সোমবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

নদ-নদী অপদখল

সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে

বাংলাদেশের সবচেয়ে মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ হলো এ দেশের নদ-নদী। ১ লাখ ৪৯ হাজার ২১০ বর্গকিলোমিটারের এ ভূখন্ডে যত নদ-নদী খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় রয়েছে তা দুনিয়ার আর কোথাও নেই। এসব নদ-নদী জলাশয় মিঠা পানির উৎস হিসেবে বিবেচিত। বলা যায়, এ প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে বাংলাদেশ এগিয়ে যেতে পারে পর্যটন ক্ষেত্রে। মাছ উৎপাদনে বিশ্বের প্রথম স্থানটি অর্জন করতে পারে অনায়াসে। ফসল উৎপাদনেও সাফল্যের উৎস হতে পারে। কিন্তু এ দেশের প্রশাসনের ভূমিকা আত্মঘাতী। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের নদ-নদী-জলাশয় উদ্ধারে গুরুত্ব দিলেও দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর ‘ধীরে চল’ নীতিতে নদ-নদীর বোবাকান্না থামছেই না। নদী রক্ষায় একের পর এক প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও থামছে না দখল, ফিরছে না নদীর প্রবাহ। উল্টো খননের অভাবে নাব্য হারাচ্ছে নদী। প্রতিদিনই প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ভরাট হচ্ছে বিভিন্ন জলাশয়। বছরের পর বছর গড়ালেও হচ্ছে না নদী দখলদারদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা। ২০১৮ ও ২০১৯ সালের দিকে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের উদ্যোগে ৬৪ জেলায় ৫৭ হাজার ৩৯০ অবৈধ দখলদারের তালিকা করা হলেও অর্ধেকের বেশি নদীখেকোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নিতে পারেনি দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো। বর্তমান সরকার দেশের নদ-নদী রক্ষায় মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় ১৭৮টি নদী খনন ও পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ সচলের কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। একদিকে বিপুল অর্থ ব্যয়ে চলছে নদী রক্ষা প্রকল্প, অন্যদিকে সমানতালে চলছে নদী দখল। নদ-নদী সুরক্ষায় সরকারের নেওয়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা জড়িত, তারা নদী রক্ষার চেয়ে নিজেদের পকেট ভরার দিকেই বেশি তৎপর এমন অভিযোগ ওপেন সিক্রেট।  ফলে নদ-নদী রক্ষায় সরকার শত শত কোটি টাকা যখন ব্যয় করছে তখন প্রভাবশালীদের অপদখল দেখার কেউ নেই। নদ-নদী রক্ষায় প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সে আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে হবে ছাত্র, শিক্ষক ও সামাজিক সংগঠনগুলোকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর