সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, কভিড মহামারীর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর। তাই মহামারীর অভিঘাত কাটাতে হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। নাগরিক প্ল্যাটফরমের করোনাবিষয়ক গবেষণা নিয়ে আয়োজিত এক ডিজিটাল মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফরম, বাংলাদেশ ২০২১ বাংলাদেশের প্রায় ১৬০০ খানায় একটি সমীক্ষা নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ও অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বক্তব্য রাখেন। দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, প্রান্তিক মানুষের ওপর অতিমারীর যে প্রভাব পড়েছে তা সংগঠিত জাতীয় প্রভাবের চেয়ে বেশি। প্রথাগতভাবে যারা আগে বিপন্ন ছিলেন না তারাও এখন যুক্ত হয়েছেন। গত বছরের শুরুতে অতিমারীর প্রভাবে যারা সংকটে পড়েনি এ বছর তাদের অনেকে নতুন করে সংকটে পড়েছে। তিনি আরও বলেন, কভিড-১৯-এর অভিঘাত বহুমাত্রিকভাবে এসেছে। যার প্রভাব কর্মসংস্থান, আয়, সঞ্চয় ছাড়াও পুষ্টিহীনতা, সহিংসতা এবং শিক্ষা খাতে ঝরে পরার ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়। স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি ও উন্নয়ন সংস্থাগুলো একত্রিত করে একটি মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা নেওয়া দরকার। মধ্যমেয়াদি বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেওয়া ছাড়া সংকট আরও বাড়তে পারে। তিনি বলেন, কভিড-১৯ এর অর্থনৈতিক প্রভাব স্বাস্থ্য এবং সামাজিক সম্পর্কিত প্রভাবের তুলনায় অনেক গভীরভাবে পড়েছে।
আয় হ্রাস এবং ব্যয়ের থেকে সমাজে সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষগুলো পুরোপুরি সেরে উঠতে পারেনি। বিপুলসংখ্যক পরিবার ঋণের জালে পড়েছে। তাদের সঞ্চয় হারাচ্ছে। আসন্ন জাতীয় বাজেটে সুস্পষ্ট আর্থিক বরাদ্দ রাখতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা নেট কর্মসূচির অধীনে এবং এর বাইরেও অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। একটি নতুন ‘সামাজিক সংহতি তহবিল’ তৈরি করে করপোরেট এবং বেসরকারি অনুদানের জন্য আর্থিক উৎসাহ বিবেচনা করা যেতে পারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর বাড়তি ব্যয় ও ঋণ পরিশোধে সহয়তা দরকার। সরকারিভাবে নগদ আর্থিক সহায়তা দিয়ে এই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বর্তমান কভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করতে সাহায্য করা উচিত।