সোমবার, ২০ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা
ইন্টারভিউ : কুমার বিশ্বজিৎ

আইয়ুব বাচ্চু-সুবীরদার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়

আইয়ুব বাচ্চু-সুবীরদার শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়
চিরসবুজ গায়ক কুমার বিশ্বজিৎ। গানে গানে পার করেছেন অনেক বসন্ত। উৎসবের একটি গানের ভিডিওর শুটিংয়ে সম্প্রতি তিনি অংশ নিয়েছেন, যেখানে বাঙালি সাজে তাকে দেখা যায়। এই গান ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল

 

কেমন আছেন? লুঙ্গি, গেঞ্জি আর শার্টের ওপর কোর্ট কম্বিনেশনে এ মডার্ন বাঙালি সাজের রহস্য কী?

জি ভালো আছি। আর এই সাজ?...হাহাহা! এটি এই গানের সঙ্গে গল্পের প্রয়োজনে। যাকে বলে মডার্ন বাঙালি সাজ!

 

নতুন এই লুকে কিন্তু ভালোই লাগছে! গানটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই...

একবার আমি সিলেটের সুনামগঞ্জে একটি শোতে গিয়েছিলাম। তখন জবান আলী আমাকে একটি গান শোনালেন। আরও অনেকগুলো গান শোনালেও এই গানটি কেন জানি মনে ধরল। উনি আবার কিছুটা সুরেও  গেয়ে শোনালেন। আমি অবশ্য এই গানটির সুরে কিছুটা ইমপ্রোভাইজ করেছি। তার লেখার মধ্যে চমক আছে। যেমন- ‘আমার মাথাটা ঘুরায়, আমার কলিজা কামরায়। বুঝি বাঁচা ভীষণ দায়, রস কইয়া বিষ খাওয়াইলো প্রাণ বন্ধুয়ায়।’ অন্তরার কথাগুলো আরও মজার! বিচ্ছেদের ব্যাপার আছে, আবার ফানও আছে।

 

যে ধরনের গান করেন সে রকমই মনে হচ্ছে...

হ্যাঁ, আমার ট্র্যাকেরই। একটু ইমপ্রোভাইজ করা হয়েছে শুধু কম্পোজিশনে, যেটি আমার করা। কিশোরও কিছুটা হেল্প করেছে।

 

দৃশ্যায়নের আয়োজন তো অন্যরকম চোখে পড়ল! আপনার আগের গান থেকে একটু ব্যতিক্রম নয় কি?

দৃশ্যায়নের বিষয়টা একটু অন্যভাবে চিন্তা করা হয়েছে। এটার মধ্যে বাঙালিত্ব ব্যাপারটা আছে। এটার মধ্যে অনেক বেশি রসবোধ রয়েছে। ড্রেসআপের ব্যাপারটাও একটু অন্যরকম। লুঙ্গি-জামার ওপর দিয়ে কোট পরেছি! একটু মিক্সড বা ফিউশন টাইপের। নির্মাতা চন্দন যে পরিকল্পনা করেছিল সেটি আগেই রাফ দেখিয়েছিল। সঙ্গে কোরিওগ্রাফার নিডো-মিনাক্ষীও ভালো সাপোর্ট দিয়েছেন। আমার পছন্দ হয়েছে কনসেপ্টটা।

 

গানটি কোন ব্যানারে তৈরি হয়েছে। কবে প্রকাশ পাবে?

গানটি একটি নতুন ব্যানারে তৈরি। গানছবি এন্টারটেইনমেন্ট। এই ব্যানারে আরও একটি গান যাচ্ছে। ক্রেজি লাভার নাটকে একটি গান করেছিলাম। সঙ্গে ‘তুমি পাগল বলো আর নিঠুর বলো’ গানকে মিক্সড করে গানটি করেছি। কিশোর খুব সুন্দর করে দুটো গানকে একসঙ্গে করেছে। আমার কাছে ভালো লেগেছে। গানটি সবার কাছে একটু অন্যরকম লাগবে। এ মাসের শেষের দিকে এই দুটি গানই গানছবির ব্যানারে বের হচ্ছে।

 

শুনেছি বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষে আরেকটি গান তৈরি করেছেন...

হুমম... এই গানটি তৈরি করে রেখেছি। গাজী ভাইয়ের লেখা এটি। বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে গানটি প্রকাশ করা হবে। একটি ভিডিও হবে। এটি নিয়ে একটি বিশাল পরিকল্পনা আছে। গ্রে সহযোগিতা করছে। গানটির বিশেষত্ব হচ্ছে-আমরা তিন প্রজন্ম গানটি করেছি-গাজী ভাইয়ের লেখা, আমার গাওয়া, মানাম আহমেদের কম্পোজিশন আর কিশোরের সুর। গানটির কথা চমৎকার! ‘হে বন্ধু বঙ্গবন্ধু, তোমার কালো ফ্রেমের চশমাটা আমায় দাও। আমি চোখে দিয়ে দেখব, তুমি কেমন করে দেশটাকে এত ভালোবাসো।’ এই গানটি নিয়ে কিন্তু প্রধানমন্ত্রীও অবগত আছেন।

 

এটি তাহলে বলা যায় আপনার একটি স্বপ্নের প্রজেক্ট...

হ্যাঁ, স্বপ্নের প্রজেক্ট তো বলাই যায়! কারণ যুদ্ধের সময় আমি শরণার্থী শিবিরে ছিলাম। যুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধুর সেই ডাক আমাকেও আন্দোলিত করেছিল। যদিও আমি অনেক ছোট ছিলাম, যুদ্ধে যাওয়ার বয়স ছিল না। তবু যুদ্ধ কী জিনিস সেটা অনুভব করেছি। আমি যুদ্ধের সময় শরণার্থী শিবির ফেনী ৭ নম্বর বর্ডারে ছিলাম। আমি চাই, এই গানটির মাধ্যমে মহান মানুষটির প্রতি কিছু ঋণ শোধ করতে।

 

নতুন প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে কী কী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন?

আমি তো বরাবরই নতুন প্রজন্মের পাশে আছি। এই যে ক্লোজআপ ওয়ান কনসেপ্ট কিন্তু আমার। সেরা কণ্ঠ, গানরাজ সাকসেসফুল করার পেছনেও কিন্তু আমি ছিলাম। নতুন প্রজন্মকে নিয়ে সামনে আরও কিছু প্ল্যান আছে।

 

একের পর এক কিংবদন্তি শিল্পীরা চলে যাচ্ছেন। এই শূন্যতা কেমন অনুভব করেন?

এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়। আইয়ুব বাচ্চু, সুবীরদাসহ একে একে চলে যাচ্ছেন সবাই। তারা চলে যাচ্ছেন আর সংগীত জগতে শূন্যতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই ভ্যাক্যুয়াম তখনই পূরণ হবে যখন আমরা নতুন প্রজন্মকে ঠিকঠাক তৈরি করতে পারব।

সর্বশেষ খবর