বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

সিমেন্ট শিল্পের সংকট

কর ও শুল্কের বোঝা হ্রাস করুন

দেশের সিমেন্ট শিল্প একের পর এক সংকটে ধুঁকছে। জ্বালানি সংকট ও ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে কয়েক মাস ধরে কঠিন সময় অতিক্রম করছে এ শিল্প। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে সিমেন্ট শিল্পের অন্যতম কাঁচামাল লাইমস্টোনের ওপর ৩০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক এবং ৩ শতাংশ অগ্রিম আয়করের সঙ্গে আরও ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করার সিদ্ধান্তে। অতিরিক্ত শুল্কায়নের ফলে বর্তমানে আমদানি মূল্যের ওপর ২৭ শতাংশের পরিবর্তে প্রায় ৬৭ শতাংশ শুল্ক ও কর পরিশোধ করে লাইমস্টোন ছাড় করাতে হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে এ সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার না হলে শুধু সিমেন্ট শিল্পই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও এর প্রভাব পড়বে। উদ্যোক্তাদের মতে, সিমেন্ট উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল ক্লিংকার, স্লাগ, লাইমস্টোন, ফ্লাই অ্যাশ ও জিপসাম। এই পাঁচটি কাঁচামালই বিদেশ থেকে আমদানি হয়। সিমেন্ট উৎপাদনে লাইমস্টোন সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবহারযোগ্য। লাইমস্টোনের আমদানি মূল্য অন্যান্য কাঁচামালের তুলনায় কম। অতিরিক্ত শুল্কায়নে সিমেন্ট উৎপাদনকারীরা লাইমস্টোন আমদানিতে নিরুৎসাহী হবেন। আমদানির পাশাপাশি বিক্রি পর্যায়ে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর ধার্যের বিষয়টিকেও তারা অযৌক্তিক বলে অভিহিত করেছেন। কোনো সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লোকসানকালেও অগ্রিম আয়কর দিতে বাধ্য হবে যা যুক্তিগ্রাহ্য নয়। মাত্র আড়াই দশক আগেও দেশের সিমেন্ট চাহিদার সিংহভাগ পূরণ হতো আমদানির মাধ্যমে। বর্তমানে দেশে প্রায় ৩৫টি প্রতিষ্ঠান সিমেন্ট উৎপাদনে জড়িত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে সিমেন্ট রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। দেশের সিমেন্ট কারখানাগুলোতে চাহিদার দ্বিগুণ উৎপাদন ক্ষমতা থাকায় তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে এই শিল্প। সম্পূরক শুল্ক ও অগ্রিম আয়করের বোঝা সিমেন্ট শিল্পের অস্তিত্বের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে। যা কাম্য হওয়া উচিত নয়।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর