মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা

সরকার ও গণমাধ্যম সংকট মোকাবিলা একসঙ্গে : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, করোনা দুর্যোগ মোকাবিলায়  গণমাধ্যম ও সরকার আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। গতকাল তথ্যমন্ত্রীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে গণমাধ্যম নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন। নিউজপেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ- নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান ও তারিক সুজাত, সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম, সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স- অ্যাটকোর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু, অ্যাটকোর অন্যতম পরিচালক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

করোনা সংকট মোকাবিলা এবং এই সংকটের কারণে গণমাধ্যমে নতুনভাবে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগে ঐকমত্যের কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক দুর্যোগের এই সময়ে আমাদের দেশও করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। এই প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মালিক, সম্পাদকীয় পরিষদ ও এডিটরস গিল্ড নেতাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষকে অবহিত ও সতর্ক করা, সঠিক চিত্র তুলে ধরা ও সার্বিকভাবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাপক।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ও গণমাধ্যমসহ আমরা সবাই যাতে একসঙ্গে কাজ করে এ সংকট থেকে উত্তরণ হতে পারি। এ বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে, বৈশ্বিক দুর্যোগের এই সময়ে অবশ্যই আমরা সবাই একযোগে কাজ করব।’ ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘অতীতেও আমরা দেখেছি, এমন দুর্যোগের সময় নানা ধরনের গুজব রটানো হয়। কিছু অনলাইন পোর্টাল থেকে মানুষকে আতঙ্কিত করার জন্য ভুয়া সংবাদ পরিবেশিত হয়। এই গুজব ও মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো ভূমিকা রাখতে পারে এবং রাখছে। সরকারও তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। সেই সঙ্গে এ ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কীভাবে আরও জোরালো ভূমিকা রাখা যায়, সে বিষয়ে আমরা মূলধারার গণমাধ্যমের সহযোগিতা চাই।’ তিনি বলেন, ‘এ সময় জনগণকে আতঙ্কিত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়, বরং সতর্ক করা দরকার। সরকার ও সবাই আর কী কী করতে পারি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় আরও কী যুক্ত করতে পারি, সে বিষয়ে আমরা আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করব।’ করোনা পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় এনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটময় সময়ে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনও নানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। বিশেষ করে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন কমে গেছে। কোনোটা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনোটা আরও কমে গেছে। হকার এবং সংবাদপত্রে যারা দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেন, তারা নানা সমস্যায় পড়েছেন। টেলিভিশনেও কিছু সমস্যা রয়েছে। এ সমস্যাগুলো মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে কী কী করা যায়, তাদের পাওনা বিলগুলো যাতে আমরা তাড়াতাড়ি দিতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’ বৈঠক শেষে বিটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম  বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী সংকটের সময়ও গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখে এবং রাখবে।’ সংবাদপত্রশিল্পের স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন দফতরে পত্রিকাগুলোর পাওনা বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান তিনি।

অ্যাটকো সহ-সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, সাংবাদিকরা এ সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। আগামী পাঁচ মাসের জন্য অ্যাটকোকে একটি থোক বরাদ্দের অনুরোধ জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি সরকারের কাছে টিভিগুলোর পাওনা বিজ্ঞাপন বিল দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান।

সর্বশেষ খবর