শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : শরীফুল রাজ

চরিত্রের ও গল্পের ভিতরে ডুবে থাকতে চাই

র‌্যাম্প মডেল ও অভিনেতা শরীফুল রাজ। ২০১৬ সালে রেদওয়ান রনির ‘আইসক্রিম’ দিয়ে তার ঢালিউড যাত্রা শুরু। এরপর ছয় বছরের দীর্ঘ বিরতি। তবে এত দিনের বিরতির পর তিনি ‘পরাণ’ ও ‘হাওয়া’ দিয়ে মাত করেছেন বাংলা সিনেমার দর্শকদের। ২৮ অক্টোবর মুক্তি পাচ্ছে তার অভিনীত আরেকটি সিনেমা ‘দামাল’। তার সঙ্গে সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন-পান্থ আফজাল

চরিত্রের ও গল্পের ভিতরে ডুবে থাকতে চাই

‘আইসক্রিম’ করার ছয় বছর পর দুটি সিনেমা করলেন। দুটিই হিট! রহস্যটা কী?

হা হা হা... রহস্য কিছু নয়। আসলে ব্যাক টু ব্যাক সিনেমা এর আগে রিলিজ কখনো হয়নি। এই প্রথম হয়েছে। ছয় বছর আগে আইসক্রিম করেছিলাম। তারপর কিছুটা বিরতি ছিল। আমি খুবই অবাক হয়েছি, দুটি সিনেমায় এত রেসপন্স, এত ভালোবাসা, এত আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এটি আমার ক্ষেত্রে প্রথম। আমি পুরো বিষয়টি খুব ইনজয় করছি।

 

গল্প বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কোনটাকে প্রাধান্য দিয়েছেন?

সর্বদা আমি যেমন করে স্ক্রিপ্ট পছন্দ করি, গল্পের সঙ্গে থাকি বা নির্মাতাদের কাজের সঙ্গে থাকি, সেভাবেই কাজগুলো করেছিলাম। এ কথা সত্য যে, রাফি আমাকে একটি ভালো চরিত্রের জন্যই ডাকে। ‘পরাণ’ সিনেমাতেও সে আমাকে গুরুত্ব দিয়ে কাস্ট করেছিল। রোমান চরিত্রটি অনেক ইউনিক, অনেক কিছু করার স্পেস ছিল। কোনো বাধাধরা নিয়ম ছিল না। অন্যদিকে ‘হাওয়া’ সিনেমাটির ক্ষেত্রে অনেক বিষয় ছিল। ইব্রাহিম চরিত্রটি করা কঠিন ছিল। আমি চেষ্টা করেছি, নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমনের মনের মতো করে চরিত্রটি করতে। জানি না, পেরেছি কিনা। তবে দর্শক এ দুটি চরিত্র ভালোভাবেই নিয়েছে।

 

অনেক বছর পর বাংলা সিনেমায় দর্শক ফিরেছে...

‘পরাণ’ আর ‘হাওয়া’ যেভাবে দেখল বাংলা সিনেমার দর্শকরা! এত মানুষ যে বাংলা সিনেমার জন্য পাগল, তা ভাবিনি। সিনেমা দেখতে প্রেক্ষাগৃহে হুমড়ি খাওয়া সেই ভিড়! ‘পরাণ’-এর ইমপ্যাক্ট ‘হাওয়া’তে পড়েছে। বাকি সিনেমাগুলোতেও পড়বে আশা রাখছি।

 

রাজের এত প্রশংসা, এত আলোচনা, কেমন লাগছে?

আসলে কোনো কাজ করে আসার পর এত প্রশংসা, এত আলোচনা যখন মানুষ করে, তখন ভালোই লাগে। আমার কাছে ভালোই লাগছে। একটা সিনেমা করে আসার পর সেই সিনেমার চরিত্র নিয়ে, সিনেমা নিয়ে মানুষ কথা বলছে এত প্রশংসা করছে, সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হয়- যে চরিত্রটি করতে গিয়েছিলাম, সেই চরিত্রটি মনে হয় ঠিকঠাক করে আসতে পেরেছি। যার কারণে মানুষের এত ভালোবাসা, এত প্রশংসা। এই উদ্যাপনটা আমার নয়, আমার দর্শকদের, যারা আমাকে নিয়ে এত আলোচনা করছে, প্রশংসা করছে এই ক্রেডিটটা তাদেরই।

 

মিমের সঙ্গে আবারও জুটি হয়ে দামাল হয়ে আসছেন...

