রবিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

টিকফার বৈঠকে যে ইস্যুতে কথা বলবে যুক্তরাষ্ট্র

আগামীকাল ঢাকায় অনুষ্ঠেয় টিকফার প্রথম বৈঠকে নয়টি ইস্যুতে কথা বলবে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে দেশটির বাণিজ্য দফতর ইউএসটিআর থেকে নির্বাচিত ইস্যুগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ইস্যুগুলোও জানানো হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, আলোচনায় বাংলাদেশ দুটি ইস্যুতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে। এর একটি হলো তৈরি পোশাকে বাজার সুবিধা চাওয়া এবং সেবা খাতে বাজার সুবিধা নিশ্চিত করা। এদিকে টিকফার প্রথম বৈঠকের আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনার নেতৃত্বে ইউএসটিআরের প্রতিনিধি দল আজ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করবে বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইস্যুগুলো : অগি্ননির্বাপণ, বৈদ্যুতিক এবং কারখানার নিরাপত্তাজনিত উপকরণ আমদানিতে শুল্ক হ্রাস করা; সরকারি দরপত্র সুনির্দিষ্ট করা; শ্রমিকদের বীমার আওতায় আনা; যুক্তরাষ্ট্রের ডায়াবেটিক ওষুধ রপ্তানি; দুই দেশের মুদ্রাসংক্রান্ত ইস্যু; যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানিকৃত পণ্যের মূল্য বিলম্বে পরিশোধ সমস্যা সমাধান করা; মেধাস্বত্ব অধিকার এবং আঞ্চলিক অর্থনৈতিক উন্নয়নসংক্রান্ত। বৈঠকের শুরুতেই জিএসপি পুনর্বহালে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া অ্যাকশন প্ল্যান বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে দেশটির বিনিয়োগ সম্পর্কিত দুটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হবে। এ ছাড়া দিনব্যাপী এ বৈঠকের দ্বিতীয়ার্ধে দুই দেশের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে যৌথভাবে দুটি কমিটিও গঠন করা হতে পারে। এর একটি হবে শ্রমসংক্রান্ত এবং অন্যটি নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত। রাজধানীর সোনরগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠেয় এ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাহবুব আহমেদ ও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ইউএসটিআরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মাইকেল ডিলানি নেতৃত্ব দেবেন। জানা গেছে, পোশাক খাতে বাজার সুবিধা চাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ মূলত শ্রমবাজার বিশেষ করে নারী শ্রমিকের ইস্যু সামনে নিয়ে আসবে। যুক্তরাষ্ট্র চায় নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, সে জন্য নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি বাজার সুবিধার কৌশলগত ইস্যু হিসেবে উপস্থাপন করা হবে। বলা হবে, গার্মেন্ট পণ্যের ওপর ভর করেই দেশের রপ্তানি বাণিজ্য টিকে আছে। মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় দারিদ্র্য বিমোচনের যে তাগাদা দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে গেলে পোশাক খাতে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা প্রয়োজন।

 

এতে করে সমাজে যেমন কর্মজীবী নারীর সংখ্যা বাড়বে, তেমনি পরিবারের আয় বৃদ্ধিতে নারী ভূমিকা রাখবে। পক্ষান্তরে তা দারিদ্র্য বিমোচনে ইতিবাচক প্রভাব রাখবে। এ ছাড়া অবকাঠামো উন্নয়নে রপ্তানি খাতের ভূমিকা বৈঠকে তুলে ধরা হবে। বিনিয়োগের জন্য দেশের অবকাঠামো উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্র পরামর্শ দিয়ে আসছে। শুল্ক সুবিধা দিলে দেশের রপ্তানি বাড়বে। এতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও বিনিয়োগ ত্বরান্বিত হবে বলে যুক্তি উপস্থাপন করা হবে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুত ৯৭ শতাংশ পণ্যে শুল্ক সুবিধায় বাংলাদেশের তৈরি পোশাক যাতে স্থান পায় সে ব্যাপারই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কেননা বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ের সিংহভাগই আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। তাই এ খাতটি ৯৭ শতাংশ পণ্য থেকে বাদ গেলে অন্যান্য পণ্যে জিএসপি সুবিধা পেলেও খুব একটা লাভবান হবে না বাংলাদেশ। স্বল্পোন্নত দেশ হলেও বর্তমানে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাক রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। অথচ আফ্রিকান সাব সাহারা অঞ্চলের দেশগুলো সেখানে শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর