শুক্রবার, ২৬ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মেলালে ক্ষতি কী

মেজর আখতার (অব.)

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মেলালে ক্ষতি কী

আওয়ামী লীগের অন্দরমহলের লোক তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয় আন্দালিব রহমান পার্থর সঙ্গে লন্ডনে রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিতে পারলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করতে আমাদের বাধা কোথায়? পার্থর সঙ্গে আড্ডা দেওয়া কোনো ভুল রাজনীতি নয়। তবে এর ব্যাপ্তি বাড়াতে চাই আরও চৌকশ রাজনীতি। আজকে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের যে দ্বন্দ্ব তা কিন্তু আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কেউই শুরু করেনি। মাঝখান থেকে কিছু সুযোগসন্ধানী ও উভয়ের জাতশত্রু তাদের কায়েমি স্বার্থে স্বাধীনতার পক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি মূল দলকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লাগিয়ে দিয়েছে। ১৯৭৫ সালের ইতিহাসের ঘৃণ্যতম হত্যাকান্ডের সময় বিএনপির জন্ম হয়নি। ইতিহাস রাজসাক্ষী যে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ওই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। যে যুক্তিতে অনেকে ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের সঙ্গে জিয়াকে জড়াতে চায় সেই যুক্তিতে আওয়ামী লীগের অনেক বড় বড় নেতাও দায়ী, সেনাবাহিনীর তৎকালীন সব অফিসার ও সৈনিক দায়ী, ওই সময়ে ঢাকায় কর্মরত সব পুলিশ অফিসার দায়ী। জিয়া দায়ী হলে অন্য সবাইকেও যার যার প্রাপ্য দায় নিতে হবে।

তারপর জিয়া হত্যা, যেখানে আওয়ামী লীগের কোনো দায়ভার ছিল না। অতি সুকৌশলে জিয়াকে হত্যা করে জেনারেল মঞ্জুসহ মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে বিএনপি-আওয়ামী লীগের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। এরশাদের ৯ বছরেও বিএনপি-আওয়ামী লীগের কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। দ্বন্দ্ব শুরু হলো ১৯৯১ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতা দখল নিয়ে। তখন আওয়ামী লীগ চাপ সৃষ্টি করল সংবিধান অনুযায়ী তৎকালীন রাষ্ট্রপতির ওপর বিএনপির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার জন্য। শুরু হলো প্রাসাদ ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রে জয়ী হলো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি তথা জামায়াতে ইসলামী। হেরে গেল আওয়ামী লীগ। বাড়তে থাকল দুই দলের মধ্যে পার্থক্য। শুরু হলো সংঘাতের রাজনীতি। ১৯৯৬ সালে হেরে গেল বিএনপি, জিতে গেল আওয়ামী লীগ, কিন্তু তাদের সঙ্গে আবারও জিতে গেল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি জামায়াতে ইসলামী। শুরু হলো রাজনীতির নতুন খেলা। একটি দুষ্ট অশুভ শক্তি দানা বাঁধতে থাকল নব পদ্ধতির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানের পেছনে। সামরিক ও বেসামরিক সাবেক আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা ও ঢাকাস্থ কিছু দূতাবাস নির্বাচনের রাজনীতিতে নাক গলিয়ে দিল। ২০০১ সালে জমে গেল এক নতুন ধরনের নির্বাচনী চাল, যেখানে পর্দার আড়ালে ঢাকা থেকে ডিসি ও এসপিদের নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচনকে প্রভাবান্বিত করে ফেলা হলো। এ কৌশলে হেরে গেল ক্ষমতা থেকে সদ্য বিদায়ী দল আওয়ামী লীগ, কিন্তু জিতে গেল বিএনপি ও সেই পুরনো মুক্তিযুদ্ধবিরোধী দল। কারণ ২০০১ সালে জামায়াতে ইসলামী ১৯৯৬ সালের পক্ষ ত্যাগ করে আবার চলে এলো বিএনপির সঙ্গে। এবার তারা পাকাপোক্ত জোট বাঁধল বিএনপির সঙ্গে। তারা ঢুকে গেল সরকারে। ১৯৭১ সালে যে দেশের জন্ম রুখে দেওয়ার জন্য যারা পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বিচারে হত্যা করেছিল তারা তখন মন্ত্রী হয়ে গাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রঞ্জিত লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বুকের পাঁজর ভেঙে দিল। সব মুক্তিযোদ্ধার দুঃখ ও বেদনায় বাংলাদেশের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠল। এ অবস্থাকে আরও অসহনীয় ও ক্রুদ্ধ করে তুলল। ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর চরম ঘৃণিত গ্রেনেড হামলা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আপামর জনগণ কোনোভাবেই মেনে নিতে পারল না। তারা বুঝে গেল মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াতের নীলনকশা। ১৯৯১ সালে তারা যখন বিএনপির পক্ষে তখন ক্ষমতায় যায় বিএনপি। আবার ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের পক্ষে গিয়ে সেই জামায়াত বিএনপিকে টেনেহিঁচড়ে ক্ষমতা থেকে নামায়। তারপর ২০০১ সালে নতুন খেলা খেলে জামায়াত বিএনপির পক্ষে গিয়ে আওয়ামী লীগকে চরমভাবে পরাজিত করে। খেলা পরিষ্কার হয়ে গেল। জামায়াত ক্রমান্বয়ে রাজনীতিতে অতি ক্ষমতাশালী পক্ষ হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। তারাই যেন রাজনীতির নিয়ন্ত্রক, ক্ষমতার ধারক। তাদের বাদ দিয়ে বিএনপি বা আওয়ামী লীগের একক কোনো অস্তিত্ব নেই।

