‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ খ্যাত সংগীতশিল্পী কামরুজ্জামান রাব্বি। দোতারা বাজিয়ে লোকগান গেয়ে এ শিল্পী খুব অল্প সময়েই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। ‘আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’ গানটি দিয়ে শ্রোতামহলে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়ার পর ভক্তদের উপহার দিচ্ছেন নতুন নতুন গান। পাশাপাশি করছেন নিয়মিত উপস্থাপনা ও অভিনয়। তিনি সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বিনোদন প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছেন-
জন্মদিনটা চলে গেল, কেমন ছিল দিনটি?
প্রতিবারের মতো একইভাবে গেল এ বছরের জন্মদিনটাও। ৭ তারিখে ছিল জন্মদিন। জন্মদিন তো আনন্দের দিন। সেভাবেই কেটেছে। শুভাকাক্সক্ষীদের ফোন, মেসেজ, মেসেঞ্জারে উয়িস, ফেসবুকে পোস্ট-সবমিলিয়ে অন্যরকম একটা দিন ছিল। ভালোই কেটেছে।
নতুন গানের কাজ ধরেছেন?
এখন মূলত আমি লোকগানের সংগ্রহের কাজ করছি। ভাটি অঞ্চলের, সুনামগঞ্জ, সিলেট বা ময়মনসিংহের অনেক গানই শ্রোতাদের সামনে আসেনি। শ্রোতারা শুনেনি কখনো। কারণ কেউ এসব নিয়ে কাজই করেনি। তাই আমি উদ্যোগ নিয়েছি, ভাটি অঞ্চলে গিয়ে সেসব গান সংগ্রহ করে গানগুলো শ্রোতাদের উপহার দেওয়ার। অন্যদিকে সাধক কারি আমীর উদ্দিন তাঁর গানের জন্য জনপ্রিয়। তবে তাঁর অনেক গান অনেকে ভুল সুরে গায়। তাই তাঁর কিছু গান সঠিক করে গাওয়ার চেষ্টা করছি। তিনি লন্ডনে থাকেন। ২০১৮ এর পর থেকে তিনি মাঝে মাঝে এদেশে আসাযাওয়ার মধ্যে আছেন। আর আগেও যেমন নতুন লেখা, নতুন সুর করা গান করতাম, এখনো তাই করছি। ‘কৃষ্ণসুন্দরী’ নামে একটি নতুন গান করেছি, সামনেই আসবে।
গানের পাশাপাশি এখন তো নিয়মিত অভিনয়ও করছেন...
হ্যাঁ। বেশ কিছু করেছি, সামনে আরও কিছু করছি। এমনকি এই জন্মদিনেও শুটিং করেছি। তাইফুর জাহান আশিকের ‘মাথাগরম ফ্যামিলী’ ধারাবাহিকে অভিনয় করেছি, যেটি বাংলাভিশনে প্রচার হচ্ছে। এ ছাড়াও এনটিভির ‘ফাউল জামাই’ করেছি। বাংলাভিশনে প্রচার হয়েছে ‘বাউকুমটা বাতাস’ ও শামস করিমের ‘বৌ দৌড়’। সামনে আরও একটি ধারাবাহিকে কাজের কথা চলছে। তবে এখন ডেট মেলাতে পারিনি।
গানের মানুষ, অভিনয়ে কেন এলেন?
ডিরেক্টর অপূর্বর উৎসাহে এ জগতে আসা। তিনি সবসময় উৎসাহ দিতেন। বলতেন, আপনি গান-উপস্থাপনা ভালো করেন, অভিনয়ও ভালো করতে পারবেন। সেই হিসেবে তিনি তাঁর তিনটি সিঙ্গেল নাটকে আমাকে কাস্ট করেন। এরপর শামস করিমের সঙ্গে করি ‘বৌ দৌড়’। তিনি অভিনয়ে ব্যাপক উৎসাহ দেন। তাঁর এই নাটকে মোশাররফ করিম ভাইয়ের সঙ্গে অভিনয় করি। মোশাররফ ভাই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করতেন। নানাভাবে উৎসাহ দিতেন। অন্যদিকে ‘বাউকুমটা বাতাস’ নাটকে জুঁই করিম ভাবির সঙ্গেও কাজ করি। মোটকথা, তাঁদের সবার উৎসাহে অভিনয়ে নিয়মিত হচ্ছি। আর আমি তো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গানে পিএইচডি করেছি। আর ইউডা তে লোক সংগীত ডিপার্টমেন্টের লেকচারার হিসেবে এখন আছি। মূলত গান নিয়ে পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, গানের সঙ্গে অভিনয়ও জড়িত। বলা যায়, পালাগানের মতো। তাই গানের সঙ্গে অভিনয়ের জ্ঞানটাও থাকা জরুরি। সবমিলিয়ে, অভিনয় প্রাকটিক্যালি করার সুযোগ পেয়েছি বলে আর হাতছাড়া করতে চাইনি। তাই গানের পাশাপাশি অভিনয় করছি। উপস্থাপনাও করছি।
সুফি গান নিয়ে উপস্থাপনা করছেন...
হ্যাঁ। এটি সুফি সংগীতের আসর। নাম ‘মরমিয়া’। ২৪-২৫ পর্ব নিয়মিত উপস্থাপনা করেছি। সামনেও আমার উপস্থাপনায় চলবে অনুষ্ঠানটি।
‘হান্ড্রেড পার্সেন্ট বেশি’র পর নতুন গানের প্লেব্যাকের খবর রয়েছে?
আসলে প্লেব্যাক বিষয়টা খুবই কঠিন। প্রত্যেক গায়কের জন্য এটি একটি স্বপ্নের মতো। একটি সিনেমায় তো সর্বোচ্চ ৪-৫টি গান থাকে। সেই গল্প অনুযায়ী ডিরেক্টর নির্বাচন করে থাকেন কোন কোন শিল্পীর কণ্ঠে ভয়েজ যাবে। সেই হিসাবে প্লেব্যাক তাঁদের ওপর নির্ভর করছে। আমারও করার ইচ্ছে, যদি মিলে যায়। দেখেন হান্ড্রেড পার্সেন্ট বেশি কিন্তু দর্শক পছন্দ করেছে। যদিও আমি লোকগানের শিল্পী কিন্তু এখানে ভিন্নভাবে ভয়েজ দেওয়ার চেষ্টা ছিল। এর আগেও ‘সাঁতাও’ সিনেমায় গান করেছিলাম, অভিনয়ও করেছিলাম। আহত ফুলের ডানা’ সিনেমাতেও গান করেছি। সামনে দেখা যাক।