বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ সরকার জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এ থেকে রক্ষা পেতে হলে দলমত-নির্বিশেষে একটা জাতীয় বৃহৎ ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। কারণ এই জন ও গণবিচ্ছিন্ন, গণতন্ত্রবিনাশী সরকার মানুষের সব অধিকার ধ্বংস করে দিয়ে দেশে ভয়াবহ একটি ফ্যাসিবাদী সরকারব্যবস্থা তৈরি করেছে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে এদের ক্ষমতা থেকে সরিয়ে প্রকৃত অর্থেই জনগণের একটি সরকার ও পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গতকাল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে ও দলটির কার্যকরী সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের পরিচালনায় এতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানোয়ার হোসেন, মিসেস আ স ম রব, জেএসডির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট তানিয়া ফেরদৌসী, জেএসডি নেতা মোশাররফ হোসেন, ডা. কামাল পাটোয়ারী, শাহ আ ক ম আনিছুর রহমান কামাল, লোকমান হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটি দল যেভাবেই হোক ক্ষমতায় গিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে দেশের মানুষের সব মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। বিগত নির্বাচনগুলোয় আমরা দেখেছি তারা কীভাবে জোর করে, এমনকি রাতের বেলায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে।’
করোনাভাইরাস প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত দীর্ঘ একটি বছরেও সরকার এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে মানুষের জীবন আজ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। সরকারের চরম উদাসীনতা ও ব্যর্থতায় করোনাভাইরাস আজ সারা দেশে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু আজ সেই ভ্যাকসিনও যে আসবে এরও কোনো নিশ্চয়তা নেই। এখন আবার সেই ভ্যাকসিন চীন ও রাশিয়া থেকে আনার চেষ্টা করছে। বড্ড দেরি হয়ে গেছে! বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রবাসী সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা ছিল। কিন্তু অদ্ভুত কান্ড, প্রবাসী সরকারের সেই ভূমিকার কথা এ সরকার সব সময় চেপে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ইতিহাসে সত্য না বলা অপরাধ। আওয়ামী লীগ তাদের তৈরি করা ইতিহাস প্রতিষ্ঠার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। যারা দীর্ঘকাল ধরে স্বাধিকার-স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লড়াই করেছেন, তাদের কারও নাম উচ্চারণ করা হয় না। এমনকি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, তাজউদ্দীন আহমদ, আ স ম রব, শাজাহান সিরাজ, ‘স্বাধীনতার ঘোষক’ মেজর জিয়াউর রহমানের নামও উচ্চারিত হয় না। মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, সেসব শহীদের কথাও তারা কখনো উচ্চারণ করেন না। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের যুদ্ধ কোনো একক ব্যক্তি বা দলের নয়। মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল সমগ্র জাতির আত্মবিকাশের ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আকাক্সক্ষাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ বাহাত্তরে প্রণীত সংবিধানকে ছিন্নভিন্ন করে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাক্সক্ষাকে তিরোহিত করে।