১৬ আগস্ট, ২০২২ ১৪:২২

‘শনিবার বিকেল’ মুক্তির দাবি কানাডা প্রবাসীদের

কানাডা প্রতিনিধি

‘শনিবার বিকেল’ মুক্তির দাবি কানাডা প্রবাসীদের

মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর পরিচালনায় নির্মিত বাংলা চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ সেন্সর বোর্ডে আটকে রাখার ঘটনায় কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা অবিলম্বে সিনেমাটি বাংলাদেশের উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলছেন, সিনেমাটি বাংলাদেশের আটকে রাখা হলেও বিভিন্ন আন্তর্জাতিদক উৎসবে প্রদর্শিত হচ্ছে, এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার টরন্টোর ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল অব সাউথ এশিয়ায় ছবিটি প্রদর্শিত হলে হলভর্তি দর্শক শ্রোতাদের প্রশংসা অর্জন করে। উৎসবে যোগ দিতে আসা সিনেমাটির নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর কাছে দর্শকরা জানতে চান, সিনেমাটি বাংলাদেশের আটকে রাখা হয়েছে কেন!

টরন্টোয় বসবাসরত সিনিয়র সাংবাদিক সৈকত রুশদী ‘শনিবার বিকেল’ চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের দেখানোর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ইসলাম ধর্মের নামে জঙ্গী হামলা, নিরীহ ও নিরাপরাধ মানুষ হত্যা ও নিপীড়ন এবং তার প্রতিবাদ তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশে বা অপর কোনো দেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের অজুহাতে এমন কোনো মর্মন্তুদ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার বার্তা দিতে পারে ‘শনিবার বিকেল।’ সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র না দিলে বাংলাদেশের মানুষ সেই বার্তা থেকে বঞ্চিত হবে। আর ভিন দেশের মানুষ মনে করবে,‘শনিবার বিকেল’ আটকে রেখে ধর্মনিরপেক্ষ দাবিদার বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ধর্মীয় উগ্রবাদের নামে জঙ্গীদের সহিংস হামলা ও মানুষ হত্যা করা যে উচিৎ নয় এই বার্তাটিকেই নিষিদ্ধ করতে চাইছে।’

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডীয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করীম বাবুল বলেন, মোস্তফা ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি টরন্টোর সাউথ এশিয়ান চলচ্চিত্র উৎসবে দেখেছি। সিনেমাটির বিষয় একটি বহুল আলোচিত এবং বাংলাদশে ঘটে যাওয়া একটি মর্মান্তিক ঘটনার সাথে কিছু মিল থাকলেও পরিচালক তাাঁর মত একটি কাহিনি চিত্র তৈরি করেছেন।

সেখানে নুতন গল্পকথা ও চরিত্রায়ন এবং সংলাপে পরিচালকের মতামত এসেছে। রয়েছে নিজস্ব নির্মাণ শৈলী, স্টেডিক্যামের ব্যাবহার। তিনি বলেন, একটি সিনেমার ভাল মন্দ খারাপ বিবেচনার ভার দর্শকদের হাতেই ছেড়ে দেয়া উচিৎ। আশাকরি ফিল্ম সেন্সর বোর্ড শনিববার বিকেল থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিবেন।

‘নতুনদেশ’-এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বলেন বাংলাদেশের ‘শনিবার বিকেল’ সেন্সর বোর্ডের লাল ফিতায় তিন বছরের বেশি সময় ধরে আটকে থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি প্রদর্শিত হচ্ছে, প্রশংসিত হচ্ছে। একই সঙ্গে তারা এও জেনে যাচ্ছে- বাংলাদেশে এই ছবিটি দেখাতে দেয়া হচ্ছে না। 

তিনি বলেন, কানাডার ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘শনিবারের বিকেল’ দেখার পর টরন্টোর দর্শকদের মনে যেমন প্রশ্ন জেগেছে-কেন এই সিনেমাটি আটকে রাখা হয়েছে, একই প্রশ্ন নিশ্চয়ই অন্যান্য দেশেও হয়েছে। আর এই প্রশ্ন তো বাংলাদেশ সম্পর্কে একটি বার্তাই দেয়, সেটি হচ্ছে- বাংলাদেশে শিল্প সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রিত, মত প্রকাশের স্বাধীনতা সেন্সরবোর্ডের লাল ফিতায় বন্দি করে রাখা যাচ্ছে।কোনো সরকারের জন্যই নিশ্চয় এটি স্বস্তিদায়ক নয়।’শনিবার বিকেল’কে মুক্ত করে দেয়া হোক, নির্বিঘ্নে প্রদর্শনের সুযোগ দেয়া হোক।

‘প্রবাস বাংলা ভয়েস’-এর প্রধান সম্পাদক আহসান রাজীব বুলবুল বলেন, সত্যিই দুঃখজনক। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তীকালে বিভিন্ন চলচ্চিত্র আজো মানুষের হৃদয়ে। ‘শনিবার বিকেল’ ছবিটি সেন্সর বোর্ড কর্তৃক আটকে রাখায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর