সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনা

ভুল সিগন্যালে মহাবিপর্যয়

ভারতের ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩০০ দাঁড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১২০০। শুক্রবার সন্ধ্যায় চেন্নাইগামী ট্রেনের ওই দুর্ঘটনাকে মহাবিপর্যয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভুল সিগন্যালে ১২৭ কিলোমিটার গতি নিয়ে ট্রেন নির্ধারিত লাইন ছেড়ে চলে যায় অন্যদিকে। তারপরই ঘটে ভয়ংকর দুর্ঘটনা। শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে কলকাতায় হাওড়ার নিকটবর্তী শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে চেন্নাইগামী করমন্ডল এক্সপ্রেস। এটি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওড়িশার বালেশ্বরে পৌঁছায়, আধা ঘণ্টা পর বাহানগা বাজারের কাছে ২৩ কামরার ট্রেনটি দুর্ঘটনায় পড়ে। সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ২৮৮ আর আহত হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করমন্ডল এক্সপ্রেস লাইন ছেড়ে যাওয়ার পর পেছন থেকে ধাক্কা দেয় একটি মালগাড়িকে। এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন সেই মালগাড়ির ওপর উঠে যায়। ২৩টি বগির মধ্যে ১৫টি লাইন থেকে ছিটকে পড়ে পাশের ডাউন লাইনে। সেই লাইন দিয়ে তখন আসছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস। করমন্ডল এক্সপ্রেসের লাইনচ্যুত বগিগুলো গিয়ে পড়ে সেই লাইনের ওপর। বেঙ্গালুরু-হাওড়া ট্রেনটির দুটি কামরাও লাইনচ্যুত হয়। মালগাড়ির ওপরে উঠে যায় আস্ত একটা ইঞ্জিন। রেললাইনের সিমেন্টের স্লিপারগুলো ভেঙেচুরে লোহার রড বেরিয়ে গেছে। উপড়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি। বিশ্বের সবচেয়ে জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ ভারতে রেলপথে যাতায়াত ধারে-কাছের দেশগুলোর চেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যের। সেই সুনাম নষ্ট করেছে ওড়িশার দুর্ঘটনা। ইতোমধ্যে দুর্ঘটনার জন্য সিগন্যালের ত্রুটিকে দায়ী করা হয়েছে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনে। ওড়িশা সরকার নিহতদের ১০ লাখ এবং গুরুতর আহতদের চিকিৎসায় ২ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দানের ঘোষণা দিয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনটিতে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন আহত হয়েছেন। চারজন নিখোঁজের খবর জানানো হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। ভুল সিগন্যাল কী বিপর্যয় ঘটাতে পারে ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা তারই প্রমাণ। আমাদের দেশেও এটি ট্রেন দুর্ঘটনার অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টরা সতর্ক হবেন এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর