রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা

যুক্তরাষ্ট্রের ছয় যুদ্ধবিমান ছিল ইরানের আকাশে

♦ বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নতুন তথ্য ♦ খামেনিকে মুখ সামলাতে বললেন ট্রাম্প

প্রতিদিন ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ছয় যুদ্ধবিমান ছিল ইরানের আকাশে

ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত করার ঘটনা নিয়ে ইরান যখন কঠোর সমালোচনার মুখে ঠিক তখনই নতুন এক তথ্যে পুরো অবস্থার মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, ইরানের রাজধানী তেহরানের আকাশে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় ইরান সীমান্তে অন্তত ছয়টি মার্কিন জঙ্গিবিমান হামলার উদ্দেশ্যে আকাশে উড়ছিল। রয়টার্স, বিবিসি, প্রেসটিভি।

চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়ে গত শুক্রবার মস্কোয় বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনে ল্যাভরভ জানান, তার কাছে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে, ওই সময় অন্তত ছয়টি মার্কিন এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান ইরান সীমান্তের আকাশে উড়ছিল। ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশের আশপাশে মার্কিন সন্ত্রাসী বাহিনীর জঙ্গিবিমানের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছিল। এ অবস্থায় ইউক্রেনের যাত্রীবাহী বিমান ইরানের একটি স্পর্শকাতর স্থাপনার আকাশে চলে আসায় ভুল করে সেটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়। উল্লেখ্য, গত ৮ জানুয়ারি ভুলবশত ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হয়। এ ঘটনায় তেহরান থেকে কিয়েভ হয়ে টরেন্টোগামী বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির ১৭৬ আরোহীর সবাই প্রাণ হারান। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নতুন তথ্যে ইরানে মিসাইল ছুড়ে ইউক্রেনের যাত্রীবাহী প্লেন বিধ্বস্তের ঘটনায় নতুন মোড় নিয়েছে। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় যখন পাঁচটি দেশ (কানাডা, ইউক্রেন, সুইডেন, আফগানিস্তান এবং যুক্তরাজ্য) একজোট হয়েছে ইরানের বিরুদ্ধে, তখনই মুখ খুলল রাশিয়া। রাশিয়া বলছে, সম্ভাব্য মার্কিন হামলার খবরে ভড়কে গিয়েই ইরান ভুলবশত মিসাইল ছুড়ে ইউক্রেনের ওই প্লেনটি ভূপাতিত করে। খামেনিকে মুখ সামলাতে বললেন ট্রাম্প : ট্রাম্পকে ‘ভাঁড়’ বলার পর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনিকে ‘মুখ সামলে’ কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত শুক্রবার আট বছর পর জুমার নামাজের খুতবায় যুক্তরাষ্ট্রকে আক্রমণ করে খামেনির ভাষণের পর এই প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। এক টুইট বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘ইরানের তথাকথিত সর্বোচ্চ নেতা, যিনি বেশ কয়েক দিন ধরে সর্বোচ্চ নেই, তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপ সম্পর্কে নোংরা কথা বলেছেন। তাদের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে, লোকজন দুর্ভোগে রয়েছে। তাই কথা বলার সময় খামেনির খুব সতর্ক হওয়া উচিত।’ এদিকে শুক্রবার দীর্ঘ আট বছর পর জুমার নামাজে ইমামতি করেন খামেনি। নামাজের আগে দেওয়া খুতবায় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে আক্রমণ করেন এবং ইরানি সেনাবাহিনীকে সমর্থন করেন। ভাষণে তিনি ট্রাম্পকে ‘ভাঁড়’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘ইরানি জনগণের পেছনে বিষাক্ত ছুরি ধরে রেখে তাদের সমর্থন দেওয়ার কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।’ নামাজের আগে দেওয়া খুতবায় তিনি বলেন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসলামী বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) যে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে তা আমেরিকার সম্মান-মর্যাদায় আঘাত হেনেছে। আমেরিকা নিজেকে পরাশক্তি দাবি করে দম্ভ দেখায়, আইআরজিসির ক্ষেপণাস্ত্র তাদের সেই দম্ভে আঘাত করেছে। তারা এখন বলছে আমাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করবে, কিন্তু এসবের মাধ্যমে তারা তাদের হারানো সম্মান ফিরে পাবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর