সংগীতশিল্পী-সুরকার কাজী শুভ। ক্যারিয়ারে অনেক শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন। নিজস্ব গায়কি আর সুরেলা গানে মুগ্ধ করেছেন শ্রোতাদের। আধুনিক গানের পাশাপাশি ফোক গানেও রয়েছে তাঁর বিচরণ। শিল্পীর সঙ্গে কথা বলেছেন- পান্থ আফজাল
মে দিবস উপলক্ষে কি গান করেছেন?
হুমম...করেছি। গানের নাম ‘আমরা শ্রমিক’। কথা ও সুর আরিফ হোসেন বাবু এবং সংগীতায়োজনে আহমেদ সজীব। মে দিবস উপলক্ষে গানটা আমার অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে রিলিজ হবে। যেহেতু আমি একজন কণ্ঠশ্রমিক, তাই বন্ধু আরিফ হোসেন বাবুর সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেই, যে শ্রমিক ভাইবোনেরা আছেন দেশে-বিদেশে, তাদের নিয়ে একটা গান করা যায় কিনা। আশা করি, যাদের জন্য এ গান তৈরি করা তাদের কাছে গানটা ভালো লাগবে।
নতুন আর কী গান তৈরি রয়েছে?
আমার এবং সালমার একটা ডুয়েট গান আসবে শিগগিরই। গানের নাম ‘সানাই’। আরেকটি গান রেডি রয়েছে, শিরোনাম- ‘তোরে খুব ভালোবাসি’। এ দুটি গান ছাড়া আরও বেশকিছু গান সামনে রিলিজ হবে। আর আমার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বেশকিছু গান তৈরি করছি।
আপনার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল এখন কী অবস্থায়?
ভালোই বলা যায়। নিয়মিত গান প্রকাশ পাচ্ছে। তিন বছর হয়েছে। ৩০টির বেশি মৌলিক গান চ্যানেলে রয়েছে। মূলত আমি আমার ইউটিউব চ্যানেলের জন্যই এখন গান তৈরি করছি। অনেক প্রস্তুত রয়েছে।
শিল্পীর পরিচয় কি মৌলিক গানে নাকি কাভার-ফিউশনে?
অবশ্যই শিল্পীর পরিচয় মৌলিক গানে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের কী দিয়ে মনে রাখবে বা চিনবে? সেটা আমাদের রেখে যাওয়া মৌলিক গান দিয়ে। মৌলিক গান আমাদের পরিচয়। যদিও এখন অনেক শিল্পী মৌলিক গান গাইতে চায় না বা তাদের গাওয়ার মতো তেমন করে মৌলিক গান নেই ঝুলিতে। আমি মনে করি মৌলিক গান ছাড়া একজন শিল্পীর কোনো ভ্যালু নেই। যতই সে কাভার সং বা ফিউশন করুক না কেন! প্রত্যেক শিল্পী নিজের মৌলিক গানকেই প্রমোট করা উচিত।
কিন্তু স্টেজে তো হিন্দি, কাভারসহ বিভিন্ন গানের রিকুয়েস্ট করে দর্শকেরা...
আমি স্টেজে কিন্তু নিজের মৌলিক গানই করি। এটা তৈরি হয়ে গেছে। অর্গানাইজার বা অ্যারেঞ্জারা সেভাবেই আমাকে ভ্যালু দেয়। আমি স্টেজে আমার রেকর্ডেড গানই করি। তবে দর্শকের রিকুয়েস্টে বাউল ঘরানার গান, বাচ্চু ভাইয়ের গান মাঝে মধ্যে করি। এখন শিল্পীরা মৌলিক গান করার সাহস করে না স্টেজে; তারা অন্যের গান বা কাভার সং গাইতে পছন্দ করে বেশি। তবে এটা ঠিক নয়। মৌলিক গানকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত শিল্পীর।
মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির এখন কী অবস্থা?
খারাপ-ভালো সবকিছু নিয়েই আছে। আগে তো ক্যাসেট-সিডির পরীক্ষা দিতে হতো। ১০টি গানের মধ্যে যদি একটি গান ভালো হয়, তাহলেই পাস। আর এখন তো সহজ হয়ে গেছে। গান গেয়ে ফেসবুকে বা সামাজিকমাধ্যমে ছেড়ে দেয় ভিউ আর ভাইরাল হওয়ার আশায়। কেউ কেউ ভালো গানও করছে। তবে নেতিবাচক দিকই বেশি। এখন কিন্তু মানুষ আগের চেয়ে বেশি গান শোনে। তবে ভালো কিছু তাদের কাছে পৌঁছায় কম। আগে তো একটি অ্যালবাম বা ক্যাসেট এলে সেই গানগুলো পাড়ার মোড়ে মোড়ে বাজত। এখন তেমন অবস্থা কই? এখন তো প্ল্যাটফর্মে সিঙ্গেল ট্রাক রিলিজ দেয়, যেটা খুবই রিস্কি। মানুষ শুনবে কি শুনবে না তা নিয়ে শঙ্কায় থাকে শিল্পীরা।
শিল্পী হিসেবে প্রত্যাশা কী?
আমার মতো গান করতে চাই। শ্রোতারা যেভাবে আমার গানগুলো পছন্দ করে সেভাবেই কন্টিনিউ করতে চাই। সফট, মেলো আর বিচ্ছেদের গানই করব।