বুধবার, ২৪ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতে হিন্দুত্ববাদের বিদায় ঘণ্টা

সুখরঞ্জন দাশগুপ্ত

ভারতে হিন্দুত্ববাদের বিদায় ঘণ্টা

কন্যা কুমারী থেকে কাশ্মীর। সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার হেঁটে ভারত জোড় যাত্রা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। তার সুফল তিনি পেয়েছেন। দক্ষিণ ভারত থেকে গেরুয়া বাহিনীর সরকার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। ২০১৪ সালে প্রথম ক্ষমতায় এসে মোদির স্লোগান ছিল-কংগ্রেসমুক্ত ভারত। কর্ণাটকের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, মানুষ আর তাদের বিশ্বাস করছে না। মানুষের কাছে  তাদের জারিজুরি ধরা পড়ে গেছে। নির্বাচনের ফলাফল দেখে রাহুল গান্ধীর প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল ঘৃণা নয়, ভালোবাসার জয় হয়েছে। মানুষকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতে হবে। তার এই দীর্ঘযাত্রায় তিনি জনগণের ভালোবাসাই অনুভব করেছেন। খুব শিগগির তিনি দ্বিতীয় দফার যাত্রা শুরু করবেন- অরুণাচল থেকে গুজরাট। এই যাত্রাও দীর্ঘপথ। তারপরই শুরু হবে ২০২৪-এর লোকসভার প্রচারপর্ব আর রাহুলের এই যাত্রার মধ্যেই চলতি বছরে ভারতের আরও চারটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হবে। এর মধ্যে দুটি কংগ্রেসের দখলে ছত্তিশগড় ও রাজস্থান। এ ছাড়া বড় রাজ্য হলো মধ্যপ্রদেশ। এখানেও গত নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল। কিন্তু টাকা দিয়ে বিধায়ক কিনে সেখানে গেরুয়া বাহিনী সরকার গঠন করে। পাঁচ মাসের মধ্যে বিজেপির হাত থেকে দুটি রাজ্য ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। একটি হিমাচল প্রদেশ, অপরটি কর্ণাটক। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে কর্ণাটকে জেতার পর বলেছেন, কংগ্রেস সাধারণ মানুষের অভাব-অভিযোগ বোঝে। তাই এ দেশের জনগণ আর হিন্দুত্ব বিশ্বাস করছে না।

কর্ণাটক নির্বাচনের ফল আসতেই আঞ্চলিক দলগুলো সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে রাহুলকে অভিনন্দন জানিয়েছে। এই নির্বাচনে ভারতের সবচেয়ে বড় ইংরেজি চ্যানেল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, কংগ্রেসের হাতে যদি টাকা থাকত, কংগ্রেস আরও ২০-৩০টি আসন আদায় করে নিতে পারত। টাকার অভাবটাই বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কংগ্রেসকে অভিনন্দন জানাতে তার অ্যালার্জি আছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পেন্টাগন একদিকে যেমন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ’৭১ সাল থেকে মাথা গলিয়ে আসছে তারা পশ্চিমবঙ্গের দিদিকেও হাতিয়ার বলে মনে করে। কারণ তারা কমিউনিস্টবিরোধী। পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম খোলাখুলি বলেছেন, মমতা কোথা থেকে কত টাকা পায় তা আমরা জানি।

দুজনই একই সুরে বলেছেন, বাংলাদেশের জামায়াত-বিএনপি এবং আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ডধারী কিছু সুবিধাবাদী ব্যবসায়ী নেতা সেখানে প্রকাশ্যে কালীঘাটে এসে প্রচুর টাকা দিয়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেস এবং সিপিএমের দুই নেতা মমতাকে মনে করিয়ে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে আর মুসলিম তোষণ করে ভোট পাবেন না। যদি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করার সুযোগ বিরোধীরা পায়, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তারা মমতাকে উচিত শিক্ষা দিয়ে দেবে। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করলে তাদের জবাব ন্যাড়া কতবার বেলতলায় যাবে?

