সোমবার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ নবী রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রহমতের বার্তা নিয়ে এ ধরায় শুভ আগমন করেছেন। সোমবার সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র একটি দিন। সোমবার রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মদিন হওয়ায় রোজা পালন করেছিলেন, যা সহিহ মুসলিম শরিফের বর্ণনায় পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে হজরত আবু কাতাদাহ আনসারী (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, ‘একদা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে সোমবার দিন রোজা পালনের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই দিনেই আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছিল।’
সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া যায়। এ দিনে রোজা পালন করলে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন সম্ভব। এ দিনে রোজা পালন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিশেষ সুন্নত। এ দিনে রোজা পালন করলেই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করা হয়। নবীর প্রেমিকগণ সর্বদা রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে অনুসরণ করে। তাঁর অনুসরণে খুব সহজেই জান্নাতে যাওয়া সম্ভব। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘আমার উম্মতের সবাই জান্নাতে যাবে, কিন্তু সে যাবে না যে অস্বীকার করবে।’ জিজ্ঞাসা করা হলো- ‘হে আল্লাহর রসুল! জান্নাতে যেতে আবার কে অস্বীকার করবে উত্তরে তিনি বললেন, ‘যে আমার অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে এবং যে আমার অবাধ্যতা করবে, সে-ই জান্নাতে যেতে অস্বীকার করবে।’ (বুখারি শরিফ)।
সোমবার রোজা পালনের বিষয়ে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। তিনি রোজা পালনের জন্য দিনগুলো গণনা করে রাখতেন, কখন সোমবার চলে আসে। যেহেতু সোমবার রোজা পালন করবেন। এ বিষয়ে নবীর স্ত্রী হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোমবার এবং বৃহস্পতিবারের রোজার অপেক্ষা করতেন’। (ইবনে মাজাহ শরিফ)।
সোমবার বান্দার সব আমল আল্লাহর দরবারে পৌঁছানো হয়। এ জন্যও রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রাখতেন। তিরমিজি শরিফে উল্লেখ রয়েছে, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সোম ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে বান্দার আমল পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে রোজা থাকাবস্থায় যেন আমার আমলনামা মহান আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়।’
সোমবার রোজা রাখলে মহান আল্লাহ বান্দার সব অপকর্ম ক্ষমা করেন। এ বিষয়ে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখতেন। একদিন তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে, উত্তরে তিনি বললেন, আল্লাহ সোম ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন প্রত্যেক মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তাদের ছেড়ে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (ইবনে মাজাহ শরিফ)।
প্রিয় পাঠক, রবিউল আউয়াল মাসের সোমবার প্রিয় নবীর শুভ আগমন দিন। আসুন সোমবারে রোজা রাখার নিয়ত করে অভ্যাসে পরিণত করি। কেননা রোজা আল্লাহর প্রিয় ইবাদত। রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজ হাতে দেবেন। তাই সোমবার রোজা পালনের মাধ্যমে প্রিয় নবীর প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি পাবে। প্রিয় নবীকে ভালোবাসলে আল্লাহতায়ালা খুশি হবেন। সবার ওপরে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর ভালোবাসা।
লেখক : ইসলামিক গবেষক