স্কুলের গন্ডি পার হওয়ার আগেই অনেকে নায়িকা হয়ে গেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে। পরে অবশ্য আবার পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন অনেকে। এমন বেশ কিছু নায়িকার মধ্যে কয়েকজনের কথা তুলে ধরেছেন - আলাউদ্দীন মাজিদ
শাবানা
ষাটের দশকে প্রখ্যাত চিত্রনির্মাতা আজিজুর রহমানের হাত ধরে এক্সট্রা হিসেবে চলচ্চিত্রে আসেন শাবানা। পারিবারিক কারণে শাবানার স্কুল জীবনের ইতি ঘটে মাত্র নয় বছর বয়সে। পড়তেন গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার একটি স্কুলে। পর্দায় অভিষেক ১৪ বছর বয়সে। ১৯৬৭ সালে ‘চকোরী’ চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে প্রধান নায়িকা হিসেবে তাঁর চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে। এরপর জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক হিসেবে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বড় পর্দায় সক্রিয় ছিলেন তিনি। শাবানা অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’।
ববিতা
ববিতা পড়াশোনা করেছেন যশোর দাউদ পাবলিক বিদ্যালয়ে। সেখানে অধ্যয়নকালে বড় বোন অভিনেত্রী সুচন্দার হাত ধরে চলচ্চিত্রে প্রবেশের সূত্রে পরিবারসহ চলে আসেন ঢাকায়। গেন্ডারিয়ায় শুরু হয় কৈশোরের বাকি সময়। ১৯৬৭ সালে জহির রায়হানের ‘সংসার’ চলচ্চিত্রে নায়িকার ছোট বোনের চরিত্রে অভিনয় করেন এবং ১৯৬৯ সালে ‘শেষ পর্যন্ত’ চলচ্চিত্রে প্রথমবার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে কাজ করে গেছেন তিনি। ওই বছর মুক্তি পায় ববিতা অভিনীত শেষ ছবি ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’। চলচ্চিত্রে অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়লেও ববিতা ব্যক্তিগতভাবে নিজেকে শিক্ষিত করে তোলেন। দক্ষতা অর্জন করেন ইংরেজিসহ কয়েকটি বিদেশি ভাষায়। ১৯৭৪ সালে পশ্চিম বাংলার প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’ ছবিতে অভিনয় করে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেন।
শাবনূর
মাত্র ১৩ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে পা রাখেন শাবনূর। নায়িকা হিসেবে শুরুটা স্কুল পেরোনোর আগেই ছিল। শাবনূর অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র ‘চাঁদনী রাতে’। এই ছবির নির্মাতা প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক এহতেশামের হাত ধরেই বড় পর্দায় শাবনূরের অভিষেক। ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায় চলচ্চিত্রটি। অভিনয়ের পাশাপাশি শাবনূরের পড়াশোনা চালিয়ে যান এবং আইএ পাস করেন বলে জানা গেছে।
পূর্ণিমা
পূর্ণিমার চলচ্চিত্র জগতে পথচলা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ ছবির মাধ্যমে। তখন তিনি মাত্র নবম শ্রেণিতে পড়তেন। এরপর ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়িকা হিসেবে ২০১৭ সাল পর্যন্ত নিয়মিত অভিনয় করে যান। অভিনয় জগতে আসার পর পূর্ণিমার পড়াশোনা সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি।
পূজা চেরি
পূজা চেরি ২০১২ সালে মাত্র ১২ বছর বয়সে ‘ভালোবাসার রঙ’ চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০১৮ সালে ‘নূর জাহান’ ছবির মাধ্যমে বড় পর্দায় প্রধান ভূমিকায় আত্মপ্রকাশ করেন। এরপর এখন পর্যন্ত নিয়মিত অভিনয় করে যাচ্ছেন। পূজা চেরি যখন চলচ্চিত্রে আসেন তখন তিনি মগবাজার গার্লস হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী, পরে এই স্কুলেই মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন, বিজনেস স্টাডিজ গ্রুপ থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০২১-২২ সালে সিদ্ধেশ্বরী কলেজ থেকে আর্টস গ্রুপে উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা সম্পন্ন করেন।