রবিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

‘ভ্রাম্যমাণ’ আল-আমিরাতে নববিপ্লবের ডাক

‘ভ্রাম্যমাণ’ আল-আমিরাতে নববিপ্লবের ডাক

গতকাল প্রস্তুতিতে টাইগাররা

দুপুরে স্টেডিয়ামের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ পথেই কানে আসতে থাকে ঠুক ঠুক শব্দ। চলছে শেষ মুহুর্তের কাজ। মাঠের ভিতরে যেমন গ্রাউন্সম্যানরা পিচ ও আউটফিল্ড নিয়ে ব্যস্ত, তেমনি বাইরে পুরোদমে চলছে অবকাঠামো মেরামতের কাজ। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ওমান সাদামাটা একটি মাঠকে আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়ামে রূপ দিয়েছে। পিচ ও ঘাস ছাড়া স্টেডিয়ামের সবই ভ্রাম্যমাণ। গ্যালারি, প্রেসবক্স, গাড়ি পার্কিং জোন, ড্রেসিং রুম, অন্যান্য সব কিছুই ক্ষণিকের জন্য করা। ‘ভ্রাম্যমাণ’ এ আল-আমিরাতেই আজ নববিপ্লবের ডাক দিয়েছে টিম বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচে আজ স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে টিম টাইগার্স। টি-২০ বিশ্বকাপ বরাবরই টাইগারদের জন্য হতাশার। কিন্তু এবার ভালো কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ বাহিনী। তবে মনে বাজছে সাইরেন। কারণ   অবশ্যই বিশ্বকাপের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে হার। তাই সতর্কবার্তা মাথায় নিয়েই আজ স্কটিশদের বিরুদ্ধে মাঠে নামছেন টাইগাররা। যদিও গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সতর্কবার্তার কথা শুনে ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ বললেন, ‘না, না, সতর্কবার্তা নয়! আমরা প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে ভাবছি না। এটা আমাদের খেলায় মোটেও প্রভাব ফেলবে না। আমরা জয়ের জন্যই মাঠে নামব। তবে কোনো প্রতিপক্ষকেই ছোট করে দেখছি না।’

কিন্তু বাংলাদেশ ক্যাপ্টেন অতি বিনয়ীভাব দেখালে কী হবে, প্রতিপক্ষ দল স্কটল্যান্ডের কোচ শেন বার্জার ঠিকই হুমকি দিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশকে ভয়ের কিছু নেই। তারা ওমান, পাপুয়া নিউগিনির মতো।’একটা কথা না বললেই নয়, টি-২০ বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ঠিক ‘বানর ও তৈলাক্ত বাঁশের’ অঙ্কের মতো! এই খুব ভালো, আবার খুব খারাপ করতেও সময় লাগে না। যে দলটি জিম্বাবুয়ের মাঠে গিয়ে সিরিজ জিতল, ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মতো দলকে উড়িয়ে দিল, সেই দলটি দু-দুটি প্রস্তুতি হারল।

যদিও সেই প্রস্তুতি ম্যাচেই খেলতে পারেননি বাংলাদেশ দলের সেরা তিন তারকা সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাই ক্যাপ্টেন জোর গলায় বললেন, ‘আমাদের আত্মবিশ্বাসে কোনো চোট লাগেনি। শেষ সিরিজে জয়ই আমাদের উদ্দীপ্ত করছে। লক্ষ্য থাকবে নিজেদের সেরা খেলাটা উপহার দিতে।’ বাংলাদেশ ঘরের মাঠে বরাবরই স্পিনারদের ওপর সওয়ার হয়ে ম্যাচ জেতে। কিন্তু ওমানে স্পিনাররা আহামরি কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। কেন না, আইসিসির টুর্নামেন্ট মানেই ‘স্পোটিং উইকেট’। যেখানে সবার ভালো করার সমান সম্ভাবনা থাকে। মাহমুদুল্লাহও বাস্তবতা বুঝে সেভাবে তার বাহিনীকে প্রস্তুত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি অনেক ভালো হয়েছে। যেকোনো উইকেটে যাতে ভালো করতে পারি সে চিন্তা মাথায় নিয়েই মাঠে নামব। প্রথম বল থেকেই চেষ্টা থাকবে সেরা দিয়ে চেষ্টা করার।’ টি-২০ হচ্ছে ক্রিকেটের এমন একটি ফরম্যাট যেখানে যেকোনো দল যেমন ভালো করতে পারে, আবার সুপার ফরমে থাকা দলও হারতে পারে। আর বাংলাদেশের টি-২০ পারফরম্যান্স তো আরও অপ্রত্যাশিত। তা ছাড়া টি-২০ বিশ্বকাপের অতীত রেকর্ড মোটেও ভালো নয়। অতীত নিয়ে নিয়ে ভাবছেনও না মাহমুদুল্লাহ। তিনি এ আসরে ভালো করার ব্যাপারে দৃঢ়প্রত্যয়ী। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ধূসর মরুভূমির বুকে আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম (আল-আমিরাত) বানিয়ে আরব দেশ ওমান বিপ্লব ঘটিয়েছে, সেই বিপ্লবের মঞ্চে ক্যাপ্টেন মাহমুদুল্লাহ দিলেন নববিপ্লবের ডাক। এখন দেখার বিষয়, ক্যাপ্টেনের ডাকে অন্যরা কতটা সাড়া দিতে পারেন! বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করতে পারে কি না!

সর্বশেষ খবর