শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার : অপর্ণা ঘোষ

ছবিটিতে কাজ করতেই জাপান থেকে ছুটে এসেছি

ছবিটিতে কাজ করতেই জাপান থেকে ছুটে এসেছি

আজ মুক্তি পাচ্ছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত ‘মেড ইন চিটাগাং’ ছবিটি। এতে অভিনয় করেছেন চট্টগ্রামের মেয়ে অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। তার কথায় ছবিটিতে চট্টগ্রামের কালচার তুলে ধরা হয়েছে এবং চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এতে অভিনয় করাটা তার কাছে দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে। অপর্ণা ঘোষের বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত হলোমেড ইন চিটাগাং, অনুভূতি কেমন?

আমি গর্ববোধ করছি চট্টগ্রামের ভাষায় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হওয়ায়। এমন একটি ছবি নির্মাণ হওয়ায় এবং এতে অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। অন্তত চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এ কাজটি করা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।

 

ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এক কথায় বলতে পারি দারুণ একটা কাজ হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে নিজের অঞ্চলের জন্য একটা দায়িত্ব পালন করছি। এ ছবির নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী সবাই একটি পরিবারের মতো মিলেমিশে মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছি। সব মিলিয়ে বলতে পারি, চট্টগ্রামকে দেশ-বিদেশে তুলে ধরার জন্য একটি সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র হয়েছে এটি। তাই চট্টগ্রামের মানুষ তাদের প্রাণের ছবি হিসেবে ‘মেড ইন চিটাগাং’-কে সাদরে ও মনেপ্রাণে গ্রহণ করবে।

 

ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি আর কোন বিষয়টি রয়েছে?

এ ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি চট্টগ্রামের কালচার যেমন- ভাষা, খাবার, আত্মীয়তাসহ সবদিক নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা যায়, চট্টগ্রামের একটি পরিপূর্ণ চিত্র ছবিটিতে দেখা যাবে।

 

ছবিটির দর্শক গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

ছবিটির সফলতার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ইতোমধ্যে ছবির একটি গান মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে আমার ফ্যানরা ফোন করে বলছে তারা টিকিট পাচ্ছে না। আজ চট্টগ্রামে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তির আগেই এ ছবির সব টিকিট বিক্রি হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের বাইরে ছবিটির সফলতা নিয়ে কতটা আশা করছেন?

আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও ছবিটি দর্শক সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ ছবির প্রকাশিত গানটি ইতোমধ্যে শুধু চট্টগ্রামে নয়, সারা দেশেই শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ছাড়া এই নামে এর আগে ২০১২ সালে একটি নাটক নির্মাণ করা হয়েছিল। নাটকটি নির্মাণের সময় যেহেতু এটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার তাই নির্মাতা রাফাত ভাই সর্ব গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে খুবই কনফিউজড ছিলেন। অন্যদিকে টিভি চ্যানেলগুলোও আঞ্চলিক ভাষার নাটক বলে এটি প্রচারে রাজি হয়নি। পরে গাজী টিভি নাটকটি প্রচার করে এবং যখন সব অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয় তখন নির্মাতার মধ্যে কনফিডেন্ট তৈরি হয়। সেই কনফিডেন্ট থেকেই এ ছবিটি নির্মাণ হয়েছে। নাটকের সাফল্যে পার্থ দা (পার্থ বড়ুয়া) প্রথম উদ্যোগ নেন এ ছবিটি নির্মাণের। তাই আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও সব অঞ্চলে ছবিটি দর্শকপ্রিয়তা পাবে।

 

ছবিটিতে অভিনয়ের বিষয়ে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের কথা শুনি-

যেহেতু নিজের অঞ্চলের ভাষায় এটি নির্মাণ হয়েছে তাই স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ ছিল শতভাগ। আমি জাপানে ছিলাম, ওখানে বলতে গেলে পরিবার নিয়ে আমি থিতু হয়েছি। পার্থ দা আমাকে ছবিটি করার কথা বললে আমি চলে আসি। এর আগে নাটকটি প্রচারের পর দাদা আমাকে বলে রেখেছিল আমি যেন চট্টগ্রামের ভাষায় আর কোনো নাটকে অভিনয় না করি। কারণ এই আঞ্চলিক ভাষার ছবিটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা তার রয়েছে। তাই অনেক প্রস্তাব পাওয়ার পরেও আর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কাজ করিনি।

 

ছবিটি নিয়ে দর্শকদের কী বলবেন?

ছবিটি দেখার ব্যাপারে চট্টগ্রামের দর্শকদের বলার কিছু নেই। কারণ তারা তাদের প্রাণের ছবিটি দেখতে খুবই আগ্রহী হয়ে আছে। চট্টগ্রামের বাইরের দর্শকদের বলব, সিনেমা হলে এসে ছবিটি দেখুন, তাহলে চট্টগ্রামের পিউর কালচার সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং উপভোগ করবেন। কারণ এটি একটি পরিপূর্ণ বিনোদনমূলক উপভোগ্য ছবি।

 

আগামীতে আর কী কাজ নিয়ে আসছেন?

না, এখন আর কোনো কাজ করছি না। কারণ আমি তো পরিবার নিয়ে জাপান থাকি। এ ছবিটিতে কাজ করতেই শুধু জাপান থেকে ছুটে এসেছি। শিগগিরই আবার ফিরে যাব।

 

অভিনয় নিয়ে কিছু বলুন-

ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছি থিয়েটারের পারিবারিক আবহে। আমার বাবা অলোক ঘোষ চট্টগ্রামের থিয়েটার অঙ্গনে খুবই পরিচিত মুখ। আমার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রামের জিইসির মোড় এলাকায় আমার বাসা। ২০০৬ সালে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা চারের একজন হয়েছিলাম। ২০০৩ সালে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করি। এস এম সোলায়মানের ‘কোর্ট মার্শাল’ ছিল আমার অভিনীত প্রথম নাটক। তারপর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করি। ২০১৪ সালে অভিনয় করি জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’-এ। অভিনয় করি প্রসূন রহমান পরিচালিত ‘সুতপার ঠিকানা’ চলচ্চিত্রে। এরপর ২০১৩ সালে ‘মৃত্তিকা মায়া’ এবং ২০২০ সালে ‘গণ্ডি’ চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করি। এ ছাড়া থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, দর্পণ বিসর্জন, ভুবন মাঝিসহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি। অভিনয় আমার কাছে পেশার চেয়েও বেশি নেশা বলতে পারি।  তাই আমার রক্তে মিশে থাকা অভিনয়কে কখনই ভুলতে পারব না। সময় সুযোগ পেলেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব।

সাক্ষাৎকার : অপর্ণা ঘোষ

= ছবিটিতে কাজ করতেই জাপান থেকে ছুটে এসেছি

আজ মুক্তি পাচ্ছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত ‘মেড ইন চিটাগাং’ ছবিটি। এতে অভিনয় করেছেন চট্টগ্রামের মেয়ে অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। তার কথায় ছবিটিতে চট্টগ্রামের কালচার তুলে ধরা হয়েছে এবং চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এতে অভিনয় করাটা তার কাছে দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে। অপর্ণা ঘোষের বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত হলোমেড ইন চিটাগাং, অনুভূতি কেমন?

আমি গর্ববোধ করছি চট্টগ্রামের ভাষায় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হওয়ায়। এমন একটি ছবি নির্মাণ হওয়ায় এবং এতে অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। অন্তত চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এ কাজটি করা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।

 

ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এক কথায় বলতে পারি দারুণ একটা কাজ হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে নিজের অঞ্চলের জন্য একটা দায়িত্ব পালন করছি। এ ছবির নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী সবাই একটি পরিবারের মতো মিলেমিশে মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছি। সব মিলিয়ে বলতে পারি, চট্টগ্রামকে দেশ-বিদেশে তুলে ধরার জন্য একটি সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র হয়েছে এটি। তাই চট্টগ্রামের মানুষ তাদের প্রাণের ছবি হিসেবে ‘মেড ইন চিটাগাং’-কে সাদরে ও মনেপ্রাণে গ্রহণ করবে।

 

ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি আর কোন বিষয়টি রয়েছে?

এ ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি চট্টগ্রামের কালচার যেমন- ভাষা, খাবার, আত্মীয়তাসহ সবদিক নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা যায়, চট্টগ্রামের একটি পরিপূর্ণ চিত্র ছবিটিতে দেখা যাবে।

 

ছবিটির দর্শক গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

ছবিটির সফলতার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ইতোমধ্যে ছবির একটি গান মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে আমার ফ্যানরা ফোন করে বলছে তারা টিকিট পাচ্ছে না। আজ চট্টগ্রামে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তির আগেই এ ছবির সব টিকিট বিক্রি হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের বাইরে ছবিটির সফলতা নিয়ে কতটা আশা করছেন?

আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও ছবিটি দর্শক সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ ছবির প্রকাশিত গানটি ইতোমধ্যে শুধু চট্টগ্রামে নয়, সারা দেশেই শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ছাড়া এই নামে এর আগে ২০১২ সালে একটি নাটক নির্মাণ করা হয়েছিল। নাটকটি নির্মাণের সময় যেহেতু এটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার তাই নির্মাতা রাফাত ভাই সর্ব গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে খুবই কনফিউজড ছিলেন। অন্যদিকে টিভি চ্যানেলগুলোও আঞ্চলিক ভাষার নাটক বলে এটি প্রচারে রাজি হয়নি। পরে গাজী টিভি নাটকটি প্রচার করে এবং যখন সব অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয় তখন নির্মাতার মধ্যে কনফিডেন্ট তৈরি হয়। সেই কনফিডেন্ট থেকেই এ ছবিটি নির্মাণ হয়েছে। নাটকের সাফল্যে পার্থ দা (পার্থ বড়ুয়া) প্রথম উদ্যোগ নেন এ ছবিটি নির্মাণের। তাই আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও সব অঞ্চলে ছবিটি দর্শকপ্রিয়তা পাবে।

 

ছবিটিতে অভিনয়ের বিষয়ে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের কথা শুনি-

যেহেতু নিজের অঞ্চলের ভাষায় এটি নির্মাণ হয়েছে তাই স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ ছিল শতভাগ। আমি জাপানে ছিলাম, ওখানে বলতে গেলে পরিবার নিয়ে আমি থিতু হয়েছি। পার্থ দা আমাকে ছবিটি করার কথা বললে আমি চলে আসি। এর আগে নাটকটি প্রচারের পর দাদা আমাকে বলে রেখেছিল আমি যেন চট্টগ্রামের ভাষায় আর কোনো নাটকে অভিনয় না করি। কারণ এই আঞ্চলিক ভাষার ছবিটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা তার রয়েছে। তাই অনেক প্রস্তাব পাওয়ার পরেও আর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কাজ করিনি।

 

ছবিটি নিয়ে দর্শকদের কী বলবেন?

ছবিটি দেখার ব্যাপারে চট্টগ্রামের দর্শকদের বলার কিছু নেই। কারণ তারা তাদের প্রাণের ছবিটি দেখতে খুবই আগ্রহী হয়ে আছে। চট্টগ্রামের বাইরের দর্শকদের বলব, সিনেমা হলে এসে ছবিটি দেখুন, তাহলে চট্টগ্রামের পিউর কালচার সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং উপভোগ করবেন। কারণ এটি একটি পরিপূর্ণ বিনোদনমূলক উপভোগ্য ছবি।

 

আগামীতে আর কী কাজ নিয়ে আসছেন?

না, এখন আর কোনো কাজ করছি না। কারণ আমি তো পরিবার নিয়ে জাপান থাকি। এ ছবিটিতে কাজ করতেই শুধু জাপান থেকে ছুটে এসেছি। শিগগিরই আবার ফিরে যাব।

 

অভিনয় নিয়ে কিছু বলুন-

ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছি থিয়েটারের পারিবারিক আবহে। আমার বাবা অলোক ঘোষ চট্টগ্রামের থিয়েটার অঙ্গনে খুবই পরিচিত মুখ। আমার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রামের জিইসির মোড় এলাকায় আমার বাসা। ২০০৬ সালে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা চারের একজন হয়েছিলাম। ২০০৩ সালে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করি। এস এম সোলায়মানের ‘কোর্ট মার্শাল’ ছিল আমার অভিনীত প্রথম নাটক। তারপর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করি। ২০১৪ সালে অভিনয় করি জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’-এ। অভিনয় করি প্রসূন রহমান পরিচালিত ‘সুতপার ঠিকানা’ চলচ্চিত্রে। এরপর ২০১৩ সালে ‘মৃত্তিকা মায়া’ এবং ২০২০ সালে ‘গণ্ডি’ চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করি। এ ছাড়া থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, দর্পণ বিসর্জন, ভুবন মাঝিসহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি। অভিনয় আমার কাছে পেশার চেয়েও বেশি নেশা বলতে পারি।  তাই আমার রক্তে মিশে থাকা অভিনয়কে কখনই ভুলতে পারব না। সময় সুযোগ পেলেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব।

সাক্ষাৎকার : অপর্ণা ঘোষ

= ছবিটিতে কাজ করতেই জাপান থেকে ছুটে এসেছি

আজ মুক্তি পাচ্ছে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত ‘মেড ইন চিটাগাং’ ছবিটি। এতে অভিনয় করেছেন চট্টগ্রামের মেয়ে অভিনেত্রী অপর্ণা ঘোষ। তার কথায় ছবিটিতে চট্টগ্রামের কালচার তুলে ধরা হয়েছে এবং চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এতে অভিনয় করাটা তার কাছে দায়িত্ব বলে মনে হয়েছে। অপর্ণা ঘোষের বলা কথা তুলে ধরেছেন- আলাউদ্দীন মাজিদ

 

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় নির্মিত হলোমেড ইন চিটাগাং, অনুভূতি কেমন?

আমি গর্ববোধ করছি চট্টগ্রামের ভাষায় চলচ্চিত্রটি নির্মিত হওয়ায়। এমন একটি ছবি নির্মাণ হওয়ায় এবং এতে অভিনয় করতে পারায় নিজেকে ধন্য মনে করছি। অন্তত চট্টগ্রামের মেয়ে হিসেবে এ কাজটি করা আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।

 

ছবিটিতে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?

এক কথায় বলতে পারি দারুণ একটা কাজ হয়েছে। কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে নিজের অঞ্চলের জন্য একটা দায়িত্ব পালন করছি। এ ছবির নির্মাতা, শিল্পী, কলাকুশলী সবাই একটি পরিবারের মতো মিলেমিশে মনোযোগ দিয়ে কাজ করেছি। সব মিলিয়ে বলতে পারি, চট্টগ্রামকে দেশ-বিদেশে তুলে ধরার জন্য একটি সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র হয়েছে এটি। তাই চট্টগ্রামের মানুষ তাদের প্রাণের ছবি হিসেবে ‘মেড ইন চিটাগাং’-কে সাদরে ও মনেপ্রাণে গ্রহণ করবে।

 

ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি আর কোন বিষয়টি রয়েছে?

এ ছবিতে বিনোদনের পাশাপাশি চট্টগ্রামের কালচার যেমন- ভাষা, খাবার, আত্মীয়তাসহ সবদিক নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বলা যায়, চট্টগ্রামের একটি পরিপূর্ণ চিত্র ছবিটিতে দেখা যাবে।

 

ছবিটির দর্শক গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?

ছবিটির সফলতার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। কারণ ইতোমধ্যে ছবির একটি গান মানুষের মুখে মুখে ফিরছে। বিশেষ করে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চট্টগ্রাম থেকে আমার ফ্যানরা ফোন করে বলছে তারা টিকিট পাচ্ছে না। আজ চট্টগ্রামে ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। মুক্তির আগেই এ ছবির সব টিকিট বিক্রি হয়েছে।

 

চট্টগ্রামের বাইরে ছবিটির সফলতা নিয়ে কতটা আশা করছেন?

আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও ছবিটি দর্শক সাদরে গ্রহণ করবে। কারণ ছবির প্রকাশিত গানটি ইতোমধ্যে শুধু চট্টগ্রামে নয়, সারা দেশেই শ্রোতাপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ছাড়া এই নামে এর আগে ২০১২ সালে একটি নাটক নির্মাণ করা হয়েছিল। নাটকটি নির্মাণের সময় যেহেতু এটি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার তাই নির্মাতা রাফাত ভাই সর্ব গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে খুবই কনফিউজড ছিলেন। অন্যদিকে টিভি চ্যানেলগুলোও আঞ্চলিক ভাষার নাটক বলে এটি প্রচারে রাজি হয়নি। পরে গাজী টিভি নাটকটি প্রচার করে এবং যখন সব অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি অসম্ভব জনপ্রিয় হয় তখন নির্মাতার মধ্যে কনফিডেন্ট তৈরি হয়। সেই কনফিডেন্ট থেকেই এ ছবিটি নির্মাণ হয়েছে। নাটকের সাফল্যে পার্থ দা (পার্থ বড়ুয়া) প্রথম উদ্যোগ নেন এ ছবিটি নির্মাণের। তাই আমার বিশ্বাস, চট্টগ্রামের বাইরেও সব অঞ্চলে ছবিটি দর্শকপ্রিয়তা পাবে।

 

ছবিটিতে অভিনয়ের বিষয়ে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের কথা শুনি-

যেহেতু নিজের অঞ্চলের ভাষায় এটি নির্মাণ হয়েছে তাই স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ ছিল শতভাগ। আমি জাপানে ছিলাম, ওখানে বলতে গেলে পরিবার নিয়ে আমি থিতু হয়েছি। পার্থ দা আমাকে ছবিটি করার কথা বললে আমি চলে আসি। এর আগে নাটকটি প্রচারের পর দাদা আমাকে বলে রেখেছিল আমি যেন চট্টগ্রামের ভাষায় আর কোনো নাটকে অভিনয় না করি। কারণ এই আঞ্চলিক ভাষার ছবিটি নির্মাণ করার পরিকল্পনা তার রয়েছে। তাই অনেক প্রস্তাব পাওয়ার পরেও আর চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কাজ করিনি।

 

ছবিটি নিয়ে দর্শকদের কী বলবেন?

ছবিটি দেখার ব্যাপারে চট্টগ্রামের দর্শকদের বলার কিছু নেই। কারণ তারা তাদের প্রাণের ছবিটি দেখতে খুবই আগ্রহী হয়ে আছে। চট্টগ্রামের বাইরের দর্শকদের বলব, সিনেমা হলে এসে ছবিটি দেখুন, তাহলে চট্টগ্রামের পিউর কালচার সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং উপভোগ করবেন। কারণ এটি একটি পরিপূর্ণ বিনোদনমূলক উপভোগ্য ছবি।

 

আগামীতে আর কী কাজ নিয়ে আসছেন?

না, এখন আর কোনো কাজ করছি না। কারণ আমি তো পরিবার নিয়ে জাপান থাকি। এ ছবিটিতে কাজ করতেই শুধু জাপান থেকে ছুটে এসেছি। শিগগিরই আবার ফিরে যাব।

 

অভিনয় নিয়ে কিছু বলুন-

ছোটবেলা থেকেই বেড়ে উঠেছি থিয়েটারের পারিবারিক আবহে। আমার বাবা অলোক ঘোষ চট্টগ্রামের থিয়েটার অঙ্গনে খুবই পরিচিত মুখ। আমার বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম শহরে। চট্টগ্রামের জিইসির মোড় এলাকায় আমার বাসা। ২০০৬ সালে লাক্স সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সেরা চারের একজন হয়েছিলাম। ২০০৩ সালে প্রথম মঞ্চে অভিনয় করি। এস এম সোলায়মানের ‘কোর্ট মার্শাল’ ছিল আমার অভিনীত প্রথম নাটক। তারপর চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসে কিছু টিভি নাটকে অভিনয় করি। ২০১৪ সালে অভিনয় করি জাহিদুর রহিম অঞ্জন পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র ‘মেঘমল্লার’-এ। অভিনয় করি প্রসূন রহমান পরিচালিত ‘সুতপার ঠিকানা’ চলচ্চিত্রে। এরপর ২০১৩ সালে ‘মৃত্তিকা মায়া’ এবং ২০২০ সালে ‘গণ্ডি’ চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব চরিত্রের অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করি। এ ছাড়া থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার, দর্পণ বিসর্জন, ভুবন মাঝিসহ আরও কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করেছি। অভিনয় আমার কাছে পেশার চেয়েও বেশি নেশা বলতে পারি।  তাই আমার রক্তে মিশে থাকা অভিনয়কে কখনই ভুলতে পারব না। সময় সুযোগ পেলেই ক্যামেরার সামনে দাঁড়াব।

সর্বশেষ খবর