রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

ঋণখেলাপি

কৃষক জেলে যায় লুটেরারা নিরাপদে

বাংলাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে পার পেয়ে যাওয়া অহরহ ঘটে। অথচ ফসল ফলাতে নেওয়া ২৫-৩০ হাজার টাকার ঋণ খেলাপি হলেই কৃষককে ভরা হয় জেলে। ঋণ নিতে কৃষককে উপরি দিতে হয় ব্যাংক কর্মচারীদের। এটি একটি অলিখিত নিয়ম। তবে ঋণ শোধ করার পরও তা পরিশোধ না দেখিয়ে ঋণখেলাপির মামলা দায়ের এবং সেই সূত্রে গ্রেফতারের অভিযোগ উঠেছে পাবনার ঈশ্বরদীতে। ১২ জন কৃষককে এজন্য জেলহাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের ভড়ইমারি গ্রামের ১২ জন প্রান্তিক কৃষক সমবায় ব্যাংক থেকে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কৃষকের অভিযোগ, তারা সেই ঋণ যথারীতি শোধও করেছেন। তার পরও কেন গ্রেফতার করা হয়েছে তা তাদের অজানা। মামলার সূত্রানুযায়ী সমবায় ব্যাংক ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা ঋণ দিয়েছিল ৩৭ কৃষককে। এ ঋণ পরিশোধ না করায় ২০২১ সালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তার পরও এ বিষয়ে যোগাযোগ করেনি কৃষক। গত বুধবার আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ ১২ কৃষককে গ্রেফতার করে। কেউ ঋণখেলাপি হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হলে তাতে আপত্তির কিছু নেই। তবে কেউ কেউ শত শত কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লোপাট করার পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে আর বিপরীতে অসহায় কৃষককে ২৫-৩০ হাজার টাকার জন্য জেলে ভরা হবে তা শোভনীয় নয়। ঈশ্বরদীতে ঋণ নিয়ে যথারীতি শোধ করার যে দাবি করেছেন আটক কৃষক, সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত। ব্যাংক ঋণ নিতে তাদের কাছ থেকে কী পরিমাণ উৎকোচ নেওয়া হয়েছে সে বিষয়টিও অনুসন্ধান করে দেখা উচিত। যৎসামান্য ঋণের জন্য কৃষককে যেহেতু কোমরে দড়ি বেঁধে জেলহাজতে ভরা হচ্ছে, সেহেতু শত শত কোটি টাকা লোপাটকারী ঋণখেলাপি লুটেরাদের কাছ থেকে অর্থ উদ্ধারে একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে-এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর