা উন্মোচিত না হওয়া পর্যন্ত পুরাণ সাহিত্যের কয়েকটি অসম্পূর্ণ তথ্যের ওপর অশোক সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ ছিল। পুরাণ সাহিত্যে অশোককে মৌর্য রাজবংশের একজন নগণ্য শাসক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৮৩৭ সালে জেমস প্রিন্সেপ অশোকের বেশ কয়েকটি প্রস্তরলিপির পাঠোদ্ধার করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, পুরাণ সাহিত্যে বর্ণিত সম্রাট অশোককে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক বড় মাপের সম্রাট ছিলেন তিনি।

মুন্সি জামিলউদ্দিন

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর