শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি

দূতাবাসের বাংলাদেশি কর্মীরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকতে পারবেন না

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকায় বিদেশি দূতাবাসগুলোতে কর্মরত বাংলাদেশের নাগরিকরা বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন না। তাই বিদেশ মিশনগুলো যাতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলে বাংলাদেশের নাগরিকদের যুক্ত না করে সে ব্যাপারে বিদেশি মিশনগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক  হিসেবে কার্ড দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নিয়ম ভেঙে ইসির এ পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার প্রেক্ষাপটে সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেছেন, ‘এটা ঠিক হয়নি।’ ঢাকার সব বিদেশি মিশনে পাঠানো এক চিঠিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সিটি করপোরেশন নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কয়েকটি মিশন পর্যবেক্ষক দল গঠন করেছে বলে জানতে পেরেছে। এ নিয়ে বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে ২০১৮ সালের নির্দেশনা দূতাবাসগুলোকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। ওই নির্দেশনায় বলা আছে, বাংলাদেশের কোনো নাগরিক আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক হিসেবে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিবেচিত হতে পারেন না। এই প্রেক্ষাপটে বিদেশি মিশনগুলো যেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর্যবেক্ষক দলে তাদের কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত বাংলাদেশের নাগরিকদের যুক্ত না করে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশা করছে সব বিদেশি মিশন এ বিষয়টিকে বিবেচনায় নেবে।

অভিযোগের মুখে গতকাল প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের অবশ্যই মিশনের লোক হতে হবে। মিশনের লোক না হলে তারা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন না। বাংলাদেশি কেউ মিশনের লোক হলে তারা ভোট পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এদিকে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশিরা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলেও, তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে গণ্য হবেন। যারা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড পেয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশি তারা স্থানীয় পর্যবেক্ষক হিসেবে বিবেচিত হবেন। তাদের সেই চিঠিও দেওয়া হবে। ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের দূতাবাস ইসির কাছ থেকে পর্যবেক্ষক কার্ড নিয়েছে। ইসির কাছ থেকে পাওয়া তালিকা বিশ্লেষণে দেখা যায়, ১০টি দেশের মিশনের মোট ৭৪ জন পর্যবেক্ষক কার্ড পেয়েছেন, এর মধ্যে ২৮ জন রয়েছেন বাংলাদেশি। যারা বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি করেন। বাকি ৪৬ জন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড পেলেও বাংলাদেশি ২৮ জনকে বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে কার্ড দেওয়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালার স্পষ্ট লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ছহুল হোসাইন বলেন, বিদেশি পর্যবেক্ষণ সংস্থার পক্ষ থেকে বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকাটাই শ্রেয়। দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের বিদেশি পর্যবেক্ষক করা ঠিক হয়নি। এসব কর্মকর্তার বিদেশি পর্যবেক্ষক পরিচয়কার্ড  প্রদান করা ঠিক নয়। বিদেশি দূতাবাসের কর্মীদের ভোট পর্যবেক্ষণের সামর্থ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই নির্বাচন কমিশনার। ভোট দেখতে পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর লোকজন নানা পরিকল্পনা নিয়ে আসেন, তাদের ট্রেনিংও রয়েছে। কিন্তু দূতাবাসের লোকজন যারা দেশীয়, তারা ভোট দেখতে যাবেন কেন? তাদের পর্যবেক্ষণে ঘাটতি থাকতে পারে।

সর্বশেষ খবর