বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঐক্যফ্রন্ট মাঝপথেই হোঁচট খাবে

রফিকুল ইসলাম রনি

ঐক্যফ্রন্ট মাঝপথেই হোঁচট খাবে

আখতারুজ্জামান

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ডাকসুর সাবেক ভিপি আখতারুজ্জামান বলেছেন, ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে যে ‘ঐক্যফ্রন্ট’ গঠিত হয়েছে তা পরস্পরবিপরীত মতাদর্শীদের ঐক্য। এটি মাঝপথেই হোঁচট খাবে। নির্বাচনের চূড়ান্ত মুহূর্তে বিএনপি এ ঐক্য থেকে ইউটার্ন নিতে পারে। কারণ ড. কামাল গংদের ব্যক্তিপ্রভাব থাকলেও ভোটের মাঠে তারা শূন্য। গত সোমবার রাতে বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ঐক্যফ্রন্ট, ডাকসু নির্বাচন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে তাঁর মত তুলে ধরেন। আখতারুজ্জামান বলেন, চৈত্র মাসে পানির অভাবে মাটি ফেটে যেমন চৌচির হয়ে যায়, তেমন নির্বাচনের ঠিক আগে এই জোটও ফেটে চৌচির হয়ে যাবে। তাই এ নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবছে না। তিনি বলেন, যারা ঐক্যফ্রন্ট করলেন, তারা অনেকেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলেন, দল থেকে এমপি হয়েছেন। ফ্রন্টের প্রধান ড. কামাল হোসেনকে আওয়ামী লীগ থেকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করা হয়েছিল। তারা যে আশা নিয়ে জোট করেছেন তা পূরণ হবে না। এসব নেতার ভোটের মাঠে কোনো প্রভাব নেই। কেবল ব্যক্তিপ্রভাব রয়েছে। তিনি বলেন, ভোটের মাঠে কর্মীবাহিনী না থাকলে কোনো দাম নেই। যখন ভোটের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে তখন বিএনপি এই নেতাদের সরিয়ে দেবে। কেউ কেউ থাকলেও তারা স্বাধীন মত দিতে পারবেন না। তারা বিএনপিতে বিলীন হয়ে যাবেন। গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাবেক এমপি আখতারুজ্জামান বলেন, ড. কামাল হোসেন অনেক সম্মানী ব্যক্তি। দেশের সংবিধানপ্রণেতা। তাঁর জন্য আওয়ামী লীগ সারা দেশে ভোট প্রার্থনা করেছে। জয়লাভ করলে তিনি রাষ্ট্রপতি হতেন। সেই কৃতজ্ঞতাবোধও তাঁর নেই। জাতির পিতার ছেড়ে দেওয়া আসনে তিনি উপনির্বাচনে এমপি হয়েছিলেন। আজ জাতির জনকের খুনিদের পুরস্কৃতকারী, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি, সন্ত্রাসীদের নিয়ে তিনি ঐক্য করলেন। ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে আখতারুজ্জামান বলেন, ডাকসুর নিয়মিত নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট নির্বাচন নিয়মিত হলে ডাকসু নির্বাচন হতে বাধা কোথায়? রাষ্ট্রপতি ডাকসু নির্বাচনের জন্য দুবার তাগিদ দিয়েছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ নিয়ে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তারা উপযুক্ত সময় খুঁজছেন। এটা ভালো দিক। তবে বেশি সময় নেওয়া ঠিক হবে না। রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীদের হাতে— এ প্রশ্নের জবাবে আখতারুজ্জামান বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। জিয়াউর রহমান সুবিধাবাদী, ব্যবসায়ী ও টাকাওয়ালাদের নিয়ে দল গঠন করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন ‘আই উইল মেক পলিটিক্স ডিফিকাল্ট ফর দ্য পলিটিশিয়ান’। সে সময় থেকেই রাজনীতিতে ব্যবসায়ীসহ নানা পেশার মানুষের আগমন। আগামী নির্বাচনে দলের ইশতেহারে তরুণদের জন্য বিশেষ ঘোষণা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন বাস্তব। আগামী নির্বাচনে আমরা প্রাধান্য দেব তরুণ ও যুবসমাজের ব্যাপক কর্মসংস্থান ও তাদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর। তাদের বিনিয়োগে উদ্যোগী হওয়ার ব্যবস্থা করব। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিটি নির্বাচনেই পরীক্ষিত, ত্যাগী ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। ৩০০ আসনের চিত্র দলীয় সভানেত্রীর হাতে। সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়, গ্রহণযোগ্য এবং যাকে প্রার্থী করলে জয় সম্ভব তাকেই নৌকা দেওয়া হবে। আখতারুজ্জামান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার গত পৌনে ১০ বছরে দেশের যে উন্নয়ন করেছে, বিগত ২৮ বছরে অন্য সরকারগুলো তা করতে পারেনি। উন্নয়ন, অর্জন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা রক্ষায় মানুষ আগামীতে নৌকা প্রতীকেই ভোট দেবে। আমরা টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসব।

সর্বশেষ খবর