বুধবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনা পরীক্ষা শুরু হয়নি শাহজালালে

আমিরাতে বিশেষ ফ্লাইটও বন্ধ, অনিশ্চয়তায় প্রবাসীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার পদ্ধতিতে এখনো সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের সম্মতি পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়নি। আরব আমিরাত সরকারের অনুমতি এলেই ফ্লাইট চলাচল শুরু হবে বলে জানিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। এদিকে আমিরাতে পরীক্ষামূলকভাবে বিশেষ ফ্লাইটও বন্ধ করা হয়েছে। শাহজালাল বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা ও ফ্লাইট চালুর অগ্রগতি নিয়ে গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান। তিনি বলেন, আরব আমিরাতের নির্দেশনা অনুসারে, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ থেকেই তা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সংগত কারণে যাত্রীরা যেতে পারছেন না। এর কারণ হলো, বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত ছয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউরে (এসওপি) আমিরাতের সম্মতি থাকতে হবে। এটি দুই সপ্তাহ আগেই পাঠানো হয়েছিল। সেখানে এটা এখনো বিবেচনাধীন আছে। এসওপির সম্মতি দ্রুত পাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এসওপি সম্মতি না পাওয়ায় ফ্লাইট শুরু করা যায়নি। বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট ছিল। আমি সেটি বাতিল করে দিয়েছি। তাদের একটু চাপে রাখার কারণে এটা করেছি। বিমানবন্দরে যে ছয় প্রতিষ্ঠানের ল্যাব আছে, এগুলোর যদি অনুমোদন বিকালের মধ্যে হয়, তাহলেই ফ্লাইট চালু হবে। বিশেষ ফ্লাইট আপাতত আর দেব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি, স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক যে ল্যাবটি বসানো হয়েছে বিমানবন্দরে, সেটা যেন সবাই ব্যবহার করে যাত্রীরা বাইরে যেতে পারেন।’ বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, আরব আমিরাতের অনুরোধে ও এমিরেটস এয়ারলাইনসের উদ্যোগে কয়েকটা ফ্লাইট গেছে পরীক্ষামূলকভাবে। এসব ফ্লাইটে কিছু ব্যবসার উদ্দেশে, কিছু জরুরি এবং কিছু যাত্রীদের পাঠাতে ব্যবস্থা করে দূতাবাস। ছয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠানকে (ডিএমএফআর মলিকুলার ল্যাব অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক) নির্বাচিত করে আমিরাত। সে প্রতিষ্ঠানে করোনার পরীক্ষা করে তাদের আমিরাতে পাঠানো হয়েছে। দুটি ফ্লাইট এভাবে  গেছে। বেবিচক তাদের অনুরোধ রক্ষা করেছে। মফিদুর রহমান আরও বলেন, আমরা একটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দিইনি। অনুমোদন দিয়েছি শুধু বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য। এদিকে বিমানবন্দরে কবে নাগাদ করোনা পরীক্ষা শুরু হবে, তা জানতে বিভিন্ন জেলা থেকে প্রবাসী কর্মীরা প্রতিদিন বিমানবন্দরে আসছেন। গতকালও এসেছিলেন কয়েকজন। তারা বলেন, আমিরাতে রডমিস্ত্রির কাজ করতেন তারা। ছয় মাস আগে দেশে আসেন। নিয়োগকর্তা তাদের কাজে ফিরতে বারবার তাগাদা দিচ্ছেন। কর্মস্থলে ফেরার কথা বলতে গিয়ে এদের কেউ কেউ কেঁদে ফেলেন। তারা সাংবাদিকদের বলেন, ‘পিসিআর পরীক্ষার শুরু না হওয়ার কারণে আমরা যেতে পারছি না। ভিসার মেয়াদ আর তিন মাস আছে।’ যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে কি সিদ্ধান্ত হবে জানতে চাইলে এম মফিদুর রহমান বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ, তাদের বিশেষ বিবেচনায় মেয়াদ বৃদ্ধি করা হবে বলে দূতাবাস আমাকে জানিয়েছে। কবে নাগাদ করোনা পরীক্ষা শুরু করা যাবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান বলেন, এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ বা সময় বলা যাচ্ছে না। আমরা এসওপি ক্লিয়ারেন্স পেলেই এয়ারলাইনসগুলোকে বলে যাত্রী পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করব। খুব দ্রুত বিষয়টি নিষ্পণ্ণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ।

সর্বশেষ খবর