বাংলাদেশের রাজাকার, আলবদর, আল শামসের মতো কট্টরপন্থি মৌলবাদীরা শুধু মমতা নয়, এদেশের আরএসএসের সঙ্গেও গোপন আঁতাত করে চলে। তাদের কখনো কলকাতা, কখনো লন্ডনে দেখা-সাক্ষাৎ হয়। বাংলাদেশে যেমন ইসলামের ধুয়ো তুলে পেন্টগনের সমর্থনে একশ্রেণির বিরোধী শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়, ঠিক একইভাবে ভারতে কংগ্রেস দলকে বাধা দেওয়ার ষড়যন্ত্র তারা ’৭১ সাল থেকে করে আসছে। এবার একটু কর্ণাটকের পরিস্থিতির দিকে তাকানো যাক। কর্ণাটকে ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদি দুই সপ্তাহে ১৯টি রোড শো করেছিলেন। গত ছয় মাসে নানা অসিলায় ১১ বার ওই রাজ্যে গিয়েছেন মোদি। এত কিছুর পরেও কর্ণাটকের জয়কে নরেন্দ্র মোদির পরাজয় বলেই তুলে ধরেছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের যুক্তি-জয় বজরংবলি ধ্বনি তুললেও নরেন্দ্র মোদির মেরুকরণের রাজনীতি কর্ণাটকে সফল হয়নি। মোদির ‘ঘৃণার রাজনীতি’ ত্যাগ করে কর্ণাটকের মানুষ রাহুলের ‘ভালোবাসার বিপণিকে বেছে নিয়েছে। রাহুল নিজে অবশ্য কর্ণাটকে জয়ের সাফল্য দাবি করেননি। দলের নেতা-কর্মীদের কৃতিত্ব দিয়ে রাহুলের বক্তব্য গরিব মানুষের শক্তি মুনাফাখোর শিল্পপতিদের শক্তিকে হারিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস গরিবের সমস্যা নিয়ে লড়ছে। ভালোবাসা নিয়ে ভোটে লড়েছে কংগ্রেস।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে আজ আর কেউ বিশ্বাস করে না। ভাইপো আর নিজেকে বাঁচাতে তিনি পারেন না এমন কোনো কাজ নেই, এ কথা প্রমাণিত হয়ে গেছে। যেখানে যেখানে বিজেপির পক্ষে জেতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল সেখানেই মুশকিল আসান হয়ে আসরে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়া, মেঘালয়, মণিপুর, ত্রিপুরা সর্বত্র প্রার্থী দিয়ে বিজেপির জেতা এবং কংগ্রেসের পরাজয় সুনিশ্চিত করার চেষ্টা করেছেন তিনি। এর মধ্যে গোয়া এবং মেঘালয় যে তৃণমূলের ভোট কাটাটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। এর থেকে স্পষ্টতই প্রমাণ হয়ে যাচ্ছে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপিকে বাঁচানোর জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সদাই প্রস্তুত।

কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনের ফল বেরোনোর পর এ কথা তিনি আরও স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন। এককভাবে বিপুল ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও কংগ্রেসকে একবারের জন্যও তিনি অভিনন্দন জানালেন না। বরং কর্ণাটকের জনগণকে বিজেপিকে হারানোর অভিনন্দন জানিয়ে শুকনো দায় সারলেন। ওয়াকিবহাল রাজনৈতিক মহল মনে করে, কংগ্রেস ও রাহুল গান্ধীকে অভিনন্দন না জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় জোটের রাস্তায় কাঁটা দিয়ে রাখলেন। ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা যাতে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোদি বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়তে না পারে, সে জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করার ইঙ্গিত দিলেন তৃণমূল নেত্রী। বুঝিয়ে দিলেন, তিনি আসলে বিরোধী শিবিরে বিজেপির ‘ট্রোজান হর্স’। তাঁর আসল কাজ ছদ্মবেশে ঢুকে পড়ে বিজেপিকেই সুবিধে করে দেওয়া। কর্ণাটক নির্বাচন ঘোষণার সময় থেকেই যাতে জনতা দল সেকুলারের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট না হয় তার জন্য তৃণমূল নেত্রী সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। জেডিএস নেতা এইচ টি কুমারস্বামীকে নবান্নে ডেকে পাঠিয়ে মগজধোলাই করার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। স্বয়ং নরেন্দ্র মোদি তাঁকে এ কাজের দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তা নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকতে পারে না। মমতা কুমারস্বামীকে বুঝিয়েছিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট না করে তাঁর এককভাবে লড়া উচিত। কারণ, যদি কোনো কারণে বিজেপির আসন সংখ্যা কম হয়, তাহলে তিনিই হবেন মুখ্যমন্ত্রী। কুমারস্বামী সেই টোপ গিলেছিলেন। কিন্তু, নির্বাচনের ফলাফল যে এতটাই দুর্বিষহ হবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি। কংগ্রেস যে দুই-তৃতীয়াংশ আসন দখল করে নেবে, মমতা, মোদি বা কুমারস্বামী কারও মাথাতেই তা আসেনি। এর ফলে মমতা নিজে তো পথে বসলেনই, কুমারস্বামীকেও পথে বসালেন।

এর আগে তিনি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগনমোহন রেড্ডিকেও নবান্নে ডেকে এনে কংগ্রেস থেকে সমদূরত্ব বজায় রাখার জন্য নানাভাবে বোঝাতে শুরু করেন। এসব যে বিজেপির বুদ্ধিতেই, সেটা অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের বুঝতে অসুবিধে হয়নি। চন্দ্রশেখর রাওর মেয়ের বাড়িতে আয়কর বিভাগ হানা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, সে রাজ্যে ঘন ঘন ইডি/সিবিআই’র যাতায়াত শুরু হয়ে গেছে। বর্ষীয়ান অভিজ্ঞ এই নেতা ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছেন, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন না। অতএব, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় নেচে তাঁর কোনো সুবিধে হবে না। বরং বিজেপিকে ক্ষমতার গদি থেকে হারানোই তার প্রধান লক্ষ্য। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলো কী গেল, সেদিকে তাকালে চলবে না। জগনমোহন রেড্ডিও আপাতত কংগ্রেসের সঙ্গে বৃহত্তর জোট গড়ার দিকেই ঝুঁকে রয়েছেন। কাজেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত দৌরাত্ম্যই এখন ব্যর্থ। ২০২৪-এ বিজেপি সরকার হটে গেলে যদি রাহুল প্রধানমন্ত্রী হন তাহলে কালীঘাট নিবাসী পশ্চিমবঙ্গের অধিশ্বরীর জেলযাত্রা কেউ আটকাতে পারবে না। পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, এমনকী দেশের সাধারণ মানুষের সঙ্গে যে প্রতারণা ও রাজনৈতিক বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, কংগ্রেস তা ভুলে যাবে বলে মনে হয় না। কাজেই গোড়ার দিকে বিজেপি যেভাবে মমতা শিবিরের বিরুদ্ধে ইডি/সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করিয়ে একের পর এক রহস্য উদঘাটন করছিল, পরবর্তীকালে তা আরও বাড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পিসি-ভাইপোর কারাগার যাত্রা সুনিশ্চিত।

