শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

সাহসী ভূমিকায় ফায়ার সার্ভিস

অন্য সংস্থাগুলোও ছিল রাতভর মাঠে

আনিস রহমান

পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সময় জীবনবাজি রেখে সাহসীকতার সঙ্গে কাজ করেছে দেশের অন্যতম সেবাদানকারী সংস্থা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। তাদের সঙ্গে রাতভর মাঠে ছিল পুলিশ, র‌্যাব ও বিমান বাহিনীসহ অন্য সংস্থার কর্মীরাও।

চুড়িহাট্টায় বহুতল ভবনে আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের সবাই নিজ নিজ জীবন ও সম্পদ রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয়ের তালাশে ব্যস্ত। ঠিক তার বিপরীত চিত্র চোখে পড়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের কর্ম তৎপরতায়। তারা সাহসী ভূমিকায় প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে লড়াই করে বিপদাপন্নদের জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি সম্পদ রক্ষার জন্য নিজেদের জীবনকে বিপদগ্রস্ত করে এগিয়ে যান। ওই রাতে ধ্বংসস্তূপের ভিতর থেকে যখনই তারা কোনো জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে আনে তখনই উপস্থিত অনেকেই শাবাশ শাবাশ বলে আনন্দে ফেটে পড়েছিল। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।  গতকাল বেলা ১২টা পর্যন্ত টানা ১৪ ঘণ্টা সংস্থাটির ১৫টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিটের ২০০ কর্মী কাজ করেন। এখনো সেখানে তিনটি ইউনিট অবস্থান করছে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, বাংলাদেশে হাতে গোনা যে কটি প্রতিষ্ঠানকে মন থেকে স্যালুট দিতে ইচ্ছে করে, তাদের একটি হলো এই প্রতিষ্ঠান। যখনই বিপদ, তখনই এই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসে হাজির হন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সৃষ্টি করে ফায়দা লোটার চেষ্টা তারা করেন না। তাই ফায়ার সার্ভিসকে হৃদয়ে না রেখে উপায় আছে? রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও তাদের পরিবারের জন্য আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রাখার দাবি জানান তিনি। কাকলি তানভীর নামে এক নারী গতকাল তার ফেসবুক স্ট্যাটার্সে লিখেছেন, ‘স্যালুট আওয়ার ফায়ার ফাইটার্স, ইউআর আওয়ার ট্রু হিরোস’।

ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের পাশাপাশি পুলিশ র‌্যাব ও বিমান বাহিনীসহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরও রাতভর আগুন নেভানো ও তার আশপাশের নিরাপত্তার জন্য ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। আগুন নেভানোর সময় এলাকায় পানি সংকট দেখা দিলে পুলিশ নিজ উদ্যোগে তাদের গাড়ি ব্যবহার করে দূর-দুরন্ত থেকে পানি এনে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের সহায়তা করেন।

 আগুন নেভাতে এবং ভবনগুলোতে কেউ আটকে থাকলে তাদের উদ্ধার করতে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রমে যোগ দেয় বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। বুধবার দিনগত রাত ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকে আগুনের লেলিহান শিখা যখন জ্বলছিল, তখন অগ্নিকা-স্থলের আকাশে বিমান বাহিনীর দুটি হেলিকপ্টার উড়তে দেখা যায়।

সেখানে উপস্থিত বিমান বাহিনীর প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ফায়ার সার্ভিস ইনচার্জ) স্কোয়াড্রন লিডার সঞ্জীব চৌধুরী বলেন, পানি স্বল্পতার খবর পেয়ে বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে চার গাড়ি পানি নিয়ে আসা হয়েছে। এ ছাড়া, দুটি হেলিকপ্টার আকাশে উড়ছে। কাউকে উদ্ধার করার প্রয়োজন হলে কিংবা ওপর থেকে পানি ছুড়তে হলে সেগুলোকে ব্যবহার করার জন্য। তেজগাঁও বিমানঘাঁটিতে আরও চারটি হেলিকপ্টার স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছিল বলে জানান তিনি।

সর্বশেষ খবর