বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

অনেক প্রশ্নের জট খুলছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

অনেক প্রশ্নের জট খুলছে না

এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের ঘটনার অনেক প্রশ্নের উত্তর রহস্যজটের মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে। খুনের পর ২৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো সন্ধান মেলেনি এর নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারীর। কোন গোষ্ঠী বা ব্যক্তি সাত লাখ টাকায় মিতুর খুনিদের ভাড়া করেছিল, খুনের ভিডিও ফুটেজে মুছাকে দেখার পরও কেন বাবুল আক্তার ঘনিষ্ঠ এ সোর্সের বিষয়ে মুখ খোলেননি, হত্যাকাণ্ডের পর কিলিং মিশনের সদস্যরা মিতুর মোবাইল নিয়ে গেলেও এর বর্তমান অবস্থান কোথায় ইত্যাদি অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মেলেনি। উল্টো দিন বাড়ার সঙ্গে ঘনীভূত হচ্ছে এ হত্যার রহস্য। কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে রহস্যজট।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, ‘মামলার বিষয়ে পূর্ণ সিদ্ধান্তে আসতে কাজ করছে পুলিশের সব ইউনিট। সব আসামিকে গ্রেফতার ও সব প্রশ্নের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত এ মামলার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারছি না। তবে সব প্রশ্নের উত্তর পেতে মনে হচ্ছে একটু অপেক্ষা করতে হবে। মামলার তদন্ত শেষ করেই সব বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’

মামলা তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন ও ওয়াসিম আদালতে দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় যে জবানবন্দি দিয়েছেন, তাতে তারা উল্লেখ করেছেন সোর্স মুসা তাদের ভাড়া করেছেন। কিন্তু তারা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেননি কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী মিতুকে খুনের জন্য নেপথ্যে থেকে পরিকল্পনা ও নির্দেশ দিয়েছেন। উল্লেখ করেননি পেশাদার অপরাধী ও পুলিশ সোর্স মুসাকে কে বা কারা খুনের জন্য ভাড়া করেছিল। খুনের দিনই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীদের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ, যার মধ্যে একাধিক ফুটেজে বাবুল আক্তারের ঘনিষ্ঠ সোর্স মুসার মুখ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এ ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পরও কেন মুসার বিষয়ে মুখ খোলেননি বাবুল আক্তার— এ বিষয়টিও ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্ত দলের কাছে। খুনের পর মিতুর মোবাইল নিয়ে যায় কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীরা। গতকাল পর্যন্ত মিতুর নিয়ে যাওয়া মোবাইলের হদিস পায়নি মামলার তদন্তকারী সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এ খুনের পরিকল্পনা ও কিলিং মিশনে আটজন অংশ নিয়েছে বলে নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে আনোয়ার হোসেন, ওয়াসিম এবং অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ওরফে হানিফুল হক ওরফে ভোলাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিলিং মিশনের জন্য খুনি ভাড়া করা আবু মুসা সিকদার, মো. রাশেদ ওরফে ভাগ্নে রাশেদ, আবদুল নবী, মোহাম্মদ শাহজাহান ও কালুর আটকের বিষয়ে মুখ খুলছে না পুলিশ। যদিও কালু ছাড়া অন্য সব আসামি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে একটি সূত্র দাবি করলেও এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না পুলিশের কেউ। তাদের পরিবার থেকে দাবি করা হচ্ছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে পুলিশ পরিচয়ে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে কিছু প্রশ্ন আমাদের মাথায়ও ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু সব আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় এসব প্রশ্নের উত্তর মিলছে না।’

সর্বশেষ খবর