অবৈধ ক্লিনিকের চিকিৎসাবাণিজ্য অবাধেই চলছে এই সব সম্ভবের দেশে। গত মে মাসে ঘটা করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ নির্দেশ জারির পর স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় সারা দেশে অবৈধ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযান চালায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। গত ছয় মাসে সারা দেশে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার অবৈধ হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়। জুন-আগস্টে নতুন রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসে ১ হাজার ১০৩টি প্রতিষ্ঠান ও লাইসেন্স পুনঃনবায়ন করে ২ হাজার ১৮১টি প্রতিষ্ঠান। নতুন লাইসেন্সের জন্য ২ হাজার ৩৩৯টি আবেদন জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে। লাইসেন্স পুনঃনবায়নের জন্য ৪ হাজার ৫৯৮টি আবেদন জমা পড়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন আছে অথচ প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সব শর্ত মানছে, মানা হচ্ছে, তাদের চিঠি দিয়ে সতর্ক করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। সারা দেশে অভিযান পরিচালনায় প্রয়োজনীয় জনবলের সংকট রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল ও ক্লিনিক শাখার। বিচারিক ক্ষমতা না থাকায় সরাসরি অভিযান পরিচালনা করে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া কিংবা জরিমানাও করতে পারে না তারা। তাই অভিযান পরিচালনা করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা জেলা প্রশাসকের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতারও প্রয়োজন পড়ে। এসব সহযোগিতা নিশ্চিত হলেও অলিগলিতে অভিযান পরিচালনা প্রায়শ সম্ভব হয় না। অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কারও কারও যোগসাজশ থাকায় তাদের অনেকেই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। ফলে চিকিৎসার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়তই প্রতারণার শিকার হচ্ছে। এ নৈরাজ্যের অবসানে কর্তৃপক্ষ সচেতন হবেন- এমনটিই প্রত্যাশিত।