শুক্রবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ০০:০০ টা

নেতৃত্বশূন্যতা কাটছে না সিলেট বিএনপিতে

নেতৃত্বশূন্যতা ঘিরে ধরেছে সিলেট বিএনপিকে। একসময় সিলেটে বিএনপির শক্তিশালী অবস্থান থাকলেও নেতৃত্বশূন্যতার ফলে এখন আর সেই অবস্থান নেই। যার ফলে গণমুখী আন্দোলন কিংবা সরকারবিরোধী আন্দোলন, কোনোটিতেই তেমন সফলতার মুখ দেখছে না সিলেট বিএনপি। অথচ একসময় খন্দকার আবদুল মালিক, সাইফুর রহমান, হারিছ চৌধুরী, ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বে সিলেটে বিএনপির অবস্থান ছিল শক্তিশালী। সরকার বা বিরোধী দল যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, সিলেটের রাজপথ ছিল বিএনপির দখলে। কিন্তু এখন রাজপথে কর্মী তো দূরের কথা নেতাদেরই খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের একজন ছিলেন খন্দকার আবদুল মালিক। সিলেট-১ আসনের (সদর-কোম্পানীগঞ্জ) দুবারের সংসদ সদস্যও ছিলেন তিনি। সিলেটে বিএনপির বীজ তার হাত ধরেই বপিত হয়েছিল। একপর্যায়ে খন্দকার মালিকের হাত থেকে সিলেট বিএনপির নেতৃত্ব চলে যায় সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম. সাইফুর রহমানের হাতে। সিলেট-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সাইফুর রহমান দাপটের সঙ্গেই সিলেট বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তখন বেশ শক্তিশালী অবস্থায় ছিল সিলেট বিএনপি। তিনি নেতৃত্বে থাকাকালে ধীরে ধীরে সামনের কাতারে চলে আসেন আবুল হারিছ চৌধুরী ও এম ইলিয়াস আলী। তবে আবুল হারিছ চৌধুরী ঢাকায় বসেই সিলেটের রাজনীতিতে মেকানিজম করতেন। আর ইলিয়াস আলী ছিলেন রাজপথের নিয়ন্ত্রণকর্তা।
মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সাইফুর রহমানের মৃত্যুর পর সিলেট বিএনপির পুরোপুরি হাল ধরেন ইলিয়াস আলী। নেপথ্যে থেকে তাকে সহযোগিতা করেছেন হারিছ চৌধুরী। ওয়ান-ইলেভেনের পর হারিছ চৌধুরী দেশ ছেড়ে পালান। তার অবস্থান ঠিক  কোথায়, সেটা এখনো পরিষ্কার নয়। ওয়ান ইলেভেনের পর বিধ্বস্ত দলকে পুনর্গঠনের দায়িত্ব পান ইলিয়াস আলী। কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাকে। তার নেতৃত্বের ছোঁয়ায় ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়। সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে খালেদা জিয়ার লংমার্চ-পরবর্তী সমাবেশে লাখো মানুষের সমাগম ঘটান তিনি। কিন্তু ইলিয়াস আলীর নেতৃত্বও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে গাড়ি চালকসহ তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে সিলেট বিএনপিতে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়।
খন্দকার মালিক, এম. সাইফুর রহমান, আবুল হারিছ চৌধুরী ও ইলিয়াস আলীর অনুপস্থিতিতে সিলেট বিএনপির নেতৃত্বের হাল ধরেন কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবীন চৌধুরী ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসেন জীবন। কিন্তু তাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি দেখতে পাননি তৃণমূল নেতাকর্মীরা। নেতৃত্বের দুর্বলতায় সিলেট বিএনপি এখন বহুধা বিভক্ত। কেন্দ্র থেকে বারবার উদ্যোগ নিয়েও এক ছাতার নিচে আনা সম্ভব হচ্ছে না দলের নেতাকর্মীদের। এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুল গফ্ফার বলেন- সাইফুর রহমান ও ইলিয়াস আলীসহ অন্যান্য জাতীয় নেতার শূন্যতা এখনো পূরণ হয়নি। বর্তমানে নেতৃত্বদানকারী নেতারা তৃণমূলকে সুসংগঠিত করতে পারলে তারা সফল হবেন।

 

সর্বশেষ খবর