আমার জীবনে কখনো বসন্ত, কখনো হেমন্ত। পড়ন্ত বিকেলের দেখা পেতে চাই না। দিন মাস বছর গড়ায় আপন নিয়মে। নিজের কাজের হিসাবটা বের করি জটিল অংক কষে। বেশি ঘাম ঝরাতে হয় না। ফলাফল আকাশছোঁয়া প্রাপ্তি। দূরদর্শী চিন্তা আর আত্দবিশ্বাসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সবই সম্ভব। বসন্তের আগমনে অপু বিশ্বাস এখন বেশ ফুরফুরে মেজাজে। কথা বলতে গিয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে না। সফলতা তার আকাশে জোড়া শালিক হয়ে উড়ে, চারপাশে গোলাপ বকুল রজনীগন্ধা ফোটে। খেলার মাঠে একজন দক্ষ খেলোয়াড়। এই পরিচয়টা অভিনয় জীবনের শুরু থেকেই অটুট রেখেছেন অপু। তাই তো দর্শকের হৃদয়ে নিজেকে সতেজ রেখেছেন এখনো। হুটহাট করে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আমার ধাতে নেই। ভেবেচিন্তে রসটা নিংড়ে নেই। অপুর কথার সঙ্গে কাজের মিল হান্ড্রেড পার্সেন্ট। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সময়টা নেহাৎ কম নয়। বাড়ন্ত এক কিশোরী সময় বলা যায়। ৪৫ ছবির যাত্রায় পাকা জহুরী হয়ে আছেন। সফলতা অনবরত প্রজাপতি হয়ে উড়ে চারপাশে। ক্যারিয়ারের শুরুটা ফসকে যেতে দেননি দক্ষ এই টেস্ট ম্যাচ খেলোয়াড়। 'কোটি টাকার কাবিন' থেকে 'হিরো দ্য সুপারস্টার'। সাফল্যকে সঙ্গী করে বাড়ন্ত বেলায় শুধুই লতিয়ে ওঠা। গল্প, চরিত্র আর কো-আর্টিস্টই শুধু নয়। নিজের বুনোসুন্দরী স্বাস্থ্যে শেওলা জমতে দেননি এতটুকু। একগাদা কাজ কখনো অর্জন হতে পারে না। এখনো বেছে বেছে বুঝে শুনে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াই। ইন্ডাস্ট্রিতে এমন চৌকস খেলোয়াড় খুব একটা চোখে পড়ে না। আবেগকে দুহাতে সরিয়ে যুক্তিতর্কের খোলসে জড়ান নিজেকে। সুফলটাও তাই হাতের কাছেই থাকে। যুক্তিতর্কে সিদ্ধহস্ত বলে ছোটবেলা নিজের এবং পরিবারের ইচ্ছে ছিল আইন পেশায় যুক্ত হবেন। অভিনয়ের প্রতি মনের টান নিয়ে আসে চলচ্চিত্রে। ২০০৬ থেকে ২০১২। খেলায় কিঞ্চিৎ বিরতি। নিজের অজান্তে স্বাস্থ্যের আড়ালে জমে উঠা শেওলা ঝরার সময়। ফুরফুরে হয়ে ২০১৪-তে অবিরাম ফেরা। মেপে মেপে পথ চলা। এখন চলার পথে আছে- যুগে যুগে আমি তোমারি, মনের মানুষ পাইলাম না, দুই পৃথিবী, রাজা হ্যান্ডসাম, জান তুমি প্রাণ তুমি, মাই ডার্লিং, লাগাম, প্রেমবাজ, রাজাবাবুসহ অনেক ছবি। অনেক অভিনেত্রী এসেছেন। জনপ্রিয়তার বাতাসে উপরে উঠতে উঠতে ধপাস করে পড়েছেন। কিন্তু অপু ভিন্ন। যখনই বুঝলেন পথ বেঁকে গেছে, তখনই ছোট্ট ডুব দিয়ে নতুন রূপে ফিরেছেন। এগিয়ে চলছেন দেখে-শুনে-বুঝে। তার পথচলা পিচ্ছিল নয়, মসৃণ...।