রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট

প্রশাসনকে কড়া হতে হবে

অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন রোগী ও তাদের অভিভাবকরা। মাত্র ৩-৪ কিলোমিটার দূরের হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে রোগী নিতেও দিতে হয় ২-৩ হাজার টাকা। বাংলাদেশে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া দক্ষিণ এশিয়ার যেকোনো দেশের চেয়ে বেশি। আর এ জন্য দায়ী সিন্ডিকেট প্রথা। প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ঘিরে গড়ে উঠেছে অ্যাম্বুলেন্সকেন্দ্রিক শক্তিশালী সিন্ডিকেট। রোগী বা রোগীর স্বজনদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে তারা। অধিকাংশ অ্যাম্বুলেন্সের মালিক হাসপাতালের কর্মচারী কিংবা তাদের স্বজন। অনেক রাজনীতিক ও স্থানীয় প্রভাবশালীও জড়িত এ সিন্ডিকেটে। তাদের কারও অ্যাম্বুলেন্স আছে, কেউ আবার মাসোয়ারা পান। সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, বারডেম জেনারেল হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল ও জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউট ঘিরে গড়ে উঠেছে এক ডজনের মতো শক্তিশালী অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেটের রয়েছে পৃথক সমিতি ও নেতা। হাসপাতালগুলোর আশপাশেই রয়েছে তাদের অলিখিত অফিস। অ্যাম্বুলেন্স সিন্ডিকেট এতই শক্তিশালী যে কেউ বাইরে থেকে অ্যাম্বুলেন্স এনে রোগী পরিবহন করতে চাইলে রোগীকে তাতে উঠতে দেওয়া হয় না। ফলে বেশি টাকায় সিন্ডিকেটের আওতাধীন অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে হয়। অ্যাম্বুলেন্স পরিচালনায় কোনো নীতিমালা না থাকায় যথেচ্ছতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। কিছু লোভী মানুষের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছেন রোগী ও অভিভাবকরা। ১৯৮৩ সালের মোটরযান বিধিতে নিবন্ধনের আওতায় দেশে ২০ ধরনের পরিবহনের মধ্যে ১ নম্বরে রয়েছে অ্যাম্বুলেন্সের নাম। কিন্তু জরুরি সেবামূলক অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস এখন যেভাবেই হোক টাকা আদায়ের ফাঁদ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।  এ নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে শক্ত হতে হবে।

সর্বশেষ খবর