গতকালের শেষ বিকালটা ছিল চলচ্চিত্রকারদের আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার ক্ষণ। প্রতি বছর সরকার প্রদত্ত সম্মানে ভূষিত হতে এক জায়গায় জড়ো হন আবেগে উদ্বেলিত চলচ্চিত্রের মানুষেরা। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১২ প্রদানের জমকালো আয়োজন হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে। বিকাল ৩টার পর চলচ্চিত্রকারদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে একে একে সম্মাননা গ্রহণ করেন পুরস্কারপ্রাপ্তরা।
মোট ২৩টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়। এবার আজীবন সম্মাননা পান অভিনেতা খলিল। শ্রেষ্ঠ নির্মাতাসহ সর্বোচ্চ ৮টি পুরস্কার সাফল্যের ঝুলিতে পুরে নেয় প্রখ্যাত কলম জাদুকর প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদ নির্মিত 'ঘেটুপুত্র কমলা'। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র শাহনেওয়াজ কাকলীর 'উত্তরের সুর'। নায়ক শাকিব খান [খোদার পরে মা], নায়িকা জয়া আহসান [চোরাবালি], কাহিনীকার শাহনেওয়াজ কাকলী [উত্তরের সুর], চিত্রনাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ [ঘেটুপুত্র কমলা], সংলাপ রচয়িতা রেদোয়ান রনি [চোরাবালি], পাশর্্ব অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান [চোরাবালি], পার্শ্ব অভিনেত্রী তৃপ্তি গোমেজ [উত্তরের সুর], খলনায়ক শহীদুজ্জামান সেলিম [চোরাবালি], শিশুশিল্পী মামুন [ঘেটুপুত্র কমলা] ও মেঘলা [উত্তরের সুর], গায়ক পলাশ [খোদার পরে মা], গায়িকা রুনা লায়লা [তুমি আসবে বলে], সংগীত পরিচালক ইমন সাহা [ঘেটুপুত্র কমলা], গীতিকার মিল্টন খন্দকার [খোদার পরে মা], সুরকার ইমন সাহা [পিতা], চিত্রগ্রাহক মাহফুজুর রহমান খান [ঘেটুপুত্র কমলা], চিত্র সম্পাদক সলিমুল্লাহ সলি [ঘেটুপুত্র কমলা], রূপসজ্জাকর খলিলুর রহমান [ঘেটুপুত্র কমলা], পোশাক-পরিচ্ছদ ও অঙ্গসজ্জা এস এম মাঈনুদ্দিন ফুয়াদ [ঘেটুপুত্র কমলা],শব্দগ্রাহক রিপন নাগ [চোরাবালি], শিল্প নির্দেশক কলন্তর ও উত্তম গুহ [রাজা সূর্য খাঁ]। সম্মাননার ক্রেস্ট হাতে তুলে নিয়ে আনন্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সবাই। সবার কণ্ঠে অভিন্ন সুর, জাতীয় পুরস্কার পাওয়া মানে দায়িত্ব বহুগুণে বেড়ে যাওয়া।
প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে মেহের আফরোজ শাওন বলেন, এই পুরস্কার গ্রহণ আমার জন্য একদিকে যেমন খুশীর ঠিক তেমনি দুঃখেরও। কারণ হুমায়ূন আহমেদ স্বপ্ন দেখতেন নির্মাতা হিসেবে একদিন জাতীয় সম্মান পাবেন। তার সেই স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে কিন্তু তিনি নেই। আমি তার সব অধরা স্বপ্ন পূরণ করে যেতে চাই।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় বর্ণাঢ্য আয়োজনের। এই পর্বের উপস্থাপক ছিলেন মৌসুমী ও ফেরদৌস। তাদের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় চলচ্চিত্রের কালজয়ী গানের সঙ্গে মনোমুঙ্কর নৃত্য পরিবেশন করেন ওমর সানি, নিপুণ, ইমন, সিমলা, জায়েদ খান, নিরব, অমৃতা, পরী মনি, তমা মির্জা ও রোজ।
সংগীতের মূর্ছনায় মন কাড়েন সাবিনা ইয়াসমিন, সৈয়দ আবদুল হাদী, সুবীর নন্দী, এস আই টুটুল, হাবিব ও কণা। এ ছাড়া বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন বিটিভি ও শিল্পকলা একাডেমির নিয়মিত শিল্পীরা। অনুষ্ঠানটি বিটিভি সরাসরি সম্প্রচার করে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১২ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তথ্য মন্ত্রণালয়।