রুখে দাঁড়ালেন শেখ হাসিনা এককভাবে। মরণকামড় দিলেন বিএনপি-জামায়াতের ওপর। লগি-বৈঠা নিয়ে রুখে দিলেন জামায়াতকে। কিন্তু ভুল করে ফেললেন খালেদা জিয়া। পক্ষ নিলেন জামায়াতের। ডেকে আনলেন চরম সর্বনাশ। তখন ভারতে ক্ষমতায় আওয়ামী লীগের বন্ধু তথা মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সহায়তাকারী কংগ্রেস। তারাও জামায়াতের বিপক্ষে দাঁড়াল। নির্বিঘ্নে ঘটে গেল ১/১১-এর পরিবর্তন। ক্ষমতায় এলো ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিন সরকার। সবার ভিতরে ভিতরে এক লক্ষ্য- হটাতে হবে জামায়াত। এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রও ছিল একমত। বিএনপির নেতৃত্ব বুঝতে পারেননি। মাথা ঢুকিয়ে দিলেন ২০০৮ সালের নির্বাচনে। শত অনুরোধ করেও বোঝাতে পারলাম না নীলনকশার কথা। ফলে ভাগ্যে জুটল না আমার কপালে সোনার হরিণ ২০০৮ সালের বিএনপির মনোনয়ন। ছিটকে পড়লাম রাজনীতি থেকে। কিন্তু এখনো ঝুলে আছি খালেদা জিয়ার জয় দেখব বলে।

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে শুরু হলো অন্য রাজনীতি। ক্ষমতায় এসে অতীতের প্রতিটি আঘাতের জবাব দিতে শুরু করলেন এক এক করে। ল-ভ- করে দিলেন জামায়াতকে। পুরো মাথা কেটে দিলেন জামায়াতের। ধ্বংসের প্রান্তে নিয়ে লুলা করে ঝুলিয়ে রাখলেন জামায়াতকে যেন আর কখনোই নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সাকার উচ্চকণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দিলেন। সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব দেখাল মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের মাথা তুলে দাঁড়ানোর ক্ষমতা চিরতরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে তাদের অর্থের উৎস বন্ধ  করে। পক্ষ পরিবর্তন করে ক্ষমতায় আসার চতুর ও ভেলকিবাজির জামায়াতের রাজনীতির পঙ্কিল পথ বন্ধ করে দিলেন। সেই সঙ্গে হালকার ওপর দিয়ে ছেড়ে দিলেন বিএনপিকে। সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ মামলার সাজা দিয়ে জেল-আর বাইরের খেলা খেলছেন আপন খুশিতে। ফাঁসি না দিয়ে কোরবানির খাসি যেমন বছর ধরে যতেœ প্রতিপালন করে সময়মতো কোরবানি দেওয়ার জন্য, তেমনি খেলা খেলার জন্য যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়ে প্রতিপালন করে যাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো তাড়াহুড়া নেই। তিনি এখন পর্যন্ত চালে কোনো ভুল করেননি। আগামীতে কী হবে জানি না। তবে সাম্প্রতিক তুরস্কের অভিজ্ঞতা বলে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি কোনো একক শক্তি পরিবর্তন আনতে পারে না।