কর্ণাটকের বিপুল জয় কংগ্রেস এবং সেই সঙ্গে বাম শিবিরে নতুন করে উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করেছে। সামনেই এ রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট। ইতোমধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল শিবিরে ভাঙন ও বাম-কংগ্রেস শিবিরের পুনরুজ্জীবন সবার চোখে পড়েছে। জেলায় জেলায় কংগ্রেস ও বাম যৌথ সমাবেশ করছে। কৃষক সভায় বিশাল ভিড় হচ্ছে। তৃণমূল ও বিজেপির সমর্থকদের একাংশ দল ভেঙে বেরিয়ে এসে প্রকাশ্য জনসভায় বাম অথবা কংগ্রেস শিবিরে যোগ দিচ্ছেন। কিছুদিন আগেই মালদহের রতুয়ায়, মানিকচকে তৃণমূল থেকে প্রায় হাজার দুই সমর্থক কংগ্রেস শিবিরে যোগ দেন। মুর্শিদাবাদে ডোমকল, ঘি, জঙ্গিপুর, কান্দি, লালগোলা, ফরাক্কা-এক সময় অধীর চৌধুরীর গড় বলে পরিচিত এলাকাগুলোতে ফের কংগ্রেসের রমরমা শুরু হয়েছে। তৃণমূল বা বিজেপি শিবিরে নাম লেখানো সাধারণ সমর্থকরা ফের কংগ্রেসে ফিরে আসছেন। অন্যদিকে নদিয়ায় তেহট্ট, করিমপুরে কদিন আগেই পাঁচ হাজার তৃণমূল সমর্থক সিপিআই(এম)-এ যোগ দিয়েছেন। একই ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, পাতন প্রভৃতি এলাকায়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে তৃণমূলের বিদায় সমাগত। কর্ণাটকের ফলাফল এই প্রক্রিয়াকেই আরও মসৃণ ও ত্বরান্বিত করবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে অচিরেই বাম-কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার হিড়িক শুরু হবে। বহু সমর্থক প্রায় প্রতিদিনই তৃণমূল শিবিরে যোগ দিচ্ছিলেন। এবার উল্টো পথে ফেরার পালা।

ধর্মীয় উন্মাদনা জাগিয়ে যে আর কোনো কাজ হবে না, কর্ণাটকের নির্বাচনে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। এর ফলে মুসলিমদের কংগ্রেসের প্রতি বিশ্বাস আরও প্রগাঢ় হয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে সুনিশ্চিতভাবে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম ভোটাররা কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টকে আগের চেয়ে বেশি সমর্থন করবেন। তার কারণ, তাতে কেন্দ্রে কংগ্রেসের বিকল্প সরকার তৈরি করার সম্ভাবনা প্রবলতর হবে এবং সেই সরকারের পাশে থাকবে বামেরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। বরং যত দিন যাবে তার জন্য জেলযাত্রার রাস্তাই মসৃণ হবে। শুধু তিনি একা নন, চৌর্যবৃত্তি ও প্রতারণার দায়ে ভাইপোসহ অনেকেরই কারাবাস হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মুসলিম ভোটব্যাংক ক্রমশ তৃণমূল ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। কারণ, তৃণমূল যে হারবে তা মানুষের মধ্যে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

যত দিন যাচ্ছে এবং তৃণমূলের পতন যত নিশ্চিত হচ্ছে ততই বাম ও কংগ্রেস শিবিরের মধ্যে জোট প্রক্রিয়া মসৃণ হতে বাধ্য, একেবারে নিচুতলার কর্মীরাও বুঝতে পারছেন নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরে, ঝগড়াঝাটি করে কোনো লাভ নেই। এখন মূল কাজ কেন্দ্র থেকে বিজেপি সরকার এবং এ রাজ্য থেকে তৃণমূল সরকারকে উৎখাত করা। এ রাজ্যে বিজেপির প্রভাব বৃদ্ধির আর কোনো সম্ভাবনাই নেই। কাজেই এ সময় জোট আরও মসৃণ না হলে তৃণমূলকে জোর ধাক্কা দেওয়া সম্ভব নয়।  এর পাশাপাশি তৃণমূল শিবিরে এখন ছন্নছাড়া অবস্থা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নবজোয়ার যাত্রায় প্রায় প্রতিদিনই ব্যালট ছেঁড়াছেঁড়ি, মারামারি, গালাগালির খবর প্রকাশ্যে আসছে। এমনকী ব্যালট বাক্সও তুলে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।  যুবরাজের সে সব কিছুই চোখে পড়ছে না। তিনি একটি লাক্সারি ভলভো বাসে ঠাকুর চাকর-পাচক নিয়ে পিকনিক করছেন। যত ঘুরছেন তত বেশি গালাগালি খাচ্ছেন।

 

লেখক : ভারতীয় প্রবীণ সাংবাদিক

সর্বশেষ খবর