হুমম... রাফির আরেকটি সিনেমা ‘দামাল’। মিম ছাড়াও সিয়াম, শাহনাজ সুমী, ইন্তেখাব দিনার, সাঈদ বাবু, রাশেদ মামুন অপু, সুমিত সেনগুপ্ত, অথৈ, পূজা, বৃষ্টিসহ অনেক প্রিয়মুখ আছেন। ২৮ অক্টোবর মুক্তি পাবে সিনেমাটি।

 

এমন গল্পের সিনেমায় কাজ কি রাজের পালকে নতুন কিছু যোগ করবে?

সেটা হতে পারে। কারণ, ‘দামাল’ পিরিওডিক্যাল গল্পের একটি দুর্দান্ত সিনেমা। মুক্তিযুদ্ধের সময়কার স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গল্প। ওটার সঙ্গে চরিত্র হিসেবে থাকতে পেরে সৌভাগ্যবান মনে করছি নিজেকে। একটি সিনেমায় যে শ্রম দিতে হয়, চরিত্রের ও গল্পের ভিতরে যেভাবে ডুবে থাকতে হয় দামাল-এ তাই করতে হয়েছে। এ ছবির গল্পে যে ঐতিহাসিক ঘটনা তুলে ধরা হচ্ছে তা নিয়ে আগে কখনো কাজ হয়েছে বলে আমার জানা নেই। এমন একটি গল্পে কাজের সুযোগ পাওয়াটা আমার অভিনয় জীবনে সত্যিই নতুন কিছু যোগ করবে।

 

ব্যক্তিগত লাইফে আপনি কেমন?

ব্যক্তিগত লাইফে আমি রোমান কিংবা ইব্রাহিমের মতো নই। আমি খুবই লাজুক প্রকৃতির। খুবই অফট্র্যাকের একজন। শুধু একটুখানি দুরন্ত, চঞ্চল ও রোমান্টিক।

 

সম্প্রতি বাবা হয়েছেন। কেমন লাগছে?

কেমন আনন্দ লাগছে এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। যারা বাবা-মা হয়, কেবল তারাই এটা বুঝবে। বাবা-মা না হলে এই অনুভূতি উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। রাজ্য-এর জন্য সবার দোয়া চাই।

 

রাজ্য কার চেহারা পেয়েছে?

অর্ধেক আমার মতো, অর্ধেক পরীর মতো। আমরা আগে দুজন ছিলাম, এখন তিনজন। আমাদের সংসার বড় হয়ে গেল।

 

স্ত্রী পরীমণির সঙ্গে নিজের কাজ, সাফল্য নিয়ে কী আলাপ হয়?

পরী তো আসলে সবসময় এগুলো নিয়ে আলাপ করে বাসায় এলেই। আর সে চমৎকারভাবে আমাকে সাপোর্ট করে। সবার প্রতিক্রিয়া-আলোচনায়-প্রশংসা সবকিছু মিলে সে অনেক হ্যাপি।

 

স্কুল ফাঁকি দিয়ে কখনো সিনেমা দেখেছিলেন?

বহুবার। প্রায়ই স্কুল বা কলেজের প্যান্ট-শার্ট পরিষ্কার করতে গিয়ে পকেটে সিনেমার টিকিট পেত আম্মু। তবে সেভাবে কিছু বলত না। আমার আব্বু-আম্মুরও সিনেমা দেখার ঝোঁক ছিল।

 

দর্শকদের উদ্দেশে কিছু বলবেন?

আসলে আমার কাজগুলো যারা পছন্দ করেন, প্রশংসা করে লেখালেখি করেন, যারা আমার কাজ নিয়ে এত মাতামাতি করেন; আমার এই কাজের ক্রেডিটটা তাদেরই। আমাকে যারা মন ভরে ভালোবাসা দিলেন, জড়িয়ে ধরে ভালোবাসা দিলেন, আমি তাদের অনেক ভালোবাসি-অনেক ভালোবাসি। এই ভালোবাসার ঋণ তো আসলে শোধ হয় না, ভালোবাসাটা ভালোবাসা দিয়েই দিতে হয়।

সর্বশেষ খবর