আমরা সবাই রাজনীতি করি জনগণের কল্যাণের জন্য। অন্তত বক্তৃতা-বিবৃতিতে তাই বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলি। জনগণের কল্যাণই যখন আমাদের সবার লক্ষ্য তাহলে জনগণের কল্যাণের জন্য আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে বাধাটা কোথায়। আমরা যদি বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন সময়ে জোটবদ্ধ হতে পারি, জোট ভাঙতে পারি, আদর্শের বিপরীত দলের সঙ্গেও মিলেমিশে চলতে পারি, জামায়াত একবার বিএনপি, একবার আওয়ামী লীগ আবার বিএনপির সঙ্গে ঘর করাতে যদি চরিত্র নষ্ট না হয়, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ যদি পাশাপাশি এরশাদবিরোধী আন্দোলন করতে পারি তাহলে এখন বিএনপি-আওয়ামী লীগ মিলে বা পাশাপাশি কেন জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করা যাবে না। রাজনীতিতে সব সময় বিরোধিতা করতে হবে কেন? আমরা কি রাজনৈতিক অর্জনের জন্য, জনগণের কল্যাণের জন্য বিরোধিতা না করে পাশাপাশি প্রতিযোগিতা করতে পারি না?

২০১৮ সালের নির্বাচনে আমি দলের মনোনয়ন পেয়েছিলাম। আমি নেতাকে ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছিলাম যে, আমার কাছে যে তথ্য আছে তাতে আমরা নির্বাচনে মাঠেই থাকতে পারব না, জয়ের তো প্রশ্নই ওঠে না। আমার বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। দলের নির্দেশ মেনে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করি। তবে আমি নির্বাচনে কোনো ব্যানার, পোস্টার, জনসভা, পথসভা, নির্বাচন অফিস কিছুই করিনি, কেন্দ্রে কোনো এজেন্ট দিইনি। তারপরও আমাকে নির্বাচনের মাঠে থাকতে দেয়নি। আমার দলের শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং ওইসব মামলায় এখনো নেতা-কর্মীরা প্রতি মাসে আদালতে হাজিরা দিচ্ছেন। আমাকেও হামলার শিকার হতে হয়েছে। কেউ আমাদের পাশে এসে দাঁড়ায়নি। কোনো বিদেশি শক্তি আমাদের এতটুকু সহানুভূতি জানায়নি। তারপরও আমরা সরকারের সঙ্গে আপস করিনি, এখনো করছি না, ইনশাআল্লাহ আগামীতেও করব না। তবে রাজনীতিতে আমাদের কৌশল অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে। সংঘাতের বা সন্ত্রাসের রাজনীতি করে আমরা টিকে থাকতে পারব না। আঞ্চলিক ও ভূরাজনীতির চালে ভারত একচ্ছত্রভাবে সরকারের পক্ষে। তার ওপর ব্যবসায়িক স্বার্থে ও নতুন বিশ্বরাজনীতির কূটকৌশলের চালে চীনের কাছে সরকার এখন অতি প্রিয়। জাপান-ভারত নতুন সম্পর্কও সরকারকে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। ভারতের কারণে যুক্তরাষ্ট্র প্রকারান্তরে সরকারেরই পক্ষে এবং একই কারণে সৌদি আরবও সরকারের অতি কাছের বন্ধু।

যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশির ভাগ দেশও সরকারকেই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তার ওপরে রাশিয়া সম্পূর্ণভাবে সরকারের পক্ষে। সবচেয়ে বড় বিবেচ্য বিষয় হলো শান্তি ও ব্যবসায়িক স্বার্থের বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখন সব পরাশক্তির কাছে সবচেয়ে আপন। তা ছাড়া জাতিসংঘের নেতৃত্ব এখন সম্পূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে। পক্ষান্তরে বিএনপি এখনো সন্ত্রাসের লেবাস ছাড়তে পারেনি। জামায়াত সম্পৃক্ততার কারণে বিএনপিকে এখনো কেউ আস্থায় নিতে পারছে না। সর্বোপরি বিএনপির নেতৃত্বের আচার-আচরণ, বক্তব্য বা কর্মসূচি এমনকি গ্রহণযোগ্য স্বতঃস্ফূর্ততা এখনো অনেকের আস্থা তৈরি করতে পারেনি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আজ অবধি কোনো ভাষণ বা কর্মসূচি নেই যা কোনো নাড়া দিতে পেরেছে। একটি অতি সহজ সমীকরণ। দলে এখন পর্যন্ত নেতার কোনো আস্থাভাজন বা বিশ্বস্ত অন্য কোনো নেতা নেই। যার সরল মানে হলো তিনি নিজেই অন্য কোনো নেতার আস্থাভাজন বা বিশ্বস্ত নন! এর সমাধান না হলে রাজনীতির সাফল্য সুদূরপরাহত।

গত নির্বাচনের পর দেখতে দেখতে চার বছর পাঁচ মাস চলে যাচ্ছে। এ দীর্ঘ সময়ে আমরা আমাদের রাজনীতির কোন বিজয় অর্জন করতে পারলাম জানি না। আর ভয় করতে ভালো লাগে না। খারাপেরা কখনোই ধর্মের কথা শোনে না, যা চিরন্তন সত্য। এ দেশটা আমাদের, বিশেষ করে আমরা যারা যুদ্ধ করে দেশটাকে স্বাধীন করেছি। সবার মনে রাখতে হবে ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশটি আমরা অর্জন করেছি। এ দেশ শাসন করবে মুক্তিযোদ্ধা তথা মুক্তিযুদ্ধের সহায়ক শক্তি বা পক্ষ। আজকে আমরা দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। আজকের প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা যাকে আমরা আরও পাঁচ বছরের জন্য নির্বিঘ্নে দেশ চালানোর ক্ষমতা দিতে চাই। দেশের সব মুক্তিযোদ্ধা এ ব্যাপারে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলবে এটি সময়ের দাবি। বিদেশি কোনো শক্তির ইচ্ছার কাছে আমরা মাথানত করব না। দেশের তাবৎ বিরোধী দলের সব মুক্তিযোদ্ধার কাছে আমার সুস্পষ্ট আহ্বান থাকবে- মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীদের পক্ষ ত্যাগ করে আসুন আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অবস্থান তৈরি করি। আমরা সরকারের পক্ষে যাব না। আমরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে আরেকটি সমান্তরাল স্রোতধারা তৈরি করব, যাতে আগামী প্রজন্ম তাদের চিন্তা ও চেতনা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বাংলাদেশকে চিরঞ্জীব রাখতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের আওয়ামী লীগবিরোধী শক্তিও যেন রাজনীতি করার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে। তাই আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্বিঘ্নে আগামী পাঁচ বছর শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতায় থাকতে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে চাই। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও আমাদের আহ্বান থাকবে উনার পরে যেন নতুন প্রজন্মের জন্য তাদের মনপছন্দ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার কার্যকরী ও দৃশ্যমান সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। আমরা নিঃশর্তভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আছি। উনাকেও আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। পরিশেষে সব মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের পক্ষে নতুন প্রজন্মের সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের স্বপ্ন ও অনার্জিত আকাক্সক্ষা পূরণের সংগ্রামে কাজ করি। আমরা জয়ী হবই হব। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।              

লেখক : সাবেক সংসদ সদস্য

 

সর্বশেষ খবর