রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০ ০০:০০ টা

৮৭ হাজার কোটি টাকার তহবিল চায় বিএনপি

ঐকমত্যে সিদ্ধান্ত নিন : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের মহামারীর মধ্যে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য মহাদুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কাছে ৮৭ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। স্বল্পমেয়াদি খাতে ৬১ হাজার কোটি টাকা, মধ্যমেয়াদি খাতে ১৮ হাজার কোটি টাকা এবং অতিরিক্ত আরও ৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করেছে দলটি।

গতকাল সকাল ১১টায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল  ইসলাম আলমগীর দলের পক্ষ থেকে ২৭ দফা প্যাকেজ প্রস্তাব তুলে ধরেন। মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের প্রদত্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের জন্য জিডিপির ৩ শতাংশ অর্থ সমন্বয়ে ৮৭ হাজার কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল ঘোষণা করতে হবে। শাটডাউন প্রত্যাহার হলে নতুন করে একটি সংশোধিত আর্থিক প্যাকেজ প্রদান করতে হবে, যাতে সব সেক্টরের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সাধারণ ছুটিপূর্ব স্তরে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। এই দুর্যোগ মোকাবিলায় জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। করোনাভাইরাসে সৃষ্ট অর্থনৈতিক অচলাবস্থার মধ্যে দারিদ্র্য, গৃহহীন, দুস্থ জনগোষ্ঠীর মুখে খাবার তুলে দিতে দেশের জনহিতৈষী ও বিত্তবানদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার আঘাত আসার পূর্বেই বাংলাদেশের অর্থনীতির ভঙ্গুর, নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা নিয়ে বিশেষজ্ঞমহল উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। সবচেয়ে বেশি আলোচিত ব্যাংকিং খাত। লাখো কোটি টাকার ওপর খেলাপি ঋণ। পরিচালক ও ব্যাংকার মিলেমিশে ব্যাংক লুট, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের কেপাসিটি চার্জের নামে বিপুল অর্থ লোপাট,  মেগা প্রকল্পের প্রকল্পব্যয় অযথা বৃদ্ধিসহ নানা উপায়ে বিরাট অঙ্কের দুর্নীতি, প্রতি বছর লক্ষ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বিদেশে পাচারসহ আকণ্ঠ দুর্নীতি উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক। এখন তা আরও ঘনীভূত হবে। আমদানিও নিম্নমুখী। রেমিট্যান্স প্রবাহ জানুয়ারিতে নেমে গিয়েছিল ২ দশমিক ৬ ভাগ। তিনি বলেন, অর্থনীতির অন্যতম সেক্টর পুঁজিবাজার ইতিহাসের সর্বনিম্ন সূচকে নেমে এসেছে। বেকারের সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। দরিদ্রতা হ্রাসের হার দ্রুতগতিতে কমে যাচ্ছে। রাজস্ব সংগ্রহে ভাটা চলছে। সারা বছর যে পরিমাণ অর্থ ব্যাংক খাত নেওয়ার কথা, প্রথম ৪-৫ মাসেই তার চেযে অধিক অর্থ সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। বিনিয়োগের ধারা ঋণাত্মক পর্যায়ে নেমে এসেছে। এক কথায় গোটা অর্থব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বিএনপি মহাসচিব আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, গণপরিবহন বন্ধ না করে সাধারণ ছুটি ঘোষণার কারণে লাখ লাখ মানুষ ঈদের মতো করে গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি এই সংকট মুহূর্তে ডেঙ্গু দরজায় কড়া নাড়ছে। তিনি আরও বলেন, কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ক্যাম্পে যথাযথ সতর্কতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমিত না হয়। সম্প্রতি দেশে ফিরে আসা প্রবাসীদের প্রতি মানবিক আচরণ করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না এদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি।

সর্বশেষ খবর