শুক্রবার, ১০ জুলাই, ২০২০ ০০:০০ টা

দুর্নীতিবাজ ধরে আমরাই যেন চোর হয়ে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

দুর্নীতিবাজ ধরে আমরাই যেন চোর হয়ে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতিবাজ যে-ই হোক ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। কে কোন দলের তা বড় কথা নয়, দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের আমরা ধরে যাচ্ছি। গতকাল জাতীয় সংসদে বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত, অনিয়মে জড়িত, আমরা যাকেই পাচ্ছি, যেখানেই পাচ্ছি, তাকে ধরছি। আর ধরছি বলেই চোর ধরে যেন চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরা ধরি আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। তিনি বলেন, এর আগে তো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল। অনিয়মটাই নিয়ম ছিল। সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে। যতদূর পারি শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সামরিক শাসনামলে দুর্নীতিকেই নীতি হিসেবে গ্রহণের চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকরা বছরের পর বছর এই দুর্নীতির বীজ বপন করেছে। তা মহীরুহ হয়ে গেছে। যতই কাটেন কোথা থেকে আবার গজিয়ে ওঠে। মানুষের চরিত্রটাই নষ্ট করে দিয়ে গেছে তারা। সমালোচনাকারীদের উদ্দেশে সংসদ নেতা বলেন, ঘরে বসে সমালোচনা, বাজেটের খুঁত ধরা, কাজের খুঁত ধরা সেগুলো অনেকেই ধরতে পারেন, এটা ঠিক। কিন্তু মাঠে গিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষকে সেবা করা, এই কাজগুলো কিন্তু আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের  সৈনিক যারা, আমরাই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। কারণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে জন্মলগ্ন থেকে পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের তো অনেক রাজনৈতিক দল আছে। সমালোচনা অনেকেই করে যাচ্ছেন। এমনকি বহু এনজিও, অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ঠিক বর্তমানে কতজনকে চোখে পড়ে যারা কাজ করছে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে? প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক মানুষ আছে যারা হয়তো হাত পাততে পারছে না, তাদের কোনো আয় নেই, গোপনে তাদের খাবার জিনিস সরবরাহ করা হয়। এমনকি ঢাকা শহরে আমাদের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমাদের যে কমিটিগুলো, তারা কিন্তু সেভাবে সাহায্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। আর যারা নিচ্ছে তারা কিন্তু চায় না তাদের নামটা প্রচার হোক। আমরাও চাই না। কারণ এটা তাদের একটু আত্মাভিমানে লাগে। কিন্তু তারা যেন কষ্ট না পায় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি আছে। সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও মানুষকে সহায়তা করা হচ্ছে।

পাটকল আধুনিক করা হবে : বস্ত্র-পাটকলগুলোর শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে এবং পাটকলগুলো আধুনিকায়ন করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক বছর ধরে এ পাটকলগুলোর ২৫ হাজার শ্রমিককে সরকারের পক্ষ থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন (বিজেএমসি) দিতে পারছে না। সরকারের পক্ষ থেকে এভাবে বছরের পর বছর বেতন দিয়ে যেতে হবে। ৫০ ও ৬০ এর দশকে এ পাটকলগুলো স্থাপন করা হয়েছিল। এগুলো আর লাভজনক করা সম্ভব নয়।

স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানলে করোনা মোকাবিলা সহজ হতো : করোনাভাইরাসের ভয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাসের কথা শুনলেই মানুষ ভয়ে আতঙ্কিত হয়। এত আতঙ্কিত হব কেন। মরতে তো একদিন হবেই। তবে নিজে সুরক্ষিত থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধিসহ যা যা মেনে চলা দরকার তা করবেন। আমরা যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে করোনার সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাব। আমাদের দেশে করোনা রোগীর সুস্থতার হার অনেক বেশি। তাই মনে সাহস রাখতে হবে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

বন্যা মোকাবিলার প্রস্তুতি রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পরিবেশগত কারণে বাংলাদেশে বন্যা নিয়মিত ঘটনা হয়ে গেছে। করোনা তো আছেই। এরই মধ্যে ঘূর্ণিঝড় গেল। এখন এলো বন্যা। ইতিমধ্যে উত্তরাঞ্চলে কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এই বন্যার পানি নেমে এলে দক্ষিণাঞ্চল প্লাবিত হবে। ইতিমধ্যে মধ্য অঞ্চলে বন্যা প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর