শিরোনাম
মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

বাবুনগরীসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন

তদন্তে আল্লামা শফীর মৃত্যুর দায় পেয়েছে পিবিআই, মামুনুলসহ অনেকে বাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

বাবুনগরীসহ ৪৩ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন

হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমির আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যার অভিযোগে ৪৩ জনকে আসামি করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম-মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, আল্লামা শফীর সাবেক খাদেম মোহাম্মদ শফীকে আসামি করা হয়। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় এ মামলা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হককে। গতকাল দুপুরে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন পিবিআইর তদন্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন।

পিবিআইর পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফী হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন আলামত। সব দিক তদন্ত করে এ মামলার প্রতিবেদন আদালতে প্রদান করা হয়। এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি তথ্য দেওয়া যাবে না।’

আদালত সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআই এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করে। যাতে ৪৩ জনকে আসামি করা হয়। যার মধ্যে ৩১ জনের নাম মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে। তদন্তে সম্পৃক্ততা পেয়ে বাবুনগরীসহ ১২ জনকে নতুন করে মামলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। সম্পৃক্ততা না পাওয়া মামুনুল হকসহ  পাঁচজনকে বাদ দেওয়া হয়। জমা দেওয়া প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আল্লামা আহমদ শফীকে খুনের আগে ফটিকছড়ি থানাধীন বাবুনগর এলাকায় অভিযুক্তদের কয়েকজন হত্যার পরিকল্পনা করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর আসামি ও তাদের সহযোগীরা হাটহাজারী মাদরাসায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করেন। তাদের একটি গ্রুপ মাদরাসার বিভিন্ন কক্ষ ভাঙচুর করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর আসামিরা আল্লামা আহমদ শফীর কক্ষে ভাঙচুর চালিয়ে আল্লামা শফীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং অক্সিজেন খুলে নেন। তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্সে তোলা হয়। এ সময় অ্যাম্বুলেন্স প্রায় এক ঘণ্টা আটকিয়ে রাখেন। এতে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। তদন্ত শেষে এ হত্যা মামলায় আসামি করা হয় হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী, যুগ্ম-মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতে ইসলাম নেতা মীর ইদ্রিস, হাবিব উল্লাহ আজাদী, আহসান উল্লাহ, আবদুল মতিন, শহীদুল্লাহ, রিজুয়ান আরমান, এনামুল হাসান ফারুকী, আল্লামা শফীর সাবেক খাদেম মোহাম্মদ শফী প্রমুখকে।

জুনায়েদ বাবুনগরীর বিবৃতি : গ্রেফতার হওয়া নেতা- কর্মীদের মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। গতকাল সকালে তিনি এ বিবৃতি প্রদান করেন। বিবৃতিতে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালিয়ে হেফাজতের নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত করেছে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর মিথ্যা মামলা করা হচ্ছে হেফাজত নেতা-কর্মীদের নামে। এত জুলুমের পরও হেফাজতে ইসলাম অত্যন্ত ধৈর্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। সরকার, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ হেফাজতে ইসলামের সরলতাকে দুর্বলতা মনে করলে এর চরম মাশুল দিতে হবে। হেফাজতে ইসলাম দেশে শান্তিশৃঙ্খলা চায়। তবে পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর