শুক্রবার, ৬ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
দুই মুক্তিযোদ্ধাকে মোটরাইজড হুইল চেয়ার প্রদান

গবেষণা করলেই হবে না দেখতে চাই ফলাফলও : প্রধানমন্ত্রী

প্রতিদিন ডেস্ক

গবেষণা করলেই হবে না দেখতে চাই ফলাফলও : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবনে যুদ্ধাহত দুই মুক্তিযোদ্ধাকে অত্যাধুনিক মোটরাইজড হুইল চেয়ার প্রদান করেন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারে সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে আরও গবেষণা চালানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘শুধু গবেষণা করলেই চলবে না। এই গবেষণার ফলাফলটা কী সেটাও জানতে চাই। আর সেটা যে দেশের কাজে লাগছে সেটাও আমরা নিশ্চিত হতে চাই।’

গতকাল সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (এনএসটি) ফেলোশিপ এবং বিজ্ঞানী ও গবেষকদের জন্য গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এই ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

এ বছর প্রায় ৩ হাজার ৮০০-এর অধিক শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্টের আওতায় বঙ্গবন্ধু ও এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়। এর মধ্যে নির্বাচিত কয়েকজনের হাতে অনুষ্ঠানে চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আনোয়ার হোসেন স্বাগত বক্তৃতা করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্টের বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশ-বিদেশে এমএস, পিএইচডি এবং পিএইচডি-উত্তর অধ্যয়ন/গবেষণার জন্য ৬৪ জনকে, ৩ হাজার ২০০ জনকে এনএসটি ফেলোশিপ এবং ৫৬১ প্রকল্পের জন্য ৫৬১ জনকে গবেষণা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর কাছেও বিষয়টি জানতে চেয়েছেন, ‘গবেষণার জন্য যে অর্থ ব্যয় করছি তার রেজাল্টটা কী, আমরা দেখতে চাই।’ তিনি বলেন, ‘কেবল গবেষণা করাটাই যথেষ্ট নয়। গবেষণালব্ধ ফলাফল দিয়ে মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাতে পারলেই সে গবেষণা সার্থক হবে’। তিনি বলেন, ‘যাদেরকে স্কলারশিপ দিচ্ছি এবং যাঁরা গবেষণা করছেন তাঁদের একটা ডাটাবেজ হওয়া দরকার।’ তিনি বলেন, ‘কার কী গবেষণালব্দ জ্ঞান আছে, সেটাকে আমার দেশের উন্নয়নে কোথায় কীভাবে কাজে লাগাতে পারি এবং সেই সুযোগ তাঁদের জন্য সৃষ্টি করে দেওয়া দরকার। তাহলে যে ধরনের কাজে পারদর্শিতা অর্জন করছেন তাঁদের সেই ধরনের কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারব।’ তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান আমি গড়ে তুলেছি। যাতে করে আমাদের যতটুকুই সম্পদ রয়েছে সেটাকে যেন যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারি। কারণ গবেষণা ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা সর্বক্ষেত্রেই গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তার ওপর আমরা একশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি, বিভিন্ন মেগা প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করছি, আর বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যবহার মানুষের জীবনকে অনেক বেশি সহজ করে তোলে এবং প্রতিটি সময় ও মুহূর্তকে কাজে লাগানো যায়।’

দুই মুক্তিযোদ্ধাকে হুইলচেয়ার প্রদান : জাতীয় পদকপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত দুই মুক্তিযোদ্ধাকে মোটরচালিত অত্যাধুনিক হুইলচেয়ার উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপহার পাওয়া দুই মুক্তিযোদ্ধা হলেন ৮ নম্বর সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া কালীপদ দাস ও ৯ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করা লিবিও কির্তনীয়া।

গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দুই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে হুইলচেয়ার হস্তান্তর করেন। এ সময় দুই মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন জানান, প্রধানমন্ত্রী দুই মুক্তিযোদ্ধাকে হুইলচেয়ার উপহার  দেওয়ার পর তাদের সার্বিক খোঁজ-খবর নেন।

সর্বশেষ খবর