শিরোনাম
শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

এবার রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত আগুন

আবদুস সামাদ সায়েম, সিরাজগঞ্জ

এবার রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেন লাইনচ্যুত আগুন

ঢাকা-রংপুর রেলপথের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমপাড় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশনের কাছে ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ নয়টি লাইনচ্যুত এবং ইঞ্জিনসহ তিনটি বগি আগুনে পুড়ে গেছে। গতকাল বেলা সোয়া ২টার দিকে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে। তবে তেমন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। দুর্ঘটনায় শুধু ট্রেনের চালক তারিক রহমান, লোকো মাস্টার ও সহকারী লোকো মাস্টার, পাবনার ভাঙ্গুড়া গ্রামের সাথী, তার দুই সন্তান, মোস্তাক ও সাইফুল আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণবঙ্গেও সব রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন এবং আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মাঞ্জেল হোসেন জানান, স্টেশন অফিসার নাজির হোসেন ও সহকারী স্টেশন মাস্টার রফিকুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে রংপুরগামী (৭৭১) রংপুর এক্সপ্রেস ছেড়ে আসে। বেলা সোয়া ২টার দিকে উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন পৌঁছার প্রায় ৩০০ গজ আগে লাইনের ত্রুটির কারণে দ্রুতগামী ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে পড়ে যায়। এরপর পেছনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ইঞ্জিনটি লাইনচ্যুত হওয়ার পরই ইঞ্জিনে আগুন ধরে। দ্রুত আগুন পেছনের তিনটি বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে চালকসহ প্রায় ১০ জন আহত হন। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে ইঞ্জিনসহ দুটি বগি সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে, দুর্ঘটনার পরই উল্লাপাড়া স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের সব স্টাফ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে চলে যান। প্রত্যক্ষদর্শী আবু হানিফ, আবদুল আলিম জানান, ট্রেনটি স্টেশনে ঢোকার পূর্ব মুহূর্তে বিকট শব্দে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়। সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। কালো ধোঁয়া পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। যাত্রীরা আতঙ্কে ও ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করেন। হুড়োহুড়ি করে সবাই ট্রেন থেকে নেমে নিজেদের প্রাণ বাঁচান। স্থানীয়রা যাত্রীদের উদ্ধার করে সরিয়ে নিতে সহায়তা করেন। যে কারণে কোনো নিহতের ঘটনা ঘটেনি।

তদন্ত কমিটি : এ ঘটনায় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে  রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

ট্রেন চলাচল বন্ধ, যাত্রীদের দুর্ভোগ : দুর্ঘটনার পরই ঢাকা থেকে উত্তর-দক্ষিণ ও উত্তর-দক্ষিণ থেকে ঢাকাগামী সব ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনের যাত্রীসহ সব ট্রেনের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত উদ্ধারকারী ট্রেন এসে পৌঁছায়নি। যে কারণে কতক্ষণে উদ্ধার কাজ শেষে করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে তা কর্তৃপক্ষ জানাতে পারেনি।

দুর্ঘটনার কারণ : রেলওয়ের পয়েন্টে ম্যানের সিগনালের ভুল এবং লাইন ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে। ট্রেনটি দুই নম্বর লাইন দিয়ে  স্টেশনে প্রবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু পয়েন্টম্যান ভুল সিগ্যনাল দেওয়ায় ট্রেনটি এক নম্বর লাইনে ঢুকে পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

সর্বশেষ